গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেশে এখন অবশ্যই ‘সাংবিধানিকভাবে বৈধ’ একটি সরকার। কিন্তু এর গ্রহণযোগ্যতা এবং নৈতিক মান নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক।
এর দায়-দায়িত্ব প্রায় একদলীয় নির্বাচনে এরশাদকে চাতুর্যের সঙ্গে বগলদাবা করা আওয়ামী লীগের মতো নির্বাচন বয়কট করা জামায়াত প্রেমে দিওয়ানা বিএনপিরও কম নয়।
দুই প্রধান দলের একগুঁয়েমি এবং যেভাবেই হোক অথবা যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকা বা যাওয়ার প্রশ্নে নির্বাচনের পর এখন এক ধরনের শূন্য অবস্থা বিরাজ করছে। যে অবস্থায় বিএনপি যদি আন্দোলন শুরু করে, তাহলে তাকে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। আর যদি সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার প্রশ্ন আসে, তাহলেও আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুই দলকেই সবকিছু শুরু করতে হবে শূন্য থেকে।
এরকম অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নির্বাচনের ১০ দিন পর যে সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছেন, সেখানে সরকারকে শুধু অবৈধ দাবি করে পদত্যাগ করতে বললে আশু বা দূরবর্তী কোনো সমাধান আসবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের দাবিতে জামায়াতের সহিংসতার কারণে আর তত্ত্বাবধায়ক আন্দোলন এমন লেজেগোবরে যে, অবস্থাটা এরকম না যে সরকারের কোনো ভিত্তি নেই। তিনি হুমকি দিলেই সরকার সুড় সুড় করে সরে যাবে!
বাস্তবতা হচ্ছে, এ সরকার যেমন ছয় মাস বা এক বছর পর চলে যাবে না। তেমনি পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করতে পারবে সেটাও হয়ত নয়। এর মাঝামাঝি একটা অবস্থা বিবেচনা করে তাকে বাস্তব কথা বলতে হবে; যেখান থেকে সমাধান বেরিয়ে আসতে পারে।
খালেদা জিয়ার জন্য এ সমাধান শুধু তার ক্ষমতায় যাওয়া না যাওয়া এবং তার আদরের ছেলেদের দেশে ফিরতে পারা না পারার সঙ্গে সম্পর্কিত। শেখ হাসিনার জন্যও একইরকমভাবে এ সমাধান শুধু ক্ষমতায় থাকতে পারা না পারার বিষয়। কিন্তু দেশের মানুষের জন্য সমাধানটি জরুরি তাদের জীবন ধারণ এবং জীবনের নিরাপত্তা প্রশ্নে। আজীবনের জন্য এটা চলতে পারে না যে, পাঁচ বছর পর পর নির্বাচনী সরকার প্রশ্নে দুই দল যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা শুরু করবে আর তাতে চিড়েচ্যাপ্টা হবে সাধারণ মানুষ।
এই একটি রাজনৈতিক প্রশ্নের সমাধান হলে বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে। গোত্রগত সংঘাতের মতো দুই দলের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘ মেয়াদে সেটারও অবসান হবে। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে যে কথিত বিভাজন তারও সমাধান জরুরি। সেই সমাধানসূত্র খুব জটিল কিছু না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন রায়ে জামায়াতকে দল হিসেবে যেভাবে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, ওই রায়গুলোর ভিত্তিতে তাকে নিষিদ্ধ করা খুবই সম্ভব।
