বর্তমান আরব বিশ্বের ব্যাপক ক্ষমতাশালী ব্যক্তিত্ব সৌদি বাদশা আব্দুল্লাহ। নানা কারণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন।
এক.
সৌদি বাদশা আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ আল সউদ। ১৯২৪ সালের ১ আগস্ট জন্ম গ্রহণ করেন। জন্ম ও পড়াশোনা রিয়াদেই। বাবার নাম আব্দুল আজিজ বিন আব্দুর রহমান আল সউদ। মা ফাহদা বিনতে আল আসি আল সুরাইম।
![](files/November_2014/November_11/z1_189335456.jpg)
দুই.
তার একাধিক স্ত্রী আছেন। তবে ক’জন আছেন এবং তাদের নাম সম্পর্কে জানা যায় না। তার পরিবারে নারীদের ব্যাপার খুবই রহস্যময়। বাইরের কেই একেবারেই জানতে পারে না।
তিন.
ছেলে ছয়জন। তবে মেয়ে আছে নাকি নাই তা জানা যায় না। বড় ছেলে খালিদ ৫৪ বছর বয়সে ২০১১ সালের জুনে মারা যান। অন্যরা হলেন মিতাব, আব্দুল আজিজ, মিশাল, ফয়সাল, বদর।
![](files/November_2014/November_11/z3_438264451.jpg)
চার.
ধর্মীয় আদর্শ রক্ষণশীল ওয়াহাবিজম।
![](files/November_2014/November_11/znew_720462484.jpg)
পাঁচ.
১৯৬২ থেকে ২০১০ পর্যন্ত টানা ৪৮ বছর তিনি সৌদি আরবের জাতীয় সেনাবাহিনী ন্যাশনাল গার্ডের কমান্ডার ছিলেন। এটি সৌদি আরবের এবং বিশ্বের ইতিহাসে এক আলোচিত ঘটনা।
![](files/November_2014/November_11/z5_364818894.jpg)
ছয়.
তার নিজের ছেলে ছয়জন হলেও মজার বিষয় হলো তিনি কিন্তু তা নন। তিনি তার বাবার ৩৭ জন পুত্রের একজন।
সাত.
বাদশা ফাহাদের মৃত্যুর পর ২০০৫ সালের ১ আগস্ট সৌদি আরবের বাদশাহী ক্ষমতা গ্রহণ করেন আব্দুল্লাহ। ধারণা করা হয় তার নেতৃত্বে আরব বিশ্বে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
![](files/November_2014/November_11/z6_929224628.jpg)
আট.
তিনিই প্রথম রাজকীয়ভাবে বিশুদ্ধ আরব ঘোড়ার প্রজনন কেন্দ্র চালু করেন। সেইসঙ্গে বিশুদ্ধ আরব অশ্বারোহীদের একখানা ক্লাবও প্রতিষ্ঠা করেন। অশ্বের সঙ্গে যেহেতু সৌদি ঐতিহ্যবাহী বীরত্বের প্রতীক যুক্ত আছে তাই তিনি এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তবে এটি করতে গিয়ে তিনি তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি করে আলোচিত হন।
নয়.
তরুণ বয়সে তিনি ঈগল কাঁধে বহন করতেন। নিজেকে বেশ সাহসী আর বীর হিসেবে জাহের করতেন আব্দুল্লাহ। এমন একটা ভাব করতেন যেন তিনি ঈগলের মতোই শক্তিশালী আর সাহসী।
![](files/November_2014/November_11/z7_784417425.jpg)
দশ.
তিনি কখনো ইংরেজি ভাষায় কথা বলেন না। অথচ আগের যেকোনো সৌদি বাদশার চেয়ে আব্দুল্লাহই মার্কিন ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরি করেন। বাবা বুশ থেকে শুরু করে পুত্র বুশ ও ওবামার সঙ্গে আব্দুল্লাহর সম্পর্ক রীতিমতো ঐতিহাসিক।
এগারো.
ক্ষমতা গ্রহণের আগেই আব্দুল্লাহ রাজ পরিবারে বেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। সৌদি সেনাপ্রধানের দায়িত্ব থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পর্যন্ত—সব সময়ই তিনি তার ব্যাপক প্রভাব বিস্তার গেছেন। রাজপরিবার থেকে শুরু করে রাজপ্রশাসনের প্রতিটি স্তরে আব্দুল্লাহর প্রভাব ছিল ব্যাপক।
বারো.
ক্ষমতা নেয়ার তিন বছর আগে ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আব্দুল্লাহ ইসরাইল-ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে ব্যাপকভিত্তিক শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। ১৯৪৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর ফিলিস্তিন নিয়ে এটিই ছিল কোনো আরব দেশ থেকে প্রথম কোনো শান্তি পরিকল্পনা। এ পরিকল্পনায় ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে পূর্ণ স্বীকৃতি দেয়ার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব করা হয়। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আব্দুল্লাহ বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়ে ওঠেন।
![](files/November_2014/November_11/z8_823658486.jpg)
তেরো.
২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আব্দুল্লাহ নারীরা চাকরি করতে পারবে বলে ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে ২০১৫ সাল থেকে নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন বলেও ঘোষণা দেন। দেশটির ইতিহাসে নারীর অধিকারে এটি হলো প্রথম কোনো ঘোষণা। এর আগে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি তার মন্ত্রীসভায় প্রথম কোনো নারীকে মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন।
চৌদ্দ.
বেশ সাদাসিধে সাধারণ জীবনযাপন করেন আব্দুল্লাহ। ধর্মের প্রতি বেশ অনুরাগী। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ট ছিলেন আব্দুল্লাহ। কিন্তু এই বাশার আসাদের সঙ্গে আব্দুল্লাহর সম্পর্ক সবসময় খুব ঘনিষ্ট ছিল। আব্দুল্লাহর একজন স্ত্রী আছেন। যিনি সিরিয়ার বংশোদ্ভূত ও শিয়া মতাবলম্বী।
সূত্র: সিএনএন, ফ্যাক্ট মনস্টার
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৪