শাহবাগের গণজাগরণ এবং বিএনপির অবস্থান নিয়ে বাংলানিউজে দুই কিস্তিতে বিশ্লেষণের পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি অনেক। কেউ ই-মেইল করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, কেউ ফোনে কথা বলেছেন আর কেউ মোবাইল ফোনে মেসেজ দিয়েছেন।
মোটা দাগে পাঠকদের প্রতিক্রিয়া এইরকম:
১. প্রজন্ম চত্বরের আন্দোলন ইস্যুতে বিএনপির জামায়াতপন্থী অবস্থান নতুন কিছু নয়।
২. সামগ্রিক রাজনৈতিক বিবেচনায় বিএনপি সঠিক অবস্থানেই আছে, জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী শক্তিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র থেকে ওই লিখার মাধ্যমে অনলাইনে কয়েক হাজার শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
৩. জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শুধু বিএনপিকে এককভাবে দায়ী করা হয়েছে, আওয়ামী লীগের ওপর তোপ দাগানো হয়নি।
৪. কর্মী-সমর্থকদের সেন্টিমেন্ট বিবেচনায় না নিয়ে বিএনপি নেতৃত্ব ভুল করছে।
প্রথম দুটি পয়েন্টে আর লিখার কিছু নেই। কারণ যা বলার ওই লিখাতেই বলা হয়েছে, ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বিচার-বিশ্লেষণে লিখাটি বিএনপির জন্য ধবলধোলাই হওয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা আরাম বোধ করেছেন, বিপরীতে অন্ধ বিএনপি সমর্থকরা একে দেখেছেন তাদের দল এবং নেতৃত্বের জন্য ড্রোন হামলা হিসেবে। এক্ষেত্রে আমি প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের একটি কথা মনে করবো যেখানে একবার তিনি তাঁর এক বন্ধুকে বলেছিলেন, বেয়াকুবকে বোঝানোর কিছু নেই। সত্যিই তাই। যে ‘অ’ বলতে শুধু ‘অজগর’ই শিখেছেন তিনি বুঝবেন না ওই অক্ষরে ‘অনামিকা’ হতে পারে, ‘অপরাজিতা’ হতে পারে; হতে পারে এরকম আরো অনেক কিছু।
তৃতীয় যে বক্তব্য এসেছে সেক্ষেত্রে বলবো, আগের লিখার বিশেষ করে দ্বিতীয় কিস্তিতে ওই বিষয়ে বলা হয়েছে। তারপরও তাদের কাছে হয়তো তা পূর্ণাঙ্গ মনে হয়নি, কিংবা তারা যা শুনতে চান সেখানে তা বলা হয়নি। তবে একথা ঠিক পূর্ণাঙ্গ মনে না হলে তা পূর্ণাঙ্গ করা যেতে পারে। কিন্তু কেউ যদি মনে করেন তিনি যেভাবে ভাবছেন, যুক্তি দেওয়ার পরও অন্যকেও একইভাবে ভাবতে হবে তাহলে তা হবে বড় ভুল। এ বিষয়ে আলোচনার আগেই তাই স্পষ্ট করা ভালো যে দুনিয়া, এমনকি আখিরাত প্রশ্নেও বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ একই অবস্থানে থাকলেও অন্তত: জামায়াত ইস্যুতে দুই দলের মধ্যে পার্থক্য বিশাল। তার কারণ ঐতিহাসিক।
ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব
সেই ঐতিহাসিক কারণ বিশ্লেষণে একজোড়া প্রশ্ন:
১. আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব তা কি শুধুই দুটি দলের দ্বন্দ্ব? নাকি অন্যকিছু?
২. জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া কি শুধুই আওয়ামী লীগ বিরোধিতার কারণে? নাকি আরো কারণ আছে?