তবে বিএনপি, বিশেষ করে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এ আশ্বাস থাকতে হবে যে, জামায়াত নিষিদ্ধ হলে নিষিদ্ধ ওই দলের ‘ভারপ্রাপ্ত আমির’-এর দায়িত্ব তিনি আর তার কাঁধে রাখবেন না।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর ওই সুযোগ তার সামনে এসেছিল। সেদিন গোহারা পরাজয়ের পর তিনি যদি বুঝতেন যে, আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের রাজনীতির ভরকেন্দ্র হবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং এ উপলব্ধি থেকে বলতেন যে, নতুন প্রজন্মের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি জামায়াতকে আর সঙ্গে রাখছেন না; তাহলে নির্বাচনে পরাজয়ের দায় তিনি যেমন এড়িয়ে যেতে পারতেন, তেমনি আজ জামায়াতের তাণ্ডবের দায়ও তাকে নিতে হতো না।
এমনকি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পরও তিনি বুঝতে পারেননি যে, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত রাজনৈতিক কার্ড তাকে এমন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে তার ভোটের অধিকার রক্ষার আন্দোলন আর জামায়াত-শিবিরের যুদ্ধাপরাধী বাঁচানোর আন্দোলন মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে। নিজের দল এবং জনগণের ওপর তিনি ভরসা রাখতে পারেননি। ভরসা করেছিলেন পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যার মতো নাশকতার রাজনীতির ওপর।
এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের ‘রাজবন্দি’ দাবি করে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তাদের মুক্তিও দাবি করেছিলেন; যার ফল হিসেবে আজ তিনি তার পক্ষের পশ্চিমা বিশ্বের কাছেও নাশকতার নেত্রী। তারাও আজ প্রকাশ্যেই তাকে আগে সহিংসতা ছাড়ার পরামর্শ দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জামায়াতের সেই নাশকতা এবং সহিংসতার ওপর নির্ভর করতে গিয়ে নিজ দলের সিনিয়র নেতাদের কথাও শোনেননি খালেদা জিয়া।
জামায়াতের কথা শুনে তিনি নির্বাচন বয়কট করেছেন। বাসে বোমা মেরে আর রেলপথের ফিসপ্লেট খুলে ট্রেন উল্টে মানুষ হত্যার আইএসআই এজেন্ডার জামায়াতি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায় আত্মগোপনে থাকা তার দলের নেতাদের ওপর চাপানোর সুযোগ করে দিয়েছেন।
নিজ দলের নেতাদের এমন কথাকেও তিনি এক ফুঁতকারেই উড়িয়ে দিয়েছেন, যেখানে তাকে বলা হয়েছিল, সরকার নির্বাচনে জোর করে হারিয়ে দিলেও ভোটের সন্ধ্যায় এবং রাতে সারাদেশে ভোটকেন্দ্রগুলোতে বিএনপির যে হাজার হাজার নেতা-কর্মী থাকবে, তারাই গণঅভ্যুত্থানের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে।
উল্টো তিনি আস্থা রেখেছিলেন জামায়াত-শিবিরের জঙ্গিবাদী কার্যক্রম, হেফাজতের ইসলামী বিপ্লবের দিবাস্বপ্ন আর মধ্যরাতের কিছু টকশোবাজের কল্পনাবিলাসী কথাবার্তার ওপর। বেগম খালেদা জিয়া এসবের ফল আজ হাতে হাতে পেয়েছেন। হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন।
বিপরীতে রাজনৈতিক খেলা আর নির্বাচনে জয়ী শেখ হাসিনা আপাতত সুখী একজন মানুষ। প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রতিযোগিতায় সংখ্যা হিসেবে এরই মধ্যে তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে ড্র করে ফেলেছেন। তবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের পাঁচ-পাঁচ ১০ বছরের সঙ্গে আর যে কয়েক সপ্তাহের প্রধানমন্ত্রিত্ব, তাকে শিগগিরই অতিক্রম করে যাবেন শেখ হাসিনা। খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রিত্ব ১০ বছর কয়েক সপ্তাহ হলেও শেখ হাসিনার জন্য তা এ দফাতেই ১৫ বছরও হতে পারে। কথিত ভোটে জয়ী। তাই, আপত্তিরও কিছু নেই। বাংলাদেশের মানুষ এ দুইজনকে প্রধানমন্ত্রিত্বের জমিদারি তো দিয়েই রেখেছেন!
