বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজের বাসায় ফিরে গেছেন। টানা তিন মাস রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থানের পর রোববার বাড়ি ফেরার পথে তিনি একটি দুর্নীতি মামলায় জামিন নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।
গত ৩ জানুয়ারি রাতে নিজ বাসা থেকে বেরিয়ে গুলশান-২ নম্বরের ৮৬ নম্বর সড়কে নিজের কার্যালয়ে গিয়ে তিনি সেখানেই থেকে যান। ৫ জানিয়ারি দলীয় কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়ে তিনি লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেন। ওই সময় হয়তো তার কার্যালয়ের সামনে পুলিশি ব্যারিকেড ছিলো।
সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, বিএনপির ডাকা ৫ জানুয়ারির সমাবেশে নাশকতার সম্ভাবনা ছিল, তাই তারা বাধ্য হয়েই এই কাজ করেছে। কিছু দিন পরই অবশ্য সব ধরনের ব্যারিকেড উঠিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া তার কার্যালয়েই থেকে যান। এবং লাগাতার অবরোধের পাশাপাশি দফায় দফায় হরতালের ডাক দিতে থাকেন।
এর মাঝে অনেক পানি গড়িয়েছে। অবরোধের নামে শতশত মানুষকে পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, গাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে; ক্ষতি করা হয়েছে দেশের অর্থনীতির। এরপরও খালেদা জিয়া দমে না গিয়ে একের পর এক অবরোধ দিতেই থাকেন ওই কার্যালয়ে বসে। কেউ তার সাক্ষাত পর্যন্ত পাচ্ছিলেন না।
এর মাঝে দেশের মানুষ যখন বিরক্ত হয়ে এই হরতাল অবরোধ উপেক্ষা করে বাইরে বেরিয়ে এলো, অবরোধের মাঝেও যখন দেশ স্বাভাবিক ভাবেই চলা শুরু করলো। তখন খালেদা জিয়ে বুঝতে পারলেন কার্যালয়ে থেকে আর লাভ নেই।
তার হয়তো ধারণা ছিল, কার্যালয়ে তিনি বন্দি হয়ে আছেন; আটকে পড়ে আছেন, এই নাটক সাজিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটবেন। নিজের ছেলের মৃত্যুর পরও তিনি ওই জায়গা থেকে বের হননি; বের হননি একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবসেও। দেশের স্বাধীনতা দিবসে যিনি না বের হয়ে কেবল নিজের ও নিজ দলের বিজয় দেখতে চেয়েছিলেন কার্যালয়ে বসে, তিনি শেষে যখন বুঝতে পারলেন নিজের বিজয় হবে না, জনগণ তাকে ও তার দলকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তখন তিনি সেখান থেকে বের হয়ে রোববার নিজ বাসায় ফেরত গেলেন আদালত হয়ে। কই কোথাও তো তিনি কোনো বাধার সম্মুখীন হলেন না!
দেশ নিয়ে নিয়ে যারা নাটক নাটক করে তাদের পরিণতি কখনো ভালো হয় না, মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করবেই। খালেদা জিয়ার ডাকা অবরোধ, হরতাল প্রত্যাখ্যান করে দেশে মানুষ সেটি এর মাঝেই বুঝিয়ে দিয়েছে।
আমিনুল: ইসলাম, শিক্ষক ও গবেষক, [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১৫
জেডএম