কোনো থিসিস না লিখেও এটা বোঝা যায়, যে চেতনা থেকে পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের স্বাধিকার আন্দোলনের শুরু এবং পর্যায়ক্রমে তা স্বাধীনতার সংগ্রাম, সেখানেই আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতের দ্বন্দ্বের গূঢ় কারণ নিহিত। আওয়ামী মুসলিম লীগের আওয়ামী লীগ হয়ে উঠার মধ্য দিয়ে ইসলামী পাকিস্তানকে আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ জানানোর বিপরীতে ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান রক্ষার এক বড় খুঁটি হিসেবে জামায়াতের আবির্ভাব।
এভাবে দুই দশক ধরে আদর্শিক দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে একাত্তরে আওয়ামী লীগ যখন স্বাধীনতাযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া দল, জামায়াত তখন পাকিস্তান রক্ষার নামে গণহত্যা-হত্যা-ধর্ষণ-লুটপাট-অগ্নিসংযোগে ব্যস্ত। মুক্তিযুদ্ধের একেবারে শুরুর দিকে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালিব হত্যাকা- দিয়েই আওয়ামী লীগের জন্য জামায়াতের বিদ্বেষের স্পষ্ট রূপ বোঝা যায়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলার রায়ের পর শহীদ খন্দকার আবু তালিবের মেয়ে সখিনা খন্দকার বলেছেন, কাদের মোল্লা তাঁর বাবাকে হত্যার পর শরিরের মাংস কোরবানির পশুর মাংসের মতো মেঝেতে বিছিয়ে রেখেছিলো। কাদের মোল্লার এই নৃসংশতার কারণ হিসেবে সখিনা খন্দকার ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার রচনায় খন্দকার আবু তালিবের সম্পৃক্ত থাকার কথা উল্লেখ করেছেন।
এভাবে একাত্তরে জনগণের পক্ষের আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গিয়ে জনগণের বিপক্ষে জামায়াতের যে অবস্থান তার কারণ জামায়াতের ‘রাজনৈতিক ‘আদর্শ’। একাত্তরে সেই জনগণ মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান রাষ্ট্রযন্ত্র এবং তাদের দোসর জামায়াতকে পরাস্ত করে দ্বন্দ্বের মীমাংসা করেছিলো, যে মীমাংসায় জামায়াত শুধু ইতিহাসের আঁস্তাকুঁড়েই নিক্ষিপ্ত হয়নি, মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলে এতোদিনে তাদের হাড়-মাংস মাটিতে মিশে যাওয়ার কথা ছিলো। তা হয়নি ৭৫-এ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার পর দেশকে উল্টোপথে হাঁটানোর চেষ্টার কারণে।
বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার সময়ও ১১ হাজার আল-বদর, রাজাকার, আল-শামস সদস্য কারাগারে ছিলো। বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমার কারণে ছোট অপরাধীরা মুক্তি পেলেও চলছিলো হত্যা-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ-লুটপাটের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। কিন্তু ৭৫’র ১৫ আগস্টের পর তাদের শুধু মুক্তিই দেওয়া হয়নি, তাদের রাজনৈতিক অধিকারও ফিরিয়ে দেওয়া হয়। গোলাম আযম-নিজামী-মুজাহিদ-কাদের মোল্লা-কামারুজ্জামানরা আবার রাজনীতি করার অধিকার ফিরে পায়।
এভাবে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরও বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার কারণে স্বাধীনতাবিরোধীদের চূড়ান্তভাবে পরাস্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ। তাই এখন ২০১৩ সালে এই দ্বিতীয় প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ, যে সংগ্রামের দুই দাবি:
১. সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি, এবং
২. জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।
বিএনপির কোল বনাম আওয়ামী লীগের কড়ে আঙুল
