এবার উচ্চশিক্ষার পচন রোগ নিরাময়ে রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান নিজেই উদ্যোগী হয়েছেন। যা নিঃসন্দেহে জাতির জন্য একটা ভালো সংবাদ।
অন্যদিকে সমাজের অংশীদার শিক্ষাবিদ, জ্ঞানী-গুণীজনদের সঙ্গে কোনো ধরনের পরামর্শ ছাড়াই কিংবা কোনো ধরনের গবেষণা ছাড়াই হঠাৎ করে নিজেদের মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভব একক কোনো চিন্তা-চেতনা গোটা জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলে তা হিতে-বিপরীত হতে পারে। অথবা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে কোনো (স্বার্থবাজ) পক্ষের পরামর্শে নিজের কর্তৃত্ব বলে কোনো সিদ্ধান্ত জাতির ঘাড়ে জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলেও তাতে গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। লেখার শুরুতেই কথাগুলো এই কারণেই বলতে বাধ্য হলাম যে-
গত ৩১ আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে হঠাৎ করেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত সরকারি কলেজগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার নির্দেশনা দেন। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সেশনজট কমাতেই এ উদ্যোগের কথা জানান তিনি।
কাল বিলম্ব না করে প্রধানমন্ত্রীর এই নিদের্শনা তড়িত বাস্তবায়নে সরকারি কলেজগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ন্যস্ত করার লক্ষে ৭ ডিসেম্বর ৩৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগণকে নিয়ে সভা করে ৮ সদস্যের কমিটি গঠন করে ইউজিসি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সেশনজট ও শিক্ষার গুণগতমান উন্নীতকল্পে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে গঠিত কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। গঠিত কমিটি হয়তো এরই মধ্যে প্রতিবেদনটি প্রস্তুতও করে ফেলেছে। সংশ্লিষ্টরা হয়তো স্বল্প সময়ের ব্যবধানেই তা বাস্তবায়ন করে ফেলার চেষ্টাও করবেন।
কিন্তু আমাদের কথা হলো- ‘শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড’ এমন একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো ধরনের গবেষণা ও ডায়ালগ না করেই তড়িঘড়ি করে প্রশাসনিকভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তা বাস্তবায়ন করা কী জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে? না উচ্চ শিক্ষার চলমান এই সঙ্কটকে আরো জটিল করে তুলবে! এ নিয়ে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ-উতকন্ঠাও লক্ষ্য করা গেছে।
খোঁজ নিয়ে যতদূর জানতে পেরেছি, তাতে বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১৫৪টি স্নাতক, স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তর কলেজ ও অন্যান্য বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (৩৮২টি) এর সঙ্গে অধিভুক্ত রয়েছে। এরমধ্যে সরকারি ২৭৫টি এবং বেসরকারি ১৮৭৯টি। সবমিলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১ লক্ষাধিক। এর মধ্যে সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২,৯০,৯০৩ এবং বেসরকারি কলেজে ৮,১৬,৬৯৯। শিক্ষক সংখ্যা ৬০ হাজারের মতো। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৪ ধরনের ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এজন্য বছরে প্রায় ১০০ প্রকার পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
এদিক থেকে উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত দেশের প্রায় ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভূক্ত। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত শুধু স্নাতক (পাস) পরীক্ষায় ৪ লাখ ৭৬ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। গত ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষায় ২,৬১,৪৪৬টি আসনের বিপরীতে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ১৭ হাজার ৪ শ’ ৫৭ জন। ফলে যেভাবেই চিন্তা করা হোক না কেন; কাজটি যে বাস্তবায়ন করা ততটা সহজ হবে না তা সহজেই অনুমেয়।
এরই মধ্যে অবশ্য সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছেড়ে দেওয়া না দেওয়ার বিষয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। খোদ সরকার সমর্থক বলে পরিচিত শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবীগণ এর পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি তুলে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ইউজিসি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিতে নারাজ। আবার কর্তৃত্ব বলে ইউজিসি চায় পাবিলক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকুক সরকারি কলেজগুলো। এনিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে ইউজিসির। তারাও নিজেদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি ও আর্থিক স্বার্থের কথা বিবেচনায় কলেজগুলোর দায়িত্ব নিতে রাজি। তাদের দাবি এতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট কমবে এবং শিক্ষার গুণগত মান উন্নত হবে।
