ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তমত

কুমিল্লা প্রেসক্লাব নির্বাচন: প্রয়াত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা এখন বিস্মৃত!

দেলোয়ার জাহিদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৪
কুমিল্লা প্রেসক্লাব নির্বাচন: প্রয়াত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা এখন বিস্মৃত!

‘শ্রেষ্ঠত্ব ও শীর্ষত্ব দ্বারা মানুষকে আমাদের বিচার করা উচিত নয়; বরং উচিত বিন্দু থেকে শুরু করে তারা যে দূরত্ব ভ্রমণ করেছেন এর বিচার করা। ’-হেনরি ওয়ার্ড বিইচার।



উদ্ধৃতাংশটি আমাদের এ আলোচনার প্রক্ষাপটে খুবই তাৎপর্য্যপূর্ণ ও অসাধারণ। ১৯৮৫ সালে কুমিল্লা প্রেসক্লাব পুনর্গঠনকালে আমাদের মূল লক্ষ্য ছিলো সদস্যদের পেশার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতার কিছু ক্ষেত্র প্রস্তুত করা, একটি মুক্ত প্রেসনীতিকে সমর্থন করে এর কার্যক্রমের প্রচার ও প্রসারে সকল সীমাবদ্ধতাকে দূর করা এবং সদস্যদের সেভাবে প্রস্তুত করে তোলা। প্রেসক্লাব সদস্য ও বৃহত্তর জনসাধারণের জন্য তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ প্রদানে সহায়তা, এর সুবিধাগুলোকে বিনামূল্যে প্রবাহ ও সকলের জন্য এগুলো উন্মুক্ত করা। ‘প্রেস’, বিস্তৃতভাবে বর্ণনা করতে গেলে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে তরুণ বয়সী কর্মীদের জন্য ক্রমবর্ধমান, জটিল ও প্রতিযোগিতামূলক চাপে পরিণত হচ্ছে। প্রেসক্লাবের ক্ষমতাকে প্রতিদ্বন্দ্বী চাপ বলেও অনেকে এখন মনে করতে পারেন। তাই প্রেসক্লাব নির্বাচন সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি জটিল সমীকরণ, প্রেসক্লাবে বিনামূল্যে বক্তৃতা, খোলা সরকার, প্রেস শ্রমিক সুরক্ষা এবং উচ্চ নৈতিক মান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সমর্থন নেওয়া দরকার। এটি তারা বর্তমানে প্রেসক্লাবের অনুমোদিত সংবিধান বা অনুরূপ ফোরাম উন্নয়নের সমর্থন নিতে পারেন, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা বহুধা প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। প্রয়াত সাংবাদিকগণ পেশাগত জীবনে অনেক  কঠিন পথ অতিক্রম করেছেন। মানুষ মাত্রই দৃষ্টিভঙ্গি গত পার্থক্য থাকবে, তবে এগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।   এসব পেশাজীবীর জীবন-জীবিকা ও সাংবাদিকতা থেকে তরুণ প্রজন্মের অনেক কিছুই শেখার আছে।

কুমিল্লা প্রেসক্লাবের নির্বাচনী তফসিল ঘোষিত হয়েছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. জহিরুল ইসলাম এ তফসিল ঘোষণা করেন। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অপর দুই নির্বাচন কমিশনার বদরুল হুদা জেনু ও শাহ মো. আলমগীর। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আশিক অমিতাভ ও সাদেক হোসেন মামুন। আগামী ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের  নির্বাচন। নির্বাচনে  প্রার্থিতার স্বপক্ষে  ইতোমধ্যে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো আচরণবিধি চোখে পড়েনি।

মনে পড়ে ঢাকায় কাটাসুর মোহাম্মদপুর এ সমাজকণ্ঠ ও সমাজ প্রিন্টিং প্রেস নিয়ে স্থায়ীভাবে চলে গিয়েছিলাম, লাইসেন্সিং প্রক্রিয়াসহ সব শেষ করে সবে কাজকর্ম শুরু করেছি, এরই মাঝে মোস্তফা ভাই কুমিল্লা থেকে এসে হাজির। তিনি আমাকে কুমিল্লায় ফিরিয়ে নিতে চান। আমাকে সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লায় মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে চান। অনেক পীড়াপিড়িতে শেষ অবদি রাজি হতে বাধ্য হলাম। ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরী ভাই এ কথা শুনে আমার উপর খুবই ক্ষেপে গেলেন। কারণ ঢাকায় গিয়াস ভাইকে নিয়ে কিছু সাংগঠনিক কাজকর্মও শুরু করেছিলাম। উনার প্রত্যাশা ছিলো আমি ঢাকায় কাজ করবো।

