মুক্তিযোদ্ধা-সুরকার লাকী আখন্দের দোসর ছিলেন অকাল প্রয়াত শিল্পী ও ভাই হ্যাপী আখন্দ। হ্যাপীর মৃত্যুতে একাই গিটার হাতে বছরের পর বছর সুর তুলেছেন লাকী।
উচ্চনাদ ও যন্ত্রের ব্যবহারের যুগে কণ্ঠের মাধুর্য ও গায়কী দিয়ে তিনি তার বৈশিষ্ট্যকে অটুট রাখেন। সে সময় বিভিন্ন ব্যান্ড নিয়ে ফিরোজ সাঁই, ফকির আলমগীর, ফেরদৌস ওয়াহিদরা সুরের উন্মাতাল ইন্দ্রজাল তৈরি করেন। পরে এই ঘরানায় তপন চৌধুরী, শাফিন, হাসান, মকসুদ, জেমস প্রমুখ শিল্পীর আবির্ভাব ঘটে।
সবার চেয়ে আলাদা থেকে মোহময় সুরের বিস্তার ঘটান লাকী আকন্দ। একটা নস্টালজিক, হারানো সময় ও স্মৃতি তার গানে প্রাধান্য পায়। সুরের বিষণ্ন ঝরনাধারার মতো তার গানের কথায় বেদনার টুপটাপ বৃষ্টির শব্দ শোনা যায়। খুবই আত্মমুখী, নিভৃত ও একান্ত উচ্চারণ লাকী আখন্দের গানগুলোকে উচ্চকণ্ঠী সংগীত-ধারা থেকে বিশিষ্ট করে রাখে।
অকালে নেশার নীল আঘাতে হারিয়ে যাওয়া ভাই হ্যাপী আখন্দের একটি ছায়া সব সময়ই তার সংগীত প্রচেষ্টায় প্রভাব বিস্তার করে রাখে। তারুণ্যের বেদনাময় আর্তিতে তিনি আধুনিক আঙিকে হৃদয়জ উচ্চারণে স্পষ্ট করতে থাকেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পরম্পরায়। বৈশাখের এক সন্ধ্যায় নিজের গানে খোঁজা সন্ধ্যার মতোই তিনি হারিয়ে গেছেন। একটি স্বর্ণালী রাতে নীল মণিহার নিয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন বাংলা সংগীতের সংখ্যাহীন শ্রোতার স্মৃতি ও সত্ত্বায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এইচএ/