ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দাঁড়াবে!

অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন, উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৩
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দাঁড়াবে!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক ও একজন ছাত্রের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪/০৭/২০১৩ তারিখে মহামান্য হাইকোর্ট এক রুল নিশি ও বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখার জন্য নির্দেশনা জারি করেছিলেন। হাইকোর্টের আদেশ কার্যকর করার জন্য উপাচার্যকে রেসপনডেন্ট করা হয়েছে।

যেমন রেসপনডেন্ট করা হয়েছে পুলিশের আইজি, স্বরাষ্ট্রসচিব, শিক্ষাসচিব, ইউজিসি’র চেয়ারম্যান, ঢাকার এসপি, আশুলিয়া থানার ওসি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টরকে। আমাদের সম্মিলিতভাবে নির্দেশ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়কে সচল রাখতে।

গত ০৯/১০/২০১৩ তারিখে সিন্ডিকেটের সভা ছিল বিকেল ৪.০০ টায়। খবর এসেছে আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ প্রশাসনিক ভবনের প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। এর আগে ‘ ২১ আগস্ট, ২০১৩ তারিখে হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে তাঁরা ধর্মঘট ডেকে পথ অবরুদ্ধ করেছিলেন। সেদিন হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে আমি শিক্ষকদের বাধার মুখেও অফিসে গিয়েছি। ক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ আমাকে ৮৪ ঘন্টার জন্য অফিসেই আটকে রাখেন। তারপর শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীগণ আমাকে মুক্তি দেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে একটি তদন্ত কমিশন গত ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তদন্তকাজ সম্পন্ন করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় আমাকে জানিয়েছিলেন, তদন্ত চলাকালে আন্দোলনের কোনো কার্যক্রম থাকবে না। স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যাদি চলবে। তারপরও যেহেতু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে এবং আমি নিজেই তা তদন্ত করে সত্যতা নিরূপন করতে বারবার অনুরোধ করেছি, তাই স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই তদন্ত চলাকালে আমি কোনো সভায় সভাপতিত্ব করি নি, কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিই নি। তদন্তকাজ শেষ হওয়ার পর তিনটি অনুষদে ডিন নিয়োগ করেছি ১৯৭৩ অ্যাক্টের ১ম সংবিধির ৮(২) ধারা বলে। এ সিদ্ধান্তও বাধ্য হয়েই নিতে হয়েছে। কারণ আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা। ডিনগণই মুখ্য ভূমিকা পালন করেন তাতে।

আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ শিক্ষামন্ত্রীকে দেওয়া তাদের কথা রাখেন নি। রিপোর্ট জমা হওয়ার আগেই তিনদিনের ধর্মঘট আহ্বান করেন। ডিন নিয়োগ যেন কার্যকর না করা যায়, সেজন্য রেজিস্ট্রার এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে একটি ছোট অফিসকক্ষে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত বন্দি করে রাখেন। এ সময়কালে শুক্রবারে জুমার নামাজ পড়ার আকুতি জানালে প্যারোলে বন্দিকে যেমন নেওয়া হয়, তেমনি, ৪জন শিক্ষক তাঁকে মসজিদে নিয়ে যান, নামাজে তাঁর দু’পাশে দাঁড়ান এবং নামাজ শেষে বন্দিখানায় পুনরায় নিয়ে আসেন। শেষ পর্যন্ত তিনি এবং তার অধস্তন কোনো অফিসার ডিন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে সই করবেন না, এই মর্মে মুচলেকা প্রদানের পর, গত ৮ অক্টোবর দুপুরে তাঁকে মুক্তি দেন আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ। অন্যদিকে গত পহেলা অক্টোবর থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন কিছুসংখ্যক শিক্ষক। তাঁরা গার্ডের জন্য তৈরি শেডটি দখল করে সেখানে তাঁদের ব্যানার লাগিয়ে দেন। জোরে মাইক বাজিয়ে নানা অশিষ্ট প্রচারণা চালান। তাঁরা টেলিভিশন নিয়ে আসেন এবং বাসভবনের লাইন কেটে তা থেকে তাঁদের টেলিভিশনের সংযোগ দেন। সেদিন বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টারে ‘ ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধু যাঁরা অবদান রেখেছেন, তাঁদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে আমি গিয়েছিলাম। যখন ৭১-এর ঐ বীরগণ বা তাঁদের প্রতিনিধিরা মঞ্চে এসে সম্মাননা গ্রহণ করেছেন, তখনই আবেগ, আনন্দ, কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসায় অশ্র“সিক্ত হয়েছি। এমনটা হয়েছে সম্ভবতঃ মুক্তিযুদ্ধে আমার এবং পরিবারের সকলের অংশগ্রহণের কারণে। কিন্তু পরিতাপের কথা, শুধু মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী চেতনার শিক্ষকগণই নন, বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের অনুসারী হিসেবে যারা পরিচয় দেন, আন্দোলনকারী সেইসব শিক্ষকও ঐ অনুষ্ঠানে আমার অংশগ্রহণ করা নিয়ে উপহাস করেছেন। পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন।

