১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমানের আমলে সেই রাজাকার স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছিল। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ এর পরিবারের সদস্যদের আজ কেমন অনুভুতি হতে পারে? একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে শর্ষিনার পীরের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তির সমালোচনা করে প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদ পত্রিকাতে একটি নিবন্ধ পাঠিয়েছিলেন।
এখানেই শেষ নয়, এই শর্ষিনার পীরের কথা বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনীতেও আছে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের সময়কার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, “কয়েকটি সভায় বক্তৃতা করে বুঝতে পারলাম, ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করবেন। … জামান সাহেব ও মুসলিম লীগ যখন দেখতে পারলেন তাদের অবস্থা ভালো নয়, তখন এক দাবার ঘুঁটি চাললেন। অনেক বড় বড় আলেম, পীর ও মওলানা সাহেবদের হাজির করলেন। … ‘আমাকে ভোট দিলে ইসলাম থাকবে না, ধর্ম শেষ হয়ে যাবে। ’ শর্ষীনার পীর সাহেব, বরগুনার পীর সাহেব, শিবপুরের পীর সাহেব, রহমতপুরের শাহ সাহেব সকলেই আমার বিরুদ্ধে যত রকম ফতোয়া দেওয়া যায় তা দিতে কৃপণতা করলেন না। ”
২০১৭ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তদের নামের তালিকায় ‘শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ’ এর নামটি দেখে যেমন ভালো লাগছে, আবার খারাপও লাগছে, খুউব। রত্নগর্ভা প্রয়াত আয়শা ফয়েজ, যিনি বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য প্রথম মামলা করেছিলেন। যদিও তখন তাঁর মামলা কেউই নিতে চায়নি। হুমায়ূন আহমেদ তাঁর মায়ের সেই মামলা করার প্রচেষ্টা দেখে ‘জলিল সাহেবের পিটিশন’ নামক একটি অসাধারণ গল্প লিখেছেন। হুমায়ূন আহমেদ যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তিনি কিভাবে তার অনুভূতি ব্যক্ত করতেন? জাফর ইকবাল স্যার? তারা কি তাদের পিতার পক্ষে এই স্বাধীনতা পুরস্কার গ্রহণ করবেন?
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
জেডএম/