ক্ষমতায় থাকার কারণে এখন এই দাবি পূরণের দায়ভার মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগের ওপর। তবে আওয়ামী লীগ আসলেই কতোটা আন্তরিক সেই প্রশ্ন আছে। এর কারণ হিসেবে জামায়াতের আজকের উত্থানের পেছনে আওয়ামী লীগেরও কিছু ভূমিকা আছে বলে মনে করা হয়। যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়:
১. আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার এরশাদের অধীনে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সময় জামায়াতকেও সহযোগী করেছে, যে নির্বাচনে জামায়াতের ১০ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়।
২. খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার আন্দোলনেও আওয়ামী লীগ জামায়াতকে সহযোগী করেছিলো।
৩. একুশ বছর পর প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের বিচার করেনি।
তৃতীয় অভিযোগটি দিনের আলোর মতো সত্য। তবে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক যুক্তি তখন জাতীয় সংসদে তাদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিলো না। আর প্রথম দুটিও যদি আমরা সত্য বলে ধরে নেই তাহলে তার চূড়ান্ত বিশ্লেষণ করতে হবে চূড়ান্তভাবে আওয়ামী লীগ এখন কি করছে সেই বাস্তবতা আর ফলাফলের আলোকে।
৭৫-এ বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর সামরিক শাসন আর আধা-সামরিক শাসনে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে ফেলা হয়েছে, সেখান থেকে দেশকে আবারো সঠিক পথে আনতে আদর্শিক সংগ্রামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়া জরুরি ছিলো। সেই ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ কখনো কখনো রাজনীতির খেলায় জামায়াতকে তার কড়ে আঙুল দিয়ে দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপির কাছ থেকে সফলভাবে দূরে রাখতে পেরেছে। আদর্শিকভাবে এই কড়ে আঙুল দেওয়াও অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু এটাও সত্য, রাজনীতির এই খেলায় জামায়াত যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনই তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপিরও ক্ষতি হয়েছে। আর চূড়ান্তভাবে আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারছে আওয়ামী লীগ।
তাই বিএনপি জামায়াতকে কোলে নিয়ে রেখেছে বলাতে যারা প্রশ্ন রেখেছেন আওয়ামী লীগও কি জামায়াতকে কোলে নেয়নি, তাদের জন্য ফেইসবুকে যা বলেছি সেটাই আবার বলছি: জামায়াত আওয়ামী লীগরে কোলে কখনো ছলিো না; ক্ষমতার রাজনীতরি কারণে আওয়ামী লীগ তার কড়ে আঙুলটি জামায়াতকে ধরতে দয়িছেলিো। তবে এটাও কোনোভাবইে গ্রহণযোগ্য নয়। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল আদর্শিক অবস্থানে শতভাগ অটুট থেকেই আজ যুদ্ধাপরাধের বিচার করলে সবচেয়ে ভালো হতো। তবে পুরোপুরি সেই আদর্শিক অবস্থান ধরে রাখার চেয়ে রাজনীতির খেলায় সময় সময় কিছুটা আপোষকামি হয়ে শেষ পর্যন্ত বিচার হওয়াটাও কম ভালো নয়।
১৯৫৭ এবং ১৯৯৬
১৯৫৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক কাগমারি সম্মেলনে পাকিস্তানকে ‘আস্-সালামুআলায়কুম’ বলেছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। কিন্তু আওয়ামী লীগ কিংবা শেখ মুজিবুর রহমান তখনই সেই পথে হাঁটেননি। এজন্য তিনি অপেক্ষা করেছেন ১৪ বছর। ইতিহাস সাক্ষী প্রস্তুতি পর্ব শেষ করে তিনি সময়োচিত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার ধারাবাহিকতায় ৭১’র মার্চে এসে নির্বাচনে বিজয়ী দলের নেতা হিসেবে স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর বাংলাদেশ ঠিকই স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও একইভাবে ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই রাজনৈতিক কারণে কঠিন হয়ে যাওয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো বিষয়টিকে সামনে আনেনি আওয়ামী লীগ। এজন্য অপেক্ষা করেছে। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে উঠা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নতুন প্রজন্ম যখন যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে পেরেছে, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দলটি তখন তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি করেছে যুদ্ধাপরাধের বিচার।
