৬ জুন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি বাতিলের প্রতিবাদে বিএনপি আহূত হরতালে বিএনপি ও চারদলীয় ঐক্যজোট এমপিদের প্রতিবাদ প্রদর্শনকালে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও পাঁচবারের নির্বাচিত এমপি জয়নাল আবদীন ফারুকের অর্ধনগ্ন রক্তাক্ত দেহ ও পুলিশের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণই আজকের প্রতিপাদ্য।
সারাদেশের মানুষ দেখতে পেলো ছাত্রলীগের সাবেক ক্যাডার, পুলিশের বর্তমান এসি বিপ্লব সরকার ও এডিসি হারুনের আচরণ হার মানিয়েছে পঁচাত্তরের বাকশালের রক্ষীবাহিনীকে।
চিফ হুইপ ফারুককে পিটিয়ে রক্তাক্ত ও অর্ধনগ্ন করার পর এ দেশের দুই পুলিশ অফিসার সদর্পে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে সাক্ষাৎকার দিয়ে তাদের দম্ভ প্রকাশ করে বললেন, যা করেছেন তা আইন অনুযায়ীই করেছেন! চিফ হুইপকে রক্তাক্ত করা, পুলিশের দম্ভোক্তি সবই ঠিক আছে বাকশালী আইনে। কিন্তু সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী ও দেশের একজন নাগরিক হিসেবে তাজ্জব না হয়ে পারি না যখন দেখি একজন সংসদ সদস্যকে রাস্তায় প্রকাশ্যে পুলিশ কলার চেপে ঘুষির পর ঘুষি মারতে, যখন দেখি পুলিশ মহান সংসদের রাস্তায় একজন সংসদ সদস্যকে আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত করতে। তখন কি মনে প্রশ্ন জাগে না, এ দেশে গণতন্ত্র আছে কিনা। ফারুককে যখন চ্যাংদোলা করে পুলিশ নিয়ে যাচ্ছিল তখন মনে হচ্ছিল পুলিশ ফারুককে নয় বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে চ্যাংদোলা করে নির্বাসনে নিয়ে যাচ্ছে। এ যেন বাংলাদেশের শবযাত্রা।
তারপরও এ দেশের মন্ত্রীরা বলেন সবই হয়েছে আইনানুযায়ী। সত্যিই সেলুকাস! বিচিত্র এ দেশ।
দ্বিতীয়ত সব টিভি চ্যানেলে দেখা গেল ফারুককে নির্যাতনের পরে এডিসি হারুন ও এসি বিপ্লব সদর্পে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকার দিলেন ও জানিয়ে দিলেন তারা যা করেছেন তা আইনসিদ্ধ। কিন্তু ব্যত্যয় ঘটল সন্ধ্যায়। দুই বীরপুরুষ কাপুরুষে পরিণত হলেন দিনের শেষেই। দেখানো হলো, এডিসি হারুন ও এসি বিপ্লব নাকি আহত হয়েছেন। তাদের দেখতে হাসপাতালে গেলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সাংবাদিকদের জানালেন চিফ হুইপের আক্রমণে দুই কাপুরুষ আহত হয়েছেন। কী নির্লজ্জ মিথ্যাচার। দেশবাসী তো দেখলো ফারুককে নির্যাতনের পরে দুই কাপুরুষ সাহসী সাক্ষাৎকার দিচ্ছে। তখন তো তাদের আহত দেখা যায়নি। তবে সন্ধ্যায় আহত হলেন কী করে?
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই দুই গুণধর পুলিশই আমেরিকার নাগরিক। তারা ইচ্ছা করেই সরকারের স্বার্থে বাংলাদেশ পুলিশের নাম ভাঙিয়ে গুন্ডামি করছে এবং পুলিশ বাহিনীর সুনাম নষ্ট করছে। এ দেশের মানুষের গণতন্ত্রের আকাক্সক্ষা অনেক দিনের। সেই বর্বর পাকিস্তান থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত গণতন্ত্র রক্ষায় আমাদের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল দীর্ঘ ইতিহাস ও করুণ ত্যাগের কাহিনী। তাই আওয়ামী মহাজোট তথা নব্য বাকশালীদের মনে রাখা দরকার কোনো অত্যাচারীই স্থায়ী হতে পারে নাই, তারাও পারবে না।
লেখক : সাধারণ সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল ও সাবেক প্যানেল মেয়র, নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা।
বাংলাদেশ সময় ১৮৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০১১