কিন্তু আপত্তিটা হচ্ছে ‘প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, জনগণের সেবা করতে চাই’ বললেও ৫ বছর পর পর দুইজনের প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াই আয়োজনের প্রস্তুতিতে জনগণের নাভিশ্বাস ওঠে।
ক্ষমতার সেই লড়াইয়ে একজন মানুষের রক্তে অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা কায়েম করেন। কিন্তু ক্ষমতায় থাকার জন্য নিজের সেই শিশুকে গলা টিপে হত্যা করেন। বিপরীতে আরেকজন রক্ত ঝরানোর আগে পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা অসাংবিধানিক বলে মানতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নতুন করে আয়োজন করেন রক্তপাতের।
নিজেদের ক্ষমতার জন্য তারা পাঁচ বছর পর পর এ রক্তপাত, এ নাভিশ্বাস ওঠানো পরিবেশ সৃষ্টি করলেও মানুষের জন্য জীবনপণ করা কোনো আন্দোলন আমরা দেখি না। মানুষ সম্ভবত তাদের কাছে সেটা আর আশাও করে না। কিন্তু অন্তত এটা আশা করে যে, তারা তাদের ক্ষমতার জন্য রক্তের এ হোলিখেলা বন্ধ করবেন। পর্যায়ক্রমে জমিদারিটা কার হাতে থাকবে, ভোট দিয়ে মানুষ সেটা অন্তত ঠিক করে দিতে পারবেন।
দেশ শাসনের জমিদারি দুই নেত্রীর থাকুক, কিন্তু তাদের ক্ষমতার লড়াইয়ে বার্ন ইউনিট কিংবা গোরস্থান বা শ্মশান যেন নিরীহ মানুষের ঠিকানা না হয়। দুই নেত্রীর জমিদারি ঠিক করে দেওয়ার ক্ষমতাটা যেন একদিনের জন্য হলেও মানুষের হাতে থাকা নিশ্চিত থাকে।
ক্ষমতার পালা বদলে একবার না একবার দুই নেত্রীকে বাক্স ভরে ভোট দেওয়ার আশা মানুষ অন্তত করতেই পারেন। তাদের সেই আশা পূরণে এখন সংবিধানের সংস্কার ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রের আর সবকিছু গোল্লায় যাক, শুধু মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সেই সংস্কার জরুরি।
ভোটাধিকার নিশ্চিতে ক্ষমতাবান নির্বাচন কমিশন
শুধু আগামীবার বা তার পরের বার নয়, নির্বাচনী সরকার ব্যবস্থা নিয়ে স্থায়ী সমাধান সূত্র একটাই। সেটা হলো- তফসিল ঘোষণার পর থেকে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে সরকারের চেয়েও বেশি ক্ষমতাবান হবে নির্বাচন কমিশন। সংবিধানে শুধু নির্বাচন কমিশনের ইচ্ছায় সরকার করবে, এমন না রেখে এ রকম রক্ষাকবচ রাখতে হবে, যাতে নির্বাচনের সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কিছু কমিশন নিজের ইচ্ছায় করতে পারে।
তবে কমিশনকে এমন ক্ষমতা দেওয়ার পাশাপাশি কমিশনে কারা থাকবেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এবং সদস্য হিসেবে বার বারই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি/ব্যক্তিদের কথা বলা হয়েছে। আর নতুন ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশন যেহেতু নির্বাচনের সময় সরকারের মতো ক্ষমতা ভোগ করবে; তাই সেই কমিশন গঠনে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রাখা উচিত, যাতে জাতীয় সংসদে প্রধান দুই দলের মতৈক্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।
সমস্যা হলো, বাংলাদেশের দুই প্রধান দলের একটি বিএনপি যেহেতু এখন সংসদের বাইরে; তাই প্রথমবার সেই নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় তাদের সঙ্গে মতৈক্যের ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
আবারও ‘না’ ভোটের বিধান চালু
মজার বিষয় হলো, বিএনপি কয়েক বছর ধরে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার দাবিতে সহিংস আন্দোলন করলেও যখন ‘না’ ভোটের বিধান উঠিয়ে দেওয়া হলো, তখন কিন্তু তারা তেমন একটা উচ্চবাচ্য করেনি। দুই দলের মধ্যে ক্ষমতায় থাকা না থাকা নিয়ে পার্থক্য ছাড়া আর যে তেমন কোনো মতভিন্নতা নেই, এটা তারই একটা প্রমাণ।