কিন্তু জামায়াতকে আওয়ামী লীগ অতীতে কোলে না নিলেও অন্ততঃ কড়ে আঙুলটি ধরতে দেওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তারা আসলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারবে কি না এ নিয়ে অনেকের সন্দেহ ছিলো। কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন হওয়ার পর সেই সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। অনেকের কাছেই মনে হয় অতীতের মতো আওয়ামী লীগের কিছুটা আপোষকামি মনোভাব আর আন্তর্জাতিক চাপে এটি ‘রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক রায়’।
আদালতের রায় নিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই। তবে যদি তাও হয়ে থাকে তাহলেও শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের চেতনাকে তাৎক্ষণিক ধারণ করে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা জনগণের দাবির সঙ্গেই আছে। জন আকাঙ্খাকে ধারণ করতে গিয়ে ভেতরে ভেতরে কূটনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনীও এনেছে আওয়ামী লীগ।
বাস্তবতা হলো দল হিসেবে আওয়ামী লীগ তার ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের কারণেই কখনোই জামায়াতকে কোলে নিতে পারবে না, এমনকি র্শীষ নেতৃত্বেব চাইলেও পারবে না। রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে জাতীয় এবং আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে যে কিছুটা আপোষের পথে আওয়ামী লীগ ছিলো, শাহবাগের গণজাগরণের পর সেখান থেকে রেরিয়ে আসতে পারছেনা তারা। এভাবে আওয়ামী লীগ তরুণ প্রজন্মের চেতনাকে ধারণ করতে পারলওে বিএনপি ব্যর্থ হয়ছে।
বিএনপির তরুণ প্রজন্মের হতাশা
বাংলানিউজে ‘শাহবাগের গণজাগরণ এবং বিএনপির নিয়তি’ প্রকাশের পর বিএনপির তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি ছাত্রদলের ছেলেরা আমার ফেইসবুকের ইনবক্সে বেশকিছু মেসেজ পাঠিয়েছেন। এই মেসেজগুলো দেখলে বোঝা যায়, তাদরে অনেকের মন শাহবাগে; কিন্তু দলীয় সীমাবদ্ধতার কারণে যেতে পারছে না। তাদের অনেকে বলেছে, এরকম সমালোচনা চলতে থাকলে তাদের শীর্ষ নেতৃত্ব হয়তো ভুল বুঝতে পারবেন, গণজাগরণে শরিক হবেন।
তবে তাদের সেই আশা যে দুরাশা, বিএনপি নেতা-নেত্রীদের বক্তব্যেই তা স্পষ্ট। এখনও জনস্রোতের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে জামায়াতের সঙ্গে ১৮ দলীয় জোটের ঐক্য অটুট রাখার কথা কথা বলছেন তারা। কেউ কেউ শাহবাগকে সাজানো নাটক বলছেন, তরুণ প্রজন্ম বিভ্রান্ত এমন কথাও বলছেন কেউ কেউ। আবার একইসঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে আশ্বাস দিচ্ছেন, ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করবেন। এমনই বৈপরিত্য বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদলের।
বৈপরীত্য অবশ্য এখানেই শেষ নয়। সর্বশেষ বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ৯৬ সালের জামায়াতের দোসর হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের ঘোষণা দিয়েছেন। তার দাবিমতো আওয়ামী লীগ যদি ৯৬ সালে জামায়াতের দোসর হয়ে থাকে, আর সেজন্য তাদের বিচার হয়; তাহলে আগে কেনো তারা জামায়াতকে ছাড়ছেন না! জামায়াতের দোসর হওয়ার অপরাধে বিএনপি কি বিএনপিরও বিচার করবে?
জাহিদ নেওয়াজ খান: বার্তা সম্পাদক, চ্যানেল আই ([email protected])