আমার স্ত্রী ঢাকায় মেয়েদের একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। ঢাকায় নিজের কোনো ফ্লাট বা বাড়ি নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টাওয়ার ভবনের যে ফ্লাটে থাকতাম, তা ছেড়ে দিয়েছি যখন এখানে এসেছি। প্রতিমাসে বাড়তি ৩৫ হাজার (৩৫,০০০) টাকা দেয়ার মত সঙ্গতি আমার নেই বলে স্ত্রী ও সন্তানেরা জাহাঙ্গীরনগরে আমার সাথেই থাকে। ঐ তারিখে রাতে বাসায় ফিরেছি আমরা দু’জন।   আগেই খবর পেয়ে মন বড় বিষন্ন হয়েছে। উপাচার্য না হয়ে দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হলেও আপন বাসভবনের বাইরে উগ্র অবস্থান নেবেন কেউ! দিনরাত মাইক বাজাবেন, টেলিভিশন চলবে সর্বোচ্চ ভলিউমে। অশিষ্ট বাক্য প্রয়োগ করবেন। সারা পথে ভেবেছি, বয়সের ভারে ন্যূব্জ কিন্তু তারপরও মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননা নিতে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের কথা ভেবেছি। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের কথা ভেবেছি। আজ স্বাধীনতা লাভের ৪২ বছর পর একজন উপাচার্য নয়, একজন নাগরিকের এ কেমন লাঞ্ছনা! এই অপমান যাঁরা করছেন, তাঁদের তো সেই গুরুভার নেয়ার কথা, যা দ্বারা আলোকিত করবেন শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, জাতিকে। সেজন্যেই তো তাঁদের  ‘জাতির বিবেক’ অভিধায় বরণ করে নেয় মানুষ। বারবার আমার স্ত্রী এবং কঠিনহৃদয় আমারও চোখ ভিজে এসেছে কষ্টে, দুঃখে। সাথে কোনো সহকর্মী নয়, পুলিশ নয়, শুধু আমরা দু’জন গাড়ি থেকে নেমে বাসভবনে প্রবেশ না করে কর্মচারিদের বলেছি একটি মাদুর পেতে দিতে। সেখানেই বসে বলেছি, স্বাধীন দেশে আমাদের নাগরিক অধিকার এমন করে কেউ হরণ করতে পারেন না। বলেছি, আন্দোলনকারী একজন শিক্ষকও যদি এখানে অবস্থান করেন, আমরা গৃহে প্রবেশ করবো না। এটা কোনো পাল্টা কর্মসূচি ছিল না। এ ছিল দু’জন অসহায় বিপন্ন মানুষের নিরব প্রতিবাদ। পত্রিকায় দেখলাম এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাষক কেঁদে বলেছেন, আমি তার পিতৃতুল্য এবং তাকে আঘাত করেছি। অথচ আমি কাউকে আঘাত করি নি।

শুরুর কথায় ফিরে আসি। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং উপাচার্য হিসেবে আমার উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবেই আমি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানের জন্য আমার কার্যালয়ে গিয়েছি। কোনো আইন অমান্য করি নি।

অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করেছেন; চাকুরিবিধি এবং দেশের আইন লংঘন করেছেন। এর আগে যেমন তাঁরা ৪৩ দিন প্রশাসনিক ভবন তালা দিয়েছেন; শিক্ষক হয়ে ক্লাশরুমে তালা দিয়েছেন; তেমনি এখন অচল রাখতে চাইছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়কে। কেন? আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নই; আমি জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে সোচ্চার; আমি নীতিনিষ্ঠ এবং অন্যায়কে প্রশ্রয় দেই না। সর্বোপরি তাঁরা ধরেই নিয়েছেন, বর্তমান সরকারের সময় শেষ, এরপর পছন্দের তাদের দল আসবে ক্ষমতায়। সে পর্যন্ত অস্থিতিশীল রাখবেন তাঁরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে। সিন্ডিকেট সভা হতে দেবেন না। কোনো নতুন নিয়োগ হবে না। ক্ষমতায় এসে তারা দেবেন সে সব নিয়োগ। এখন নিয়োগবাণিজ্য করা যায় না। তাতে, বড়ই অখুশি অনেকে। তাঁদের এসব অনৈতিক এবং বেআইনি কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, তাতে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করছেন না তাঁরা। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা। ৪, ৫ এবং ৬ অক্টোবরে মুক্তমঞ্চে ৩৬তম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর আকুতি এবং ক্ষোভ আমি দেখেছি। এইসব অনৈতিক কার্যক্রমে লিপ্ত শিক্ষক যারা ছাত্র-ছাত্রীদের নাম্বার কমিয়ে দেয়া, সার্টিফিকেট না দেয়া এবং থিসিস আটকে দেয়ার হুমকি দেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সরবে কথা বলতে শুরু করেছে নিরূপায় ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা দাবী করছে ওইসব শিক্ষকের নৈতিক শিক্ষার। এই প্রেক্ষাপটে এসেছে সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠান বানচাল করার চেষ্টা এবং ছাত্রদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সম্পূর্ণ অন্যায় অভিযোগ। আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করছি কিভাবে ক্ষিপ্ত শিক্ষকেরা তেড়ে আসছেন ছাত্রদের দিকে যারা হতবাক হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে উপাচার্যের লাঞ্ছনা দেখছিল। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম, ছাত্রদের উত্তেজিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একদিকে উপাচার্যকে নানা আক্রমণাত্মক অশিষ্ট কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে ছাত্রদের প্রতি হুমকি। এই পর্যায়ে ক্ষুব্ধ ছাত্ররা কয়েকটি প্লাটিক চেয়ার মাটিতে আছড়ে ফেলে এবং ঐ স্থান ছেড়ে চলে যায়। সে সময় আমার চারপাশে উত্তেজিত মারমুখী শিক্ষকরা ছিলেন। পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়। একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আমাকে মাটি থেকে ওঠান।

