ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

রম্য রচনা

পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবার বিশাল গরু-ছাগলের হাট

জাহিদ নেওয়াজ খান, কনট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪
পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবার বিশাল গরু-ছাগলের হাট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম

না, আমাদের সাংবাদিকতার মান নিয়ে চরম হতাশ হয়ে পড়ছি। শুধু হতাশা থাকলেও নিজেকে বোঝানো যেতো।

সাংবাদিকতার বর্তমান মানে এর ভবিষ্যত নিয়েই যে অন্তরাত্মা কেঁপে উঠছে। এটা কোনো কথা হলো যে এই ডিজিটাল যুগে আমরা গরু-ছাগলের সাংবাদিকতা করবো! এমডিজি অর্জনের পথে আমরা যখন ধেই ধেই করে এগিয়ে যাচ্ছি, তখন লেখালেখি করবো গরু-ছাগলের হাট নিয়ে!

আসলে আমাদের সৃজনশীলতা আর সৃষ্টিশীলতাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। না হলে কি দরকার যে কোথায় গরু-ছাগলদের অস্থায়ী আবাস হবে, সেটা নিয়ে আমরা ব্যতিব্যস্ত! কি দরকার যে চার-পেয়েরা কয়েকদিন চায়ে চুমুক দেওয়া মানুষগলোর সঙ্গে মোলাকাত করবে, সেজন্য আমরা চিন্তিত! কতো বিষয়ই তো আছে এ দেশ নিয়ে লেখার। দেশ নিয়ে না পারি, ধরাধাম তো আছে। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে কাঙ্খিত পুরুষ জর্জ ক্লুনি আর লেবানিজ বংশের অমল আলমউদ্দিনের বিয়ে নিয়েও তো লেখা যায়। আহা, অমল আলমউদ্দিনের নামটা শুনেই তো কতো কাছের মনে হয়। বাঙালিত্বও আছে, মুসলমানিত্বও। এমনকি ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ধবংস হোক নিপাত যাক’ বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠানো বামপন্থিরাও এ গৌরবের অংশীদার হতে পারেন। অমল আলমউদ্দিন যে মার্কিনীদের তখতে তাউশ কাঁপিয়ে দেওয়া জুলিয়ান ‍অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী ছিলেন।

ঠিক আছে। আমরা না হয় পাপারাজ্জি সাংবাদিকতা করি না। তাই ভেনিসে রিপোর্টার তো দূরের কথা, ক্যামেরাম্যানও পাঠাই নি। যেমন সারাক্ষণ ভারত নিয়ে চিন্তিত আমরা দু’ দেশেই নতুন সরকার আসার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম দিল্লি সফর কাভার করার জন্য সাংবাদিক পাঠাই নি। অতো ছোট বিষয়ে তো আমাদের রুচি নেই। আমরা তাই প্লেন ভরে মার্কিন মুল্লুকে গাদা গাদা সাংবাদিক পাঠিয়েছি। এখন সেটা নিয়েই তো আমাদের বেশি আলোচনা করা উচিত। তা না, কোথাকার কোন গরু-ছাগলের হাট!
cow_01
আমাদের তো উচিত ছিলো জাতিসংঘ নামে বিশ্ব রঙ্গমঞ্চে যে সার্কাস হচ্ছে সেটা আরো বেশি বেশি করে কাভার করা। আরো বেশি বেশি সাংবাদিকও পাঠানো উচিত ছিলো আমাদের। বিষয়ের কি অভাব আছে সেখানে! শুধু যে বিশ্ব রাজনীতি আর কূটনীতিই আছে এমন নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, সুতরাং একজন পরিবেশ সাংবাদিক পাঠানো উচিত ছিলো। না হয় একটু বাড়তি পরিশ্রম করে তিস্তা নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনাটাও কাভার করতেন তিনি।

একজন খুব সিনিয়র সাংবাদিকও পাঠানো যেতো। তা হলে এখন যে বঙ্গবন্ধুকে দেওয়া মোদির সার্টিফিকেটে আমরা খুশিতে বাক-বাকুম, সে প্রেক্ষাপটে তিনি একাত্তরে ইন্দিরা গান্ধীর রেফারেন্সে দশাসই একটা কলাম লিখতে পারতেন। আমরা জাতিসংঘে যেভাবে আমাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্য-প্রযুক্তি-অবকাঠমো নিয়ে ফিরিস্তি তুলে ধরেছি, তার জন্যও খাত অনুযায়ী আলাদা-আলাদা রিপোর্টার পাঠানো উচিত ছিলো। তা হলে পত্রিকাগুলো দেখে মনে হতো নিউইয়র্ক থেকেই ছাপা হয়েছে আজকের সংস্করণ।