কুমিল্লায় ফিরেই মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার সাংগঠনিক কাজে হাত দিলাম। সাবেক ইন্সপেক্টর অব কলেজ মোহাম্মদ আলী ও ক’জন অধ্যাপককে নিয়ে ফরিদা বিদ্যায়তনের বারান্দায় ক্লাশ শুরু করলাম। একটা হাতল ভাঙা চেয়ারে বসে আমি তখন দাফতরিক কাজকর্ম করতাম। আমার বাবা কবি এম এ খালেক অধ্যাপনায় আমাকে খুবই উৎসাহ যোগাতেন। একসময় তিনিও একটি হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতাম এবং মহিলা কলেজ গভর্নিং বডিতে শিক্ষক পরিষদের প্রথম নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলাম। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বভার নিয়ে ধর্মসাগর পাড়ের বাড়িটির দখল বুঝে নিয়েছিলাম এবং এরশাদের মনোনীত প্রধানমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাতপূর্বক কলেজটি অনুমোদনের সুপারিশপত্র আদায় করে এনেছিলাম। কুমিল্লা প্রেসক্লাবের বিষয়ে মোস্তফাভাই-ই আমাকে আগ্রহী করে তুলেছিলেন। কিন্তু তরুণ সাংবাদিকদের বিষয় নিয়ে কিছু মতবিরোধ সৃষ্টি হলে আমি সে কলেজ থেকে পদত্যাগ করে চলে এসেছিলাম এবং ১৯৮৫ সালের ১৬ই অক্টোবর কুমিল্লা প্রেসক্লাবের পুনর্গঠনপূর্বক সরকারি নিবন্ধন গ্রহণ করেছিলাম। অধ্যাপক ওহাব তখন নিয়মিতভাবে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দিতেন। অধ্যাপক ওহাবকে ঘিরে রয়েছে আমার কত না স্মৃতি। সমাজকণ্ঠ প্রকাশের কারণে একধরনের অস্থিরতা ছিলো। শুভানুধ্যায়ীরা আমার নিরাপত্তা নিয়ে ছিলেন খুবই চিন্তিত। আমার কোনো বিপদ সংকেত পেয়ে অধ্যাপক ওহাব ছুটে এলেন বাসায়, আমার স্ত্রীকে শুনিয়ে গেলেন তার ক্ষোভের কথা। ‘তোমাকে বলে দিচ্ছি! দেলোয়ার লড়তে লড়তে দুনিয়া থেকে বিদায় নেবে...হিমালয়কে ধাক্কিয়ে ধাক্কিয়ে একদিন ক্লান্ত হয়ে এর পাদদেশে একদিন ঘুমিয়ে পড়বে...!’ যখন আমি সেই ঘুমিয়ে পড়ার অপেক্ষায় তখন ২০০৩ সালে অধ্যাপক ওহাব নিজেই আকস্মিক বিদায় নিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। কিন্তু তার কথাগুলো আজো হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে।

মরহুম অধ্যাপক আবদুল ওহাব। দৈনিক রূপসী বাংলা পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, কবি ও সাংবাদিক। এতসব পরিচয়ের মাঝে আরও একটি পরিচয় তার স্বীয় পরিচয়কে অনেক মহিমান্বিত করেছে। আর তা হলো, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি। শিক্ষকতা জীবনের পাশাপাশি প্রায় ৩৩ বছর সাংবাদিকতার সৃষ্টিশীল মহান আদর্শের সৈনিক হিসেবে আবেগপ্রবণ এ মানুষটি একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন। যিনি পড়তে ও লিখতে ভালবাসতেন, ৮ হাজারের অধিক সম্পাদকীয় লিখেছেন তিনি, যেগুলো সমাজ, সাহিত্য, রাজনীতি, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও আন্তর্জাতিক বিষয়সহ বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় সমস্যার বিষয়ে তার নিজস্ব জ্ঞান দ্বারা ছিলো উদ্ভাসিত। তিনি সমাজ সচেতনতায় অতুলনীয় অবদান রেখে গেছেন। তাঁর লেখাগুলো ছিলো পাঠক সমাজে বেশ সমাদৃত। যার কারণে এগুলো এ প্রজন্মের সাংবাদিকদের জন্য পুস্তক আকারে প্রকাশের দাবি রাখে। অধ্যাপক আবদুল ওহাবের মৃত্যুর পর তার সহায় সম্পত্তির উত্তরাধিকার হয়েছেন তার পরিবার পরিজন। কিন্তু জ্ঞানের উত্তরাধিকারী সমাজের সবাই। সহযোগিতা পেলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগুলো প্রকাশের বিষয়ে কিছু কাজ করা উচিত। তার নির্বাচিত শত সম্পাদকীয়ের উপর গবেষণা ও স্মারক নিবন্ধ প্রকাশ হতে পারে, বা বক্তৃতামালারও আয়োজন করা যেতে পারে। দৈনিক রূপসী বাংলার উচিত এসব বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। এতে তরুণ প্রজন্মের সাংবাদিকেরা অনেক উদ্বুদ্ধ ও জ্ঞানচর্চায় অনুপ্রাণিত হবে।

