‘আচ্ছা, এখানে কি কোথাও টুরিস্ট স্পটগুলোর ছবি একসঙ্গে কিংবা শুধু কক্সবাজারের ছবিসহ কোনো স্মরণিকা নেই? যেমন টি-শার্ট, প্যান্ট কিংবা ক্যাপ এরকম কোনো কিছু? আমার বাচ্চাদের জন্য নিতে চাই। ’ অনেক ভেবেচিন্তে উত্তরটা দিলাম, ‘আছে, কিন্তু খুব একটা বেশি নেই, হুটহাট পাওয়া যায়।
কথা হচ্ছিল সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত ডারিন টাকার-এর সাথে, কাজ করেন সেখানকার দ্য ন্যাশনাল রোডস্ অ্যান্ড মোটরিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে। খুব আমুদে, বন্ধুপ্রিয় এই মানুষটির সঙ্গে দেখা কক্সবাজারে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সৈকত পরিচ্ছন্নতা দিবসে। ব্যস্ততায় ভরা এই জীবনে সুযোগ পেলেই বিশেষ বিশেষ দিন ও মৌসুমে ডারিন টাকারের মতো লাখ লাখ পর্যটক চলে আসেন এই বিশাল সমুদ্রের কাছে; নির্মল বাতাসে প্রাণভরে একটু নিঃশ্বাস নিতে, প্রকৃতিকে আপন করে পেতে। কিন্তু বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত কক্সবাজারে পর্যটকদের যেসব সুযোগ-সুবিধা দরকার, সেসবের অধিকাংশই নেই।
কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মূল আকর্ষণ এই মোহনীয় সমুদ্র সৈকত। পর্যটকরা খাবার-দাবার, কেনাকাটা, রাতের শহরে থাকা কিংবা ঘোরার জন্য যখন আসেন, যদি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ময়লা, আবর্জনা নজরে পড়ে তখনই তো সব আনন্দ ফিকে হয়ে যায়। নিষেধাজ্ঞার পরও দেদার চলে এই সৈকতে ময়লা, আবর্জনা তৈরির সুতিকাগার বিক্রি যেমন—ঝাল মুড়ি, বাদাম, চা-কফির এককালীন পাত্র ইত্যাদি। এ ছাড়া ঘোড়া ব্যবসায়ী, ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালা, গরু-কুকুরের বিচরণ, কীটকট ব্যবসায়ী ও ভাড়াটে আলোকচিত্রীদের ঔদ্ধত্য আচরণ সৈকতের শান্তি নষ্ট করছে।
এসব বিরক্তিকর পরিবেশ থেকে পর্যটকদের স্বস্তি দেওয়ার এবং এই সৈকতে বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার কাজ সবার—সরকার, জনগণ ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের। আশার কথা হচ্ছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন সমুদ্রতীর ও জলপথ থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারে বাংলাদেশে বেশ কয়েক বছর ধরেই সারাবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সৈকত পরিচ্ছন্নতা দিবস পালিত হচ্ছে। ওইদিন অসংখ্য মানুষ অংশ নিয়ে যেসব কারণে পরিবেশ দূষণ ঘটছে তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে নেমে পড়েন।
বাংলাদেশ সময় : ১১৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
জেএইচ/টিকে