সামর্থ একটু কম থাকলে অন্তত: বয়:সন্ধি বিষয়ক একজন সাংবাদিককে  যে নিউইয়র্কে পাঠানো খুবই উচিত ছিলো, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই কেউ দ্বি-মত করবেন না। তা হলে এমডিজি অর্জনে আমাদের অগ্রগতি বর্ণনার সঙ্গে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স কমিয়ে আনার পর আর কি কি ভাবে আমরা আরো এগিয়ে যাবো সে বিষয়ে তিনি চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে পারতেন। কে না জানে যে কিশোর আর তরুণ বয়সে বিপরীত লিঙ্গের মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের কি হানিই না ঘটাই! এখন যদি কচিকাঁচা বয়সেই বিবাহের ব্যবস্থা হয়, তা হলে ভগ্ন স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে আমরা শরীর ও মস্তিষ্ক দুটোকেই অনেক বেশি উৎপাদনশীল করতে পারবো। সাধারণ পরিষদে যে বিষয়টা কেনো উত্থ‍াপন হলো না এটা নিয়ে অবশ্য একটু চিন্তিত আছি।

আজকের পত্রিকাগুলোতে এসব বিষয় তো উঠে আসলোই না, বরং কোথাকার কোন গরু-ছাগল নিয়ে আমাদের টেনশন।
Cow_02
হোক না সেই হাট সারাক্ষণ দুর্ঘটনা লেগে থাকা দেশের প্রধান  অর্খোপেডিক অথবা হার্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসার রাস্তা বন্ধ করে। তাতে কী! দেশে প্রতিদিনই তো অনেক মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। পঙ্গু হাসপাতালে জরুরি চিকিতসা না পেয়ে এ সংখ্যাটা কয়েক ডজন বাড়লে এমন কী ক্ষতি। কোরবানির হাটের কারণে অনেক দূরে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে চ্যাংদোলা করে আনতে আনতে দুয়েকজন মরে গেলেই বা কী! মার্কসীয় দর্শনে আমাদের সমাজ ব্যবস্থার মূলে ঢুকতে হবে। সড়ক যদি নিরাপদ হতো, তা হলে দুর্ঘটনাই তো ঘটতো না। দুর্ঘটনা না ঘটলে কাউকে পঙ্গু হতে হতো না, বেঘোরে মরতেও হতো না। সুতরাং আগে সড়ক ঠিক করতে হবে, সড়ক নিরাপদ করতে হবে। নিরীহ পশুদের হাটকে দোষ দিয়ে কি লাভ! দেশের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে এ দেশের মানুষও তো গরু-ছাগলের মতোই।

অথবা যে হৃদরোগ কিংবা নিউরো হাসপাতালের কথা বলা হচ্ছে, সেখানেও গরু-ছাগলের কি দোষ! আপনি গরু-ছাগলের মতো নির্বোধ থেকে সিগারেট-বিড়ি খাবেন আর হৃদরোগে আক্রান্ত হবেন না, তা তো হয় না। সাংবাদিকরা পারেও বটে। কোথায় তারা তামাক আর মাদকবিরোধী প্রচার-প্রচারণার সংবাদ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, তা না করে তারা এসেছে হার্ট ‍অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের জরুরি চিকিৎসার মতো অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে।

হাট বসবে বলে হাসপাতালের প্রধান ফটকটি হয় তো বন্ধ রাখতে হতে পারে, তাই বলে গলি-ঘুপচি দিয়ে ঢোকা যাবে না; তা তো আর না। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে এলেই যে চিকিৎসা হবে সেই নিশ্চয়তা কে দিচ্ছে! হয় তো ডাক্তার বাবু তখন ছেলের খতনা নিয়ে ব্যস্ত, কিংবা শ্যালিকা যে নতুন মডেলের মোবাইল ফোনের আবদার করেছে তার জন্য তিনি বসুন্ধরা সিটিতে। মোবাইলই যদি কেনা হলো, তা হলে একটু ফুডকোর্টে বসে দোসা-ইডলি খেতে সমস্যা কী! আর রাস্তায় জ্যামের চিন্তা না থাকলে সিনেপ্লেক্সে একটা সিনেমা দেখে যেতেইবা দোষ কোথায়!