ইউজিসি
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, অতীতে সরকারি কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। এতে একদিকে কলেজগুলোতে সেশনজট আরো বেড়েছে, অন্যদিকে শিক্ষার মানও কমতে শুরু করেছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে- অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও সেশনজট রয়েছে। তারা নিজেদের সমস্যাই সমাধান করতে পারছে না। সেখানে কিভাবে তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেবে! এতে সেশনজট না কমে আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারকে আরো একবার ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদ।
এদিকে গত (২৭ ডিসেম্বর) শনিবার আয়োজিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিনেট অধিবেশনে উপস্থিত সদস্যরা অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারি কলেজগুলো কেড়ে নেওয়ার পাঁয়তারা চলছে।
এ অধিবেশনে সিনেটের ৬৯ জন সদস্যের মধ্যে ৩৭ ও বেশ কয়েকজন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এতে তারা আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি কলেজগুলো কেড়ে না নিয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দেন।
সিনেট অধিবেশনে সদস্যরা উদ্বেগ জানিয়ে আরো বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের সেশনজট ও সমস্যা নিয়েই বর্তমানে ব্যাকুল। সেখানে ভাগাভাগি করে সরকারি কলেজের ২-৩ লাখ করে শিক্ষার্থী নেওয়ার পর পরিস্থিতি তাদের জন্য আরো জটিল আকার ধারণ করবে। ’
এসময় তারা একশ্রেণীর শিক্ষাবিদের সমালোচনা করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে অসৎ উদ্দেশে তারা এই পরামর্শ দিয়েছে। এর ফলে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বাণিজ্যের দরজা উম্মুক্ত হবে। সরকারি-বেসরকারি কলেজের মধ্যে নতুন করে বৈষম্য দেখা দেবে। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর উচ্চ শিক্ষার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। ’
বিশ্ববিদ্যালয়টির সিনেট সদস্যরা আরো বলছেন, কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে ছেড়ে দেওয়ার এই পদক্ষেপ কার্যকর করা হলে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। ২১ লাখ শিক্ষার্থীর জীবনে পুনরায় অনিশ্চয়তার ঘনঘটা দেখা দেবে। পাশাপাশি এসব কলেজের ১৫ হাজার শিক্ষকও বিষয়টি মেনে নেবেন না। যে বা যারা প্রধানমন্ত্রীকে এমন প্রস্তাবনা দিয়েছেন, তারা মূলত সরকারকে বিব্রত করতে চান। তাদের ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকার জন্যও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
অধিবেশনে সিনেটের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরাসহ মোট ২০দফা প্রস্তাব উত্থাপন করে। এ লক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও পিএসসি সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীরকে প্রধান করে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়াও সিনেট সদস্যদের প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট-সিন্ডিকেটে প্রস্তাব পাসের পর সরকারি কলেজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া, সেশনজট নিরসনের আঞ্চলিক কেন্দ্র ৬টি’সহ ১৯টি স্থাপন, প্রত্যেক কেন্দ্র একজন করে প্রো-ভিসি নিয়োগ, যততত্র অর্নাস ও মাস্টার্স কোর্স চালু না করা, বিদ্যামান ও ভবিষ্যতে অর্নাস ও মাস্টার্স চালু থাকার প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক, ক্লাস রুম সংখ্যা বৃদ্ধি, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও গবেষণাগার নিশ্চিত, প্রতি বছর একটি করে বিশেষ সিনেট অধিবেশন, তিন মাসের মধ্যে সব ধরনের পরীক্ষার ফল প্রকাশ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ফলের ভিত্তিতে স্নাতকের ভর্তি বা একটি অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা চালু, সরকারি কলেজের শিক্ষকের বদলি পদায়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদন, কলেজগুলোর শিক্ষার মান্নোয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, সব সেশনের জন্য একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন, শিক্ষার মান উন্নয়নে মনিটরিং কমিটি প্রণয়ন, শিক্ষার্থীদের জীবনের কথা বিবেচনায় হরতাল, ধর্মঘট কর্মসূচি না থাকার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে আরোপিত বিভিন্ন ফি হ্রাস, বেসরকারি কলেজের এমপিওভুক্তি ব্যবস্থা, প্রতিবছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ বরাদ্দ ইত্যাদি।
