ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

স্বাধীনতার সুখ: নিভৃত পল্লীতে আলো, নতুন বই ও অন্যান্য

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৬
স্বাধীনতার সুখ: নিভৃত পল্লীতে আলো, নতুন বই ও অন্যান্য ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অমিত তেজ আর অনাবিল আশা নিয়ে মুক্তিকামী-জনযোদ্ধারা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একাত্তরে এ ভূখণ্ডকে স্বাধীন করলেও, তার প্রকৃত স্বাদ দেশের মানুষ পাচ্ছে দীর্ঘ সময় পর। স্বাভাবিকভাবেই যে প্রশ্নটি উঠে এবং বারংবার উত্থাপিত হচ্ছে, তা হলো কেন এতটা বিলম্বিত হল- লোহা বর্ণের মানুষগুলোর স্বাধীনতার স্বাদ পেতে।

এমনটিতো হওয়ার কথা ছিলনা।

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর তর্জনীর হেলনীতে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হানির মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হল তার সুফল পেতে কেন ৪৫ বছর লাগবে? একটি জাতি এবং রাষ্ট্র পুনর্গঠনে তা অনেক সময়। কেন এত প্রলম্বিত হল সে প্রশ্নের জবাব কারোরই অজানা নয়।

স্বাধীনতার অব্যবহিত পরপরই রাষ্ট্রের জনককে জীবন দিতে হল পরাজিত শক্তির হাতে। দীর্ঘ সময় স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ছিল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে। দেশের জনগণ স্বাধীনতার স্বাদ পাবে কীভাবে। যারা পরাজিতদের দোসর, স্বাধীনতাই যারা চায়নি তাদের কাছে স্বাধীনতার চেতনা আর মুক্তির আনন্দ প্রত্যাশা করা অরণ্যে রোদনের নামান্তর।

স্বাধীনতার কিছু কাল পরই দেশের জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও অর্জনকে ধ্বংস করে দেয় স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী চক্র। পঁচাত্তরের আগস্টের কালরাতে জাতির পিতার তহ্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেই পুরোনো পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িক অপশাসনেরই পুনরাগমন ঘটে।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে স্বাধীনতার চেতনাকে ধুলিস্যাত করেছিলেন। গণতন্ত্রকে পর্যুদস্ত করেছেন। হত্যা ক্যু’র মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছেন। ভোটের নামে তামাশা করে জিয়াউর রহমান হ্যাঁ-না ভোট করেছেন। মানুষের ভোটাধিকার শুধু নয়; কোন মৌলিক অধিকারই ছিলনা। সঙ্গীনের খোঁচায় একাত্তরের সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়; ক্ষমতায় এসে স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। কারাবন্দি ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধীকে মুক্তি দেন। স্বাধীনতার চেতনা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য নষ্ট করে একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের মন্ত্রিসভার সদস্য বানান। স্বাধীনতার পর যারা দেশ থেকে পলাতক ছিলেন, যাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল, জিয়াউর রহমান তাদের নাগরিকত্ব দিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও যখন রাজনীতিতে আসেন তখন তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রী বানিয়েছেন। ক্ষমতার জন্য এরশাদও কম করেননি। তিনিও বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনিকে এমপি বানিয়েছেন। তারা স্বাধীনতার চেতনাকে ধুলায় মাড়িয়ে দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করেন। দেশের জনগণ স্বাধীনতা-গণতন্ত্র-সরকার এসব ভুলতেই বসেছিল। তারা ভাবত, সরকার মানেই লুট-পাট আর দখলদারি।

একের পর এক সামরিকতন্ত্রের চক্রের কবলে পড়তে থাকে দেশ। চলতে থাকে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ। পঁচাত্তরে বাংলার আকাশে যে কালো মেঘ আসে তা আস্তে আস্তে কাটতে শুরু হয় ১৯৮১ সালে। বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বদেশে আসার মধ্য দিয়ে। গড়ে তোলেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। ভোটের আন্দোলন। গণতন্ত্রের প্রকৃত সুফল আসে বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত দিয়েই। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সাথে সংঘাত সেই যে পঁচাত্তর পরবর্তীকাল থেকে শুরু হয়েছে, আজও তার বিরাম ঘটেনি।

সেই রকম পরিস্থিতিতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করে। মন্দার কারণে সারাবিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছিল সেই অবস্থায় আওয়ামী লীগের যাত্রা শুরু। এই সময়ে শুধু সরকারিভাবেই পাঁচ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ঘরে ঘরে পৌঁছেছে বিদ্যুতের আলো।
দেশে এখনও চলছে গণতন্ত্রকে সংহত করার সংগ্রাম। সর্বশেষ সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠান করে পুনরায় গণতন্ত্রকে সুসংহত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্বাচন না হলে দেশের গণতন্ত্র-উন্নয়ন-সমৃদ্ধি আবারো হুমকির মুখে পড়ত। ইতিহাস বিকৃত করে এক সময় বিকাশমান বাঙালি জাতিকে যেভাবে পথভ্রষ্ট করা হয়েছিলো। আবারো সে ধারায় চলত দেশ। দেশ এখন মুক্তিযুদ্ধের ধারায়। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে স্বাধীনতার চেতনা। ফিরে এসেছে মূলমন্ত্র একাত্তরের সংবিধান।