তোমরা সাংবাদিকরা পারো বটে! এসব বড় বড় বিষয় বাদ দিয়ে তোমরা এসেছো কোরবানির হাট নিয়ে। এটা তো আর হিন্দি সিনেমা ‘কোরবানি’ না, এটা হলো মনের পশুত্ব কোরবানির জন্য পরম করুণাময় প্রদত্ত স্বপ্নে প্রাপ্ত আদেশ। শুধু ত্যাগের মহিমা হলেও না হয় একটা কথা ছিলো। এখানে আরো কতো বিষয় লুকিয়ে আছে।
goat_01
মানুষকে নিজের বিত্ত-বৈভবের কথা জানানোর জন্যও তো একটা উপলক্ষ লাগে। সংযমের রোযা শেষে যে ঈদ তাতে বিদেশ ভ্রমণ, বাহারি পোষাক আর খানা-খাদ্যের কথা তো শুধু কাছের মানুষ জানে। কোরবানির ঈদ হচ্ছে বিত্ত-বৈভবের সার্বজনীন প্রদর্শনীর উপলক্ষ। ফাইল আটকে, ব্যাংকের পকেট কেটে, শাহজালাল দিয়ে সোনা এনে, খাদ্যে ভেজাল মিশিয়ে যে কাড়ি কাড়ি টাকা কামিয়েছি তাতে নিজের শরীরটা যেমস নাদুস-নুদুস হয়েছে, ওইরকম নাদুস-নুদুস একটা গরু কয়েকদিনে সাবাড় করতে সবার সামনে কাটতে না পারলে এতো টাকাকড়ির কি মানে!

সঙ্গে রসনা বিলাস বলেও তো একটা কথা আছে। হয় তো বউয়ের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময়ে এবারের গরুর বিশেষ পদ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে একটু ধমকই না হয় সে খেয়েছে। ছোটবেলায় মা কিভাবে গরুর মাংস রান্না করতেন, সেটা বলে একটু ঝাড়িও না হয় খেতে হয়েছে। তাতে কী! কোরবানির গরুর মজাই তো আলাদা! কাঁচাবাজার কিংবা শুকনো স্বপ্ন-অ্যাগোরা থেকে গরুর মাংস কিনে খাওয়া আর হাট থেকে আস্ত গরু কিনে গলায় মালা পরিয়ে কয়েকদিন ধরে আদর-সোহাগ করে নিজে জবাই দেখে নিজের হাতে হাড়-হাড্ডি কেটে ডাইনিং টেবিলে শ্যালিকার সঙ্গে আহ্লাদি কথা বলতে বলতে বউয়ের রান্না গরু খেতে যে কি মজা সেটা বউ কিভাবে বুঝবে! আর গরুর হাটে যাওয়াটাও তো এক বিশাল উৎসব।

সেই উৎসবে হাত বাড়ালেই বন্ধুর মতো কোরবানির পশুর হাটটাও যে হাতের কাছে করা হচ্ছে তারও যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ আছে। বাঙালি হচ্ছে হাঁটতে অপারগ এক জাতি। নিজের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে হাত উঠিয়ে বাস থামিয়ে সে বাসে উঠে। ব্যবসায়িক কারণে বাসের ড্রাইভার-কন্ডাক্টর তখন দয়ার সাগর হয়ে উঠিয়ে নিলেও নিজের দরোজার সামনে নামতে চাইলে গাঁই-গুঁই করে। তারপরও ঝাড়ি-ঝাপ্টা দিয়ে বাস থামিয়ে বাড়ির সামনেই নামা যায়। বাড়তি হাঁটায় বাঙালির প্রচণ্ড অনাগ্রহ। তাই ২০ হাত দূরে ফুট-ওভারব্রিজ থাকলেও সে হাত উঠিয়ে মাত্রই চলাচলের অনুমতি পাওয়া গাড়ির গতি থামিয়ে সড়ক পার হয়। মাঝেমধ্যে যে মুফতে দুয়েকটা জান আজরাইল মহাশয় নিয়ে যান না, এমন নয়। সেটা সড়কে মৃত্যু লেখা থাকলে কার কী করার আছে! একইভাবে গরুর হাটের চারপাশে ছয়-ছয়টি হাসপাতাল থাকলেই কী! গত শবেবরাতে কারো ভাগ্যে যদি লেখা হয়ে থাকে যে, হাসপাতালে আসার পথে চ্যাংদোলা অবস্থায় গরুর হাটেই তার মৃত্যু হবে, তা হলে সেটা তো নিয়তি; এ নিয়তির লিখন কে খণ্ডাবে! সেজন্য গরুর হাটকে দোষ দিয়ে লাভ কী!
camel_sm
ডিজিটাল বাংলাদেশে অনলাইনেও অবশ্য গরু বিক্রির সুযোগ ছিলো। কিন্তু বাঙালির অভ্যাস তো গরুর পশ্চাদদেশ পরীক্ষা করার সময় দুয়েকটা লাখি-গুঁতো খেয়েই গরু কেনা। গরু কেনার আগে গরুর শরীর-স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে সে সারাদিন হাটে কাটিয়ে দিতে পারলেও আসা-যাওয়ার জন্য সময় তার খুব কম। বউয়ের সঙ্গে শপিং-এ গিয়ে এক মার্কেটে কিংবা মার্কেট থেকে মার্কেটে ঘুরে যতো কিলোমিটারই সে হাঁটতে পারুক, অন্য সময় হাঁটাহাঁটিতে তার প্রচণ্ড অনাগ্রহ। সেজন্যইতো বাড়ির কাছে হাটের ব্যবস্থা।