এর আগে ভিসির অভিভাষণে ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ সেশনজট নিরসন ও শিক্ষার মান উন্নয়নে ২৬ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘সেশনজট এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা। প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে তা শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘কেন্দ্রীভুত ও গতানুগতিক পরিচালন পদ্ধতির পরিবর্তে তথ্য-প্রযুক্তির অবলম্বনে সমাজের চাহিদা-উপযোগী, বিকেন্দ্রীকৃত ও সম্পূর্ণ সেশনজট মুক্ত একটি উন্নত আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলতে দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বিদ্যমান সেশনজট নিরসনের জন্য শিগগিরই ক্রাশ প্রোগ্রাম ঘোষণা করা হবে। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের থেকে কোনো সেশনজট থাকবে না এবং ক্রাশ প্রোগামের ফলে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হবে সম্পূর্ণ সেশনজট মুক্ত। ’
প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক দিনে পরোক্ষভাবে বিরোধীতা করে সংবাদ সম্মেলন এবং সরকারি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে সভা করে। অধ্যক্ষরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সহায়তার আশ্বাস দেন। তারা চান সরকারি কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকুক। এদিকে কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে- সরকারি কলেজগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের রাখার বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ভিসি আপত্তি জানিয়েছেন। যদিও তারা প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না।
শিক্ষাবিদদের বক্তব্য
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও পিএসসি সদস্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবীর বলেন, ‘সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে একটি গোষ্ঠীর ব্যাপক তৎপরতা রহস্যজনক। প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়েই একটি কমিটি করে গবেষণার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা উচিত। না হয় দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হবে দেশের বৃহত্তম এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। ’
শরীফ এনামুল কবীর আরো বলেন, ‘বর্তমানে ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্র একজন করে প্রো-ভিসি নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার কার্যত্রুমকে আরো গতিশীল করা যেতে পারে।
প্রয়োজনে যে পুরাতন ১৯টি জেলার আঞ্চলিক কেন্দ্র করার প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করে একজন প্রো-করে ভিসি নিয়োগ করা যেতে পারে।
১৯৯২ সাল থেকে একটি পদ্ধতি ডেভেলপ করেছে সেখানে হঠাৎ করে অন্য আরেকটি পদ্ধতি চালু হলে তা কতটা কার্যকর হবে আরো গবেষণার বিষয়। সুতারাং এটি নিয়ে যারা তাড়াহুড়া করছেন তাদের অসৎ উদ্দেশ্য আছে। ’
উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ বলেন, অনার্স কলেজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গেলে এবং বেসরকারি কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকলে একটা বৈষম্য সৃষ্টি হবে। এ বিষয়ে একটি সমন্বিত ও সুষ্ঠু পদক্ষেপ নিতে হবে। ’
ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) ভিসি অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ বলেন, ‘যদি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়, তাহলে সেটা সাধারণ মানুষ ও সরকারের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রজ্ঞাবান। তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেবেন না বলে বিশ্বাস করি। এই সিদ্ধান্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও ক্ষতির কারণ হবে। ’
শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন হোসেন বলেন, ‘সরকারি কলেজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাবনা একটি উদ্ভট চিন্তাধারা। প্রধানমন্ত্রীকে কেউ এমন ভুল বুঝিয়ে থাকতে পারেন। এমন সিদ্ধান্ত ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে নেই। প্রধানমন্ত্রীকে এটা অবহিত করতে হবে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করা দরকার। ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদুজামান বলেন, ‘যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এমন কথা বলছেন, তারা মূলত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে পৃষ্ঠপোষকতা করতে চাচ্ছেন। আমরা জেনেছি, ৩১ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শুরুর আগে একজন ব্যক্তি এই বিষয়টি তার (প্রধানমন্ত্রীর) নজরে নিয়েছেন। কিন্তু ওই শিক্ষাবিদ প্রকৃত চিত্র এবং পাশাপাশি সমাধানের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন নি। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী উদ্বিগ্ন হয়েছেন। ’
এ প্রসঙ্গে তিতুমীর কলেজের সহকারী অধ্যাপক আফরোজ বেগম বলেন, ‘আমাদের কলেজের ৫৫ হাজার শিক্ষার্থী, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে এই শিক্ষার্থীদের দায়ভার গ্রহণ করবে, নিজেরা যেখানে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হাবুডুবু খাচ্ছে?’