স্বাধীনতার সুফল ও মূল্যবোধ এ জাতির জীবনে যেভাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া উচিত ছিলো তা এর আগের সরকারগুলো সম্পন্ন করার চেষ্টা করেনি। স্বৈরশাসকের হাতে জন্ম নেয়া বিএনপি বরাবরই স্বাধীনতার মূলে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে মহান স্বাধীনতাকেই কটাক্ষ করেছে বিভিন্ন সময়ে। কখনো ঘোষণা নিয়ে, কখনো শহীদদের সংখ্যা নিয়ে। সর্বশেষ দলটির শীর্ষ পর্যায় থেকেও স্বাধীনতার যুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা বিতর্ক এসেছে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মেধা-বিচক্ষণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দেশের মানুষ তা প্রত্যক্ষ করেছে। সমাজের ঘুনেধরা ও স্বাধীনতাবিরোধী এ অংশটিকে সমূলে বিনাশ না করতে পারলে দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পাবেনা।

জনগণকে স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে হলে আগে সেই অংশটিকে সব জায়গা থেকে ধিক্কার দিয়ে বিদায় করতে হবে। সামাজিকভাবে তাদের আরো কোণঠাসা করতে হবে। সমাজচ্যুত করতে হবে। সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সমাজ পুন:নির্মাণ করতে হবে।

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর জাতির জনক যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, তার কন্যার হাতে এসে তা পরিপূর্ণতা পাচ্ছে। স্বাধীনতার প্রভাব হিসেবে এ জাতির জীবনে ইতিবাচক অনেক পরিবর্তনের যোগ ঘটেছে। অর্থনৈতিক সূচকের সব ক্ষেত্রেই আমরা পাকিস্তান থেকে এগিয়ে। এটাই প্রমাণ করে আমরা স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছি। এককালে আমরা সাত কোটি মানুষের মুখের অন্ন যোগাতে সক্ষম হইনি। কিন্তু আজ আমরা ষোল কোটি দেশবাসীর জন্যে প্রয়োজনীয় অন্ন-সংস্থান করতে নিজেরাই সক্ষম। আজ আমরা বিভিন্ন খাদ্য পণ্য রপ্তানি করছি। আমাদের পোশাক আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত। তৈরি পোশাক বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছি। গড়ে উঠেছে আমাদের নিজস্ব ঔষধ শিল্প। কমেছে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার। বেড়েছে গড় আয়ু। প্রধানমন্ত্রী নিজেও ঘোষণা দিয়েছেন দেশেই তিনি চিকিৎসা করাবেন। শিক্ষাখাতেও আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। শিক্ষাকাঠামো পরিবর্তন হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতি হয়েছে। আজ স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে। কৃষক-দিনমজুরের ছেলেও স্কুল ব্যাগ কাঁধে শিক্ষা নিকেতনে যাচ্ছে। এ সবই স্বাধীনতার সুফল, যা বঙ্গবন্ধু কন্যার অবদান।

স্বাধীনতার সুফল হচ্ছে- বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই। ৩৩ কোটিরও বেশি বই বিনামূল্যে বিতরণ, যা বিশ্বের আর কোথাও নাই। স্বাধীনতার সুফল কবি শামসুর রাহমানের- পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল-কথার মতেই আজ সবার প্রাণ ভরে জয় বাংলা বলতে পারা। লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের রেকর্ড কিংবা মানব পতাকা করে বিশ্ব জয় করা। যেখানে একটা সময় স্বাধীন বাংলাদেশেই জয় বাংলা বলা যেতনা। স্বাধীনতার সুফল আজ-ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি- সারের জন্য কাউকে জীবন দিতে হয়না। কৃষক আজ বিনামূল্যে ব্যাংক একাউন্ট ও জ্বালানি পাচ্ছে। ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে। বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে তাই আজ স্বাধীনতার হাসি। শামসুর রাহমান যে স্বাধীনতা খুঁজেছিলেন- রোদেলা দুপুরে মধ্য পুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতারের মাঝে- আজ তথ্য প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহে শেখ হাসিনার কালজয়ী সৃষ্টি ডিজিটাল বাংলাদেশ। বিশ্ব আজ বাঙালি তরুণ-যুবার হাতের মুঠোয়। ওয়েব দুনিয়ায় হাবুডুবু খেয়ে পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত খুঁজতে খুঁজতে যেন মহাবিশ্বে হারিযে যায় এ যুগের তরুণ প্রজন্ম। নারী শিক্ষা ও নারী-অধিকার বাস্তবায়নে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জ্বালানি শক্তিতেও দেশের অগ্রগতি ঘটেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। আজ দেশের নিভৃত পল্লীতে বিদ্যুতের আলো। আজকে আমাদের বিদ্যুত উৎপাদনের সক্ষমতা ১১ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট। অতীতের অন্ধকার পেরিয়ে আলোর দিশারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আলোর পথে যাচ্ছি।