মরহুম গোলাম মোস্তফা চৌধুরী। একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, একজন সমাজসেবক, একজন সংগঠক, একজন সৃষ্টিশীল সংবাদকর্মী, যিনি দীর্ঘকাল দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা সংবাদদাতা এবং সাপ্তাহিক সমাজকণ্ঠের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। তার মোহনীয় ব্যক্তিত্ব ও অতি সাধারণ বেশভূষার জন্য সকলের কাছেই তিনি মোস্তফাভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কুমিল্লার অনেক প্রবীণ ও মধ্য-বয়সী নেতা-নেত্রী ও পেশাজীবী মানুষের তিনি ছিলেন অভিভাবকতুল্য, একজন যোগ্য পথিকৃৎ। বাইরে থেকে ইস্পাত কঠিন মানুষ মনে হলেও ভেতরে ভেতরে ছিলো তার একটি কোমল ও দরদী মন। কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি।

মরহুম মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী। সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, যার বহুমাত্রিক গুণাবলী সমাজে সর্বজন স্বীকৃত। সাপ্তাহিক আমোদ রাজধানীর বাইরে থেকে প্রকাশিত একটি প্রাচীনতম সাপ্তাহিক সংবাদপত্র। তার উদ্ভাবনী পদক্ষেপ, প্রগতিশীল ধারণা এবং কার্যকর সম্পাদনায় আমোদ’র স্বকীয়তা ও ঐতিহ্য রয়েছে। আমোদ পরিবার থেকে কুমিল্লার অনেক সাংবাদিকেরই হাতেখড়ি। মরহুম  মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী একজন স্বল্পভাষি সুশীল মানুষ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন । কুমিল্লা প্রেসক্লাবের একজন আন্তরিক শুভানুধ্যায়ী ছিলেন মরহুম রাব্বী।


মিসেস শামসুন নাহার রাব্বী। সাংবাদিকতায় মোহাম্মদ ফজলে রাব্বীর পরিপূরক হয়ে উঠেছিলেন মিসেস শামসুন নাহার রাব্বী। ১৯৮৫ সাল থেকে সাপ্তাহিক আমোদ’র সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।   একজন নারী সাংবাদিক হিসেবে বিভিন্ন বইয়ের লেখক মিসেস রাব্বী মধ্যপ্রাচ্য, পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা সফর করেন, শিক্ষক হিসেবে তিনি উন্নয়ন সাংবাদিকতা ও যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট আয়োজিত সাংবাদিকতার অনেক প্রশিক্ষণ কোর্সে তিনি অংশগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা একাডেমীর একজন আজীবন সদস্য। ১৯৯০ সালের মাঝামাঝিতে একটি অব্যাহত গবেষণার পর নারী সাংবাদিকদের সম্পূর্ণরূপে একটি পৃথক গ্রুপ হিসেবে গণ্য করার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে, কিন্তু সাংবাদিকতায় বাংলাদেশি প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কুমিল্লায় একজন জ্যেষ্ঠ নারী সাংবাদিক হিসেবে তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি কখনো। তিনিও কুমিল্লা প্রেসক্লাবের একজন সুহৃদ ও শুভানুধ্যায়ী।

মরহুম মোহাম্মদ উল্লাহ ছিলেন ড. আখতার হামিদ খানের একজন ভাবশিষ্য। সাপ্তাহিক নিরীক্ষণের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। আমাকে চিনতেন আমার কৈশোর থেকে। সমাজকণ্ঠে একদিন এলেন তার নিজস্ব মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি অভিযোগ নিয়ে, আব্দুল আজিজ মাসুদ ও নজরুল ইসলাম বাবুলকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দিয়েছিলাম প্রয়োজনীয় কাজ করার জন্য। বঞ্চনার শিকার এ উন্নয়ন কর্মীর উপর ক’টি মানবিক প্রতিবেদন ছাপা হলো সমাজকণ্ঠসহ বেশ কটি জাতীয় দৈনিকে। আমাদের সহযোগিতায় তার জেতা মামলায় রায়ের তিনি কার্যকারিতা  পেলেন। তরপর থেকে সমাজকণ্ঠে এসে প্র্রায়ই আড্ডা জমাতেন। ড. আখতার হামিদ খান প্রসঙ্গ নিয়ে গল্প করতেন, ১৯৭৩ সালে বার্ডের অধীন তিনি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন একটি সমবায় প্রকল্পে। ছাত্রজীবনে তার ছিলো একটি রাজনৈতিক পটভূমি, ভিক্টোরিয়া কলেজের স্টুডেন্ট ফ্রন্টের একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন, ছিলেন একজন ভাষা সৈনিক। রাজনৈতিক কারণে জেল খেটেছেন বেশ ক’বার। সমবায়ীদের মুখপত্র সমযাত্রা পত্রিকার সম্পাদকও ছিলেন। তৎসময়ে সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ পত্রিকাটির ঘোষণাপত্র নিতে তাকে ব্যক্তিগতভাবে আমার অনেক সহযোগিতা ছিলো। পরবর্তী সময়ে নিরীক্ষণে রেজাউল করিম শামীম, সৈয়দ নূরুর রহমান, আব্দুল আজিজ মাসুদ, ওমর ফারুকী তাপস দায়িত্ব পালন করেছেন, এখন অনুজ জামাল দামাল’র সম্পাদনায় পত্রিকাটি বের হচ্ছে।