মনে পড়লো, ২০০২ সালের জুলাই মাসের কথা। বিএনপি-জামাত সরকারের সে আমলে গভীর রাতে শামসুন্নাহার হলে পুলিশ প্রবেশের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। পুলিশের হাত থেকে রক্ষার জন্য বিপন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে আমরা শিক্ষকেরা দাঁড়িয়েছিলাম। সেদিনও আঘাত করে আমাকে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়েছিল। লাঠির আঘাতে বাম পায়ের হাটুর হাড় ফেটে গিয়েছিল। তিনমাস শয্যাশায়ী ছিলাম। সে সময় পুলিশের লাঠি ও বুটের আঘাতে ভূতলে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন একজন শিক্ষক। আর আজ সে কাজটি করেছেন কোনো ছাত্র নয়, সন্ত্রাসী নয়, এ বিশ্ববিদ্যালয়েরই কয়েকজন শিক্ষক। আমি জানি না ইচ্ছাকৃতভাবে শিক্ষকগণ তা করেছেন কিনা।

যথেষ্ট হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে।

আমি অবাক হচ্ছি, তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশে এত বিলম্ব কেন! দাবি করছি, অবিলম্বে তা প্রকাশ করা হোক। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাবিহিত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। প্রমাণিত না হলে, যারা তা উত্থাপন করেছেন, আমাকে অবাঞ্ছিত করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে রেখেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

আড়াই হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রীর স্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি যেখানে শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আইন প্রণয়নের জন্য দাবি করা হয়েছে, তা সংসদে আলোচনার জন্য ছাত্ররা সংসদে গিয়ে মাননীয় স্পিকারের দপ্তরে জমা দিয়ে এসেছে।

 মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বানে আপনি সক্রিয় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এবারেও উদ্যোগ নিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসন-মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অর্জন হিসেবে যা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আমাদের উপহার দিয়েছিলেন তা আজ ক্ষত-বিক্ষত কিছু অবিবেচক, অনৈতিক শিক্ষকের বেআইনি ও শিক্ষার্থী-বিরোধী কর্মকাণ্ডে। স্বায়ত্তশাসন ছিল বলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরাক্রমশালী সেনাবাহিনীর একাংশের উচ্চাভিলাষ ও হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পেরেছি। সেই স্বায়ত্তশাসন অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। তবে স্বায়ত্তশাসনের নামে স্বেচ্ছাচারিতা চলবে না। শিক্ষকদের জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতেই হবে।

শিক্ষাথীরা বলছে, আইন অমান্য করলে, তাদের শাস্তি পেতে হয়, অনুরূপ বা তারও বেশি অপরাধে শিক্ষকদের শাস্তি পেতে হবে না কেন? তারা কি আইনের উর্ধ্বে?

তদন্ত কমিশন রিপোর্টে আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণিত হলে, যে কোনো শাস্তি আমি মাথা পেতে নেব। নির্দোষ প্রমাণ হলেও আমি মাথা উঁচু রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাব।

দায়িত্ব গ্রহণকালে যে ওয়াদা আমি দিয়েছিলাম, তার একটি - নির্বাচিত উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন; তা আমি রক্ষা করেছি। স্বেচ্ছাচারি অনৈতিক শিক্ষকদের দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে যে শিক্ষার্থীরা জেগে উঠেছে, তাঁদের একা ফেলে আমি যাব না। আমার অপর ওয়াদা জাকসু নির্বাচন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই সমাধা করবো আমি। তারপর বলবো  ‘এবার ফিরাও মোরে’। স্বপ্নের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে আমার আলমামেটার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাব।

বাংলাদেশ সময় ১৯১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৩
জেএম/জিসিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।