এ অবস্থায় সরকারি কলেজগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাখা হবে কি-না এ নিয়ে অনেকটাই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি এ ব্যাপারে অনড় অবস্থানে রয়েছে রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধানের নির্দেশনা বলে কথা।
এখানে উল্লেখ্য, একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত না হওয়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত তৎকালীন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কলেজগুলো পরিচালনায় জন্য ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা। ২২ বছর পরে আবারো সেই পুরনো পদ্ধতিতে হঠাৎ ফিরে গেলে বিপাকে পড়বে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তৈরি হতে পারে উচ্চশিক্ষায় বিশৃঙ্খলা ও প্রকট বৈষম্য। পাশাপাশি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে দীর্ঘ সেশনজট শুরু হতে পারে। ’ শিক্ষাবিদদের এমন আশঙ্কা একেবারেই অমূলক নয়।
উপরে উল্লেখিত বক্তব্য-বিতর্ক থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, খোদ সরকার সমর্থক শিক্ষাবিদরাই এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে একমত হতে পারছেন না। এক্ষেত্রে অন্যদের মতামতের বিষয়টি বাদই দিলাম। এখানে আরেকটু পরিস্কার করে বলা দরকার যে- যারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে সরকারি কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিতে উকালতি করছেন তাদের প্রায় সবাই সরকারি সুবিধাজনক পদে রয়েছেন। হয় তো তারা ইউজিসি, না হয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অথবা অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত। ফলে তারা কোনো মতেই সরকারের বিরাগভাজন হতে নারাজ।
এক্ষেত্রে ইউজিসির প্রস্তাবকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সহজে গিলে নেওয়ার পেছনেও তাদের নিজেদের কর্তৃত্বমূলক ও আর্থিক স্বার্থ জড়িত আছে।
আর এমন কিছুসংখ্যক প্রবীণ ব্যক্তিকে পত্রপত্রিকায় কলাম লিখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে স্বাগত জানাতে দেখেছি যারা মূলত: এটি কার্যকর হলে ব্যক্তিগত- গোষ্ঠীগতভাবে লাভবান হবেন।
রাগঢাক না করলে বলতেই পারি তারা ইতোমধ্যেই দলীয় প্রভাবে সরকারের কাছ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ ভাগিয়ে নিয়েছেন।
এক্ষেত্রে আমার মনে হয় প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদ স্যার আজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি না হয়ে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি হলে কিংবা সাধারণ শিক্ষক হলেও হয়তো তিনি এই প্রস্তাবকেই সমর্থন করতেন। কারণ রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান তথা নেত্রীর নির্দেশনা বলে কথা।
এত কিছুর পরও আমাদের বেশ কিছু সংখ্যক বিবেকবান ব্যক্তি তথা যারা প্রকৃত অর্থেই শিক্ষাবিদের ভূমিকায় রয়েছেন তারা দেশ-জাতির স্বার্থেই বাস্তব কথাগুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। তাদের মতামতের প্রতি রইলো আমার অগাত শ্রদ্ধা।
সব কিছুতেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিতর্ক থাকা বা হওয়া ভালো। কারণ এতে প্রকৃত ভালো বিষয়টি বেরিয়ে আসে। তবে বিতর্কে জড়ানোর মতো আমার সেই
যোগ্যতা কিংবা জ্ঞান নেই। তবে সরকারি কলেজগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে যে বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে সম্ভাব্য উত্তরণের বিষয়ে আমার কিছু মতামত নিম্নে তুলে ধরলাম, যদিও সচেতন পাঠক সমাজ বা দেশের শিক্ষাবিদ ও নীতিনির্ধারণের সঙ্গে জড়িত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ আমার সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন।
প্রথমত: বিশ্বের যে কোনো সমাজে সমস্যা দেখা দিলে তা নিয়ে গবেষণা হয় এবং তা সমাধানের পথ খুজেঁ বের করার চেষ্টা করা হয়। সেই আলোকে আমি মনে করি, ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণেই আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষায় সেশনজট ও গুণগতমানসহ নানাবিদ সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে নির্বাহী নির্দেশনা বলে নয়, প্রকৃত সমস্যা খুঁজে বের করে তা স্থায়ী সমাধানের লক্ষে একটি উচ্চমানের গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। ওই গবেষণায় যদি এ ধরনের সাজেশন আসে তবে তাই হবে। এতে তখন কারো কোনো প্রশ্ন থাকবে না। অন্যথায় নির্বাহী আদেশের বলে যদি এটি বাস্তবায়ন করা হয় তবে উচ্চশিক্ষায় বিশৃঙ্খলা আরো বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা একেবারে অমূলক নয়। তখন এর দায়ভার কে নেবে?