তার চেয়েও বড় বিষয় যারা এ হাট ডেকে নিয়েছেন, যারা এর ব্যবস্থাপনা করবেন; সারা বছর তারা এর অপেক্ষায় থাকেন। দল ক্ষমতায় না থাকলে সেই অপেক্ষা যে কতো দীর্ঘ সেটা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কে বুঝবে! শুধু বিএনপির লোকজনই এখন সেটা বুঝতে পারছেন।

বিএনপিকে প্রয়োজনে ভবিষ্যতে ঠ্যাঙানি দেওয়ার জন্যই না এতো যোগাড়-যন্তর। লোকে মনে করতে পারে, এ হাট থেকে বেশ মালকড়ি সবাই বানিয়ে নেবেন। সেটা হয় তো ঠিক। কিন্তু মোটেই ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই এখানে। অর্থ হচ্ছে দুনিয়ার সকল কিছুর মূল, যেমন সুখের আরেক নাম স্বাস্থ্য। স্বাস্থ্য মানে নাদুস-নুদুস গরুর মতো নাদুস-নুদুস শরীর। শরীর যদি সেরকম না হয় তা হলে বিএনপিঅলারা তো পাত্তাই দেবে না। সেই শরীর বানাতে হলে টাকা লাগবে। ভবিষ্যতে বিএনপিঅলাদের ঠ্যাঙানি দেওয়ার প্রয়োজন হলে যন্ত্রপাতি লাগবে, সেটা কেনার জন্য অর্থের প্রয়োজন। এখনও সময় সময় রাজনৈতিক শো-ডাউনে লোক ভাড়া করতে হয়। সেটার জন্যও টাকার দরকার। এটা তো আর পদ্মাসেতু প্রকল্প না যে সরকার বিশ্বব্যাংককে ‘না’ বলে নিজের টাকায় করে ফেলবে। এটা মাতারবাড়ি প্রকল্পও না যে জাইকা কিংবা অন্য কোনো উন্নয়ন সহযোগী গৌরীসেন হয়ে আসবে। এটা হচ্ছে পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স। এজন্য অনেক টাকা প্রয়োজন।

এই টাকা যোগাড় করতেই না এতো কিছু। হাসপাতালকে কেন্দ্র করে গরু-ছাগলের বিশাল হাট। আর হাসপাতাল থাকায় সুবিধাও হয়েছে। কোরবানির পশুকে তো কোনোভাবেই কোরবানির আগে মরতে দেওয়া যায় না। এখানে আধা ডজন হাসপাতাল থাকায় বিরাট সুবিধা। ট্রাক উল্টে বা অন্য কোনো কারণে গরুর দুর্ঘটনা হলে পঙ্গু হাসপাতাল আছে। হৃদরোগের সমস্যায় আছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট। আমাদের নেতার নেতা সোহরাওয়ার্দি সাহেবের নামে যে হাসপাতাল সেখানে তো সব বিভাগই আছে, এমনকি ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ থাকায় গরুদের হাঁটাচলায় সামান্য সমস্যা হলে সেটাও ফিজিওথেরাপি দিয়ে দূর করা সম্ভব। এছাড়া স্ট্রোকের মতো বড়কিছু ঘটে গেলে নিউরো হাসপাতাল আছে। চোখের সমস্যায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান আর কিডনি সমস্যায় কিডনি ইনস্টিটিউট।

শুধু গরু-ছাগলই নয়, তাদের জন্য কোরবানির মহব্বতে যারা আসবেন তারাও প্রয়োজনে ওই গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালগুলো থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবেন। এমন পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবার গরুর হাট এদেশে আর একটাও হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সমস্যা শুধু জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট নিয়ে। ওই হাসপাতালটাও যে এই গরুর হাট এলাকার মধ্যেই পড়েছে।

জাহিদ নেওয়াজ খান: বার্তা সম্পাদক, চ্যানেল আই

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।