স্বাধীনতার সুফল আমাদের শক্তিশালী একটি ক্রিকেট দল- যারা ব্যাটে-বলের লড়াইতেও পাকিন্তানকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে। ১৬ কোটি বাঙালির স্বাধীনতার সুখ ধরা দেয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিজয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার আনন্দ অশ্রু বিসর্জনে। স্বাধীনতার পূর্ণ চেতনা ফিরিয়ে আনার কাজও চলছে। বিখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও দার্শনিক হেনরী ডব্লিউ নেভিনসন বলেছেন, স্বাধীনতার জন্য আমাদের নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়। স্বাধীনতাকে প্রতিদিন নতুন করে  জয় করে নিতে হয়। স্বাধীনতার যুদ্ধ কখনও শেষ হয় না, কেননা তা হলো এক নিরন্তর সংগ্রাম। তাই স্বাধীনতা যুদ্ধ তথা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের সত্যিকার মুক্তির সংগ্রাম। এখনো শেষ হয়নি। এ হলো এক আজন্ম সংগ্রাম।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র কাঠামো সব হুমকি ও ষড়যন্ত্রের মুখে এখনো টিকে আছে এবং টিকে থাকার জন্য এখনো লড়াই চালাতে হচ্ছে। বাংলাদেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের বিচার ও দণ্ড দেওয়া সম্ভবপর হয়েছে। হেফাজতি অভ্যুত্থান দমন করা হয়েছে।

একদিকে বিএনপি-জামায়াতের পৌনঃপুনিক সন্ত্রাসের রাজনীতি এবং অন্যদিকে পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ট সুধীসমাজ, তাদের নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম, একজন নোবেলজয়ীর অবিরাম চেষ্টার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা এ সংগ্রামে জয়ী হয়েছেন। তবে এ ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। আমাদের সম্মিলিত লড়াইও চালিয়ে যেতে হবে। শেখ হাসিনা এত বাধাবিপত্তির মধ্যেও দেশকে উন্নয়নের এমন একটি লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে গেছেন, যে সমালোচকরাও স্বীকার করছেন, বাংলাদেশের এমন উন্নয়ন গত ৪০ বছরে কখনো হয়নি। এই কৃতিত্ব হাসিনার, স্বাধীনতার রূপকার আওয়ামী লীগের। এই শক্তি ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশ এত দিনে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো রক্তাক্ত বধ্যভূমিতে পরিণত হতো।

স্বাধীনতার মূলমন্ত্র সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ যেটুকু খর্ব হয়েছে বলে অনেকের দাবি- তার পেছনে বড় কারণ দেশের সামরিক সরকারগুলো। খালেদা জিয়াও কম যাননি। জিয়াউর রহমান সংবিধানের মূল জায়গাগুলো পরিবর্তন করলেন। খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে জোট করলেন। তাদের গাড়িতে লাল-সবুজের পতাকা তুলে দিলেন। এখন একাত্তরের মূলের দিকে আমরা যাত্রা শুরু করেছি। এককাত্তরের সংবিধান পুনরায় স্থাপিত হয়েছে। শত বাঁধা ও ষড়যন্ত্রের মুখেও শেখ হাসিনা সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমসহ সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে সেই নব্বইয়ের গোড়ার দিকে বাংলাদেশের সামরিক ও স্বৈরাচারী শাসকরা দেশটিকে গ্লোবাল ক্যাপিটালিজমের পচনশীল লেজুড়ের সঙ্গে বেঁধে ফেলায় তার শিকল থেকে বেরিয়ে আসা কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষেও এখন কঠিন। বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী শোষক শ্রেণি গড়ে উঠেছে। তারা দেশের বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়ার একটি বড় অংশকে কিনে ফেলেছে। তাদের প্রচারশক্তিও অসীম।

তারাও বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বায়নের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি দিয়েও রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সূচকে ভাল অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশ মধ্যম আয়ের পথে পা দিয়েছে। জাতির জনকের নেতৃত্বে দীর্ঘকালের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন আবার স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরেই সেই স্বাধীনতার ফসলের নিষ্ঠুর লুণ্ঠন- তারপরও বঙ্গবন্ধু কন্যার সাহসী নেতৃত্বের কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মুখেও স্বাধীনতার চেতনা টিকে আছে। সেই স্বাধীনতার সুফলও পাচ্ছে জনগণ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা আজ তার কন্যার কারণে ঋদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য এভাবেই স্বাধীনতার চেতনা ও এর সুফল প্রত্যেকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া। একটি পরিশুদ্ধ, ইতিহাস অন্বেষী প্রজন্ম গঠন করা যায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সত্যের ওপর শক্তিশালী বুক নিয়ে দাঁড়াবে।

জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক: সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৫
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।