জানা মতে, উন্নয়ন সাংবাদিকতার ধারা নিরীক্ষণে আজো অটুট রয়েছে। ১৯৯৬ সালে জার্মানের ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশনে উচ্চতর গবেষণা নিয়ে আমি যখন খুবই ব্যস্ত তখন প্রবীণ সাংবাদিক মোহাম্মদ উল্লাহ ‘ধূসর স্মৃতি’ নামে ২০০০ সালে আখতার হামিদ খান স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করেন। ইত্তেফাক সংবাদদাতা খায়রুল আহসান মানিকের সন্নিধিতে ২০০০ সালের ১ অক্টোবর ইহলোক ত্যাগ করেন নিরীক্ষণ সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ। তিনিও ছিলেন কুমিল্লা প্রেসক্লাবের একজন আন্তরিক শুভানুধ্যায়ী।

১৯৮৫-৯২ সাল পর্যন্ত আমি ও অধ্যাপক সামাদ এবং এর পরবর্তীতে ধারাবাহিক ভাবে যারা ক্লাব সভাপতি ও সম্পাদক  হন তারা হলেন অধ্যাপক ওহাব-নজরুল ইসলাম বাবুল, জহিরুল হক দুলাল-নাসির উদ্দিন। রেজাউল করিম শামীম-নুরুর রহমান বাবুল, জহিরুল হক দুলাল- নাসির উদ্দিন, গোলাম মোস্তফা চৌধুরী-বাকিন রাব্বী, অধ্যাপক ওহাব-সৈয়দ নুরুর রহমান, আমিনুল হকু- সৈয়দ নুরুর রহমান, আবুল হাসানাত বাবুল- শাখাওয়াত হোসেন সেলিম, অধ্যাপক মফিজুল ইসলাম- রমিজ খান, রমিজ খান-আসিক অমিতাভ, রমিজ খান-লুৎফর রহমান, মিজানুর রহমান (আহ্বায়ক)-আরিফ অরুনাভ, আশিক অমিতাভ-আবুল কাশেম হৃদয়, আশিক অমিতাভ- সাদেক হোসেন মামুন (ভারপ্রাপ্ত) যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন বলে প্রকাশ।  

সম্প্রতি কুমিল্লায় বেশ কটি সাংবাদিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার পাশাপাশি টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ইয়ুথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, রিপোর্টার্স ক্লাব’র কার্য্যক্রম উল্লেখ্য। আমাদের প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নই অনেকটা নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছিলো। কুমিল্লা প্রেসক্লাবের অতীত কার্যক্রমের ছবি দেওয়া হলো।

কুমিল্লা প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচন যেন গণতন্ত্র চর্চার একটি মডেল হিসেবে সারা দেশের সাংবাদিক সংগঠনগুলোর জন্য অনুকরণীয় হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে সৎ, যোগ্য, গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। প্রতিষ্ঠিত হয় একটি সমন্বয়ক ফোরাম যা দল, মত ও গোষ্ঠী স্বার্থের উর্দ্ধে উঠে বস্তুনিষ্টভাবে কুমিল্লার উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। তাহলেই প্রয়াত প্রবীণ ও নবীন সাংবাদিকদের আত্মা শান্তি খুঁজে পাবে, পাবো আমি নিজেও। প্রবাসে থাকলে ও হৃদয়ের শেকড় আমাদের বাংলাদেশে।



লেখক: দেলোয়ার জাহিদ, সভাপতি-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব অব আলবার্টা; কুমিল্লা প্রেসক্লাব ও কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি।

 

বাংলাদেশ সময়: ০৭১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।