অথচ ‘না’ ভোটের বিধান বাতিল করার সময়ই স্পষ্ট হয়েছিল, মোটামুটি একটা একদলীয় নির্বাচন করতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। তাদের আশঙ্কা ছিল, ‘না’ ভোটের বিধান বহাল থাকলে একদলীয় নির্বাচনে অনেক জায়গায় ‘না’ ভোটের পাল্লা ভারী হয়ে গেলে মহাকেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
ভবিষ্যতে এরকম একদলীয় নির্বাচন পরিহার করতে হলে সাংবিধানিক রক্ষাকবচ হতে পারে ‘না’ ভোটের বিধান। দুই দলেরই নিজ স্বার্থে এরকম একটি ব্যবস্থায় আসা উচিত। কেউ নির্বাচন বয়কট করলেও সেক্ষেত্রে মানুষের সামনে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে একদলীয় নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের আনুষ্ঠানিক একটা সুযোগ থাকবে।
মেজরিটি ভোটের বিধান
বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাটা এরকম যে, নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়লো, তা কোনো নির্ণায়ক নয়। এক লাখ ভোটারের মধ্যে একজন প্রার্থী যদি মাত্র ১০টি ভোট পান, আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী/ প্রতিদ্বন্দ্বীরা দশের কম, তাহলেও ১০ ভোট পাওয়া প্রার্থীই নির্বাচিত। যেসব সভ্য দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রক্তারক্তি ঘটে না, সুযোগ-সুবিধামতো একদলীয় নির্বাচন হয় না; সেখানে কত শতাংশ ভোটার ভোট দিলেন, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো ভঙ্গুর গণতন্ত্রের দেশে কমপক্ষে ৫১ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনর্নির্বাচনের বিধান খুবই জরুরি।
এখানে অতিকথক মন্ত্রীদের মতো অযথা যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ টেনে কুতর্ক না করাটাই মঙ্গল।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর স্বাধীনতা
‘না’ ভোটের বিধান বাতিলে নীরব থাকার মতো জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে হলে কমপক্ষে তিন বছর দল করার বিধান বাতিলের সময়েও নীরব ছিল বিএনপি। এখানেও আওয়ামী লীগের মতো তাদের অভিন্ন স্বার্থ। এর মানে হচ্ছে, দুই দলই এ রকম স্বাধীনতার পক্ষে যে, তারা যাকে যখন ইচ্ছা, তাকে তখন প্রার্থী করতে পারবে। কিন্তু দলহীন কিংবা দল ছেড়ে যাওয়া প্রার্থীদের টুঁটি চেপে ধরে রাখতে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কমপক্ষে এক শতাংশ ভোটারের সই বাধ্যতামূলক রাখা হয়েছে। দুই দল যে দেশটাকে তাদের জমিদারি মনে করে, এটা তার আরেকটি প্রমাণ। একজন প্রার্থীর পক্ষে ভোটারদের মত প্রকাশের জায়গা হবে নির্বাচন। সেখানে আগেই এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনের শর্ত কেন? এটা তো গোপন ভোটের বিধানেরও পরিপন্থী। একইসঙ্গে ক্ষমতাসীনদের স্বার্থে সই জাল অজুহাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ তো আছেই।
এ রকম কোনো কালো আইনে যাতে কারো প্রার্থী হওয়ার স্বাধীনতা নস্যাৎ করা না যায়, সেজন্য এই এক শতাংশ ভোটারের সইয়ের বাধ্যবাধকতা বাতিল করতে হবে। প্রয়োজনে সংবিধানে তা স্পষ্ট করতে হবে যাতে করে কোনো কালো আইন অবৈধভাবে কারো প্রার্থিতা ঠেকিয়ে দিতে না পারে।
আগাম নির্বাচন বনাম আগাম সতর্কবাণী
নির্বাচন নিয়ে আগাম এসব কথাবার্তা মানে আগাম নির্বাচন নয়। বরং আগামী নির্বাচন নিয়ে আগাম সতর্কবাণী। আমরা নির্বাচন নিয়ে আরেকটা রক্তারক্তি দেখতে চাই না। আরেকটা একদলীয় নির্বাচনও নয়।
আগামী নির্বাচনে সরকার ব্যবস্থা আর নির্বাচন কমিশন নিয়ে তাই আলোচনাটা এখনই শুরু হওয়া উচিত, যাতে করে নির্বাচনের অনেক আগেই আমরা জানতে পারি যে, আমাদের ভোটাধিকারের নামে কেউ আমাদের পেট্রোল বোমা মেরে হত্যা করবে না। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা আর গণতন্ত্রের নামে কেউ আমাদের ভোটাধিকারকে খুন করবে না।
জাহিদ নেওয়াজ খান: সাংবাদিক ([email protected])