দ্বিতীয়ত: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেশনজট দ্রুত নিরসন ও শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে যে সব প্রস্তাবনা দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নের সুযোগ দিয়ে আরো
কয়েক বছর সময় দেওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে ব্যবস্থাপনার গবেষণার কাজটিও এগিয়ে যেতে পারে।
তৃতীয়ত: সবাই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে- আমরাও সামনে যাবো, পেছনে নয়। যেহেতু এর বিপক্ষে অনেক যুক্তি দাঁড় করানো হয়েছে। সেহেতু এই প্রক্রিয়ার বাইরে অন্য কোনো বিকল্প প্রক্রিয়ায় এই সমস্যার সমাধান করা যায় কী না তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। যেহেতু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরাই সঙ্কটে রয়েছে, সেহেতু এর বিকল্প কোনো প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হলে সবার কাছে সহজেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
চতুর্থত: আর প্রধানমন্ত্রীর এই দিক নির্দেশনার পেছনে বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা বিশেষ কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের হাত থাকার প্রতি যে প্রশ্ন উঠেছে এই বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রীকে বিবেচনায় নিয়ে আরেকবার ভেবে-চিন্তে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হওয়া দরকার। কারণ আমাদের সমাজে এরূপ বুদ্ধিদাতার অভাব নেই। প্রকৃত সমস্যা সমাধান এবং কাজের লোক খুবই কম।
পঞ্চমত: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসিদেরও বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। কারণ নিজেরাই যেখানে সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছেন। সেখানে আরো ২/৩ লাখ করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর চাপ নেওয়া কতটা মঙ্গলজনক হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। কারণ এ বিষয়ে মাত্র ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাকিদের এ বিষয়ে ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন।
ষষ্ঠত: নির্বাহী নির্দেশনা বলে যদি এটি এভাবেই করা হয়, তবে সরকারি-বেসরকারি সব কলেজগুলোকেই যেন একই প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা কাঠামোর মধ্যে রাখা হয়। অর্থাৎ জাতীয় বিশ্ববিদ্যারয়কে অন্য সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো করে দিয়ে সরকারি-বেসরকারি সব কলেজ এবং অন্য সব অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছেড়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে হাতেগোনা কয়েকটি ইউনিভার্সিটির অধীন কলেজগুলো ছেড়ে না দিয়ে সবকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজ নিজ এলাকার কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করতে হবে। অন্যথায় বৈষম্যের যে কথা উঠেছে তা বাস্তবেই ঘটবে। বৈষম্য প্রকট হলে তখন বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সংকটও প্রকট আকারে দেখা দিতে পারে।
এ কথা আজ কারো অস্বীকার করার উপায় নেই যে- আমাদের উচ্চ শিক্ষার ‘সংকট’ একটি জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে এই সংকট নিরসনে
কোনো ধরনের ছলচাতুরীপনা না করে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সব পক্ষের আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসা উচিত। আর এই সমস্যা সমাধানে সবাইকে নিজেদের স্বার্থের জায়গা কিংবা প্রতিহিংসার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। খালেদা জিয়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করছিলেন বলেই যে এ নিয়ম পাল্টাতে হবে কিংবা পাল্টানো যাবে না, এ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে জাতির স্বার্থের কথা বিবেচনায় নিয়ে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। তবেই এ বিষয়ে একটা ভালো সমাধানে আসা সম্ভব।
সর্বোপরি বলতে চাই- আজ থেকে ৫০ বছর আগে পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রেংকিং করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা সম্মানজনক অবস্থানে থাকত।
কিন্তু বর্তমান বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই। এতেই বোঝা যায় আমাদের উচ্চশিক্ষায় পচন রোগ কতটা জটিল আকার ধারণ করেছে। ফলে শুধু কলেজগুলোকে নিয়ে নয় আমাদের ভাবতে হবে সার্বিক উচ্চশিক্ষা নিয়ে।
একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে যে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে হবে, সে কথা কিন্তু বিশ্বখ্যাত শিক্ষাবিদেরা সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিটি ওয়ার্ল্ড ক্লাস ইউনিভার্সিটি কনফারেন্সেই মনে করিয়ে দিয়ে আসছেন।
তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান রাখবো- উচ্চশিক্ষার এই সংকট অন্য কোনো ছোটখাটো সমস্যার মতো নয়, এটা এখন জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে এ বিষয়ে তাড়াহুড়া না করে কিছুটা সময় নিয়ে হলেও এর একটা দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
এক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার সংকট ও উত্তরণ এবং ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি উচ্চমানের গবেষণা এবং শিক্ষাবিদদের নিয়ে সেমিনার ও সংলাপ করা যেতে পারে। সেই সঙ্গে বিশ্বে শিক্ষায় উন্নত দেশগুলোর উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থাপনার সিস্টেমগুলো খতিয়ে দেখাও যেতে পারে।
সবশেষে বলবো, আমরা যদি এই সংকট থেকে দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধানে পৌঁছতে না পারি তাহলে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।
লেখক: শিক্ষা ও সমাজবিষয়ক গবেষক।
ই-মেইল: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