২০১১ সালের এই দিনে মিরসরাই স্টেডিয়াম থেকে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবল ম্যাচ শেষে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষার্থীবাহী পিকআপভ্যানটি খাদে পড়ে মারা যায় শিক্ষার্থীসহ ৪৫ জন।
তাদের স্মৃতির উদ্দেশে নির্মাণ করা স্মৃতিস্তম্ভ ‘অন্তিম’ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে যেন তাদের কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, আর সাবধান করছে মানুষকে।
দুর্ঘটনা পরবর্তী দীর্ঘ ৬ বছর পার হলেও প্রিয়জন হারানো পরিবার ও নিহতদের সহপাঠীসহ আবু তোরাব উচ্চ বিদ্যালয়, মায়ানী উচ্চ বিদ্যালয়, আবু তোরাব কলেজ, আবু তোরাব প্রাথমিক বিদ্যালয়, মঘাদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সে দিনের সে ভয়াবহ স্মৃতি এখনো তাড়া করে বেড়ায়। দুর্ঘটনার জন্ম দেওয়া সে মৃত্যুকূপ (বড়তাকিয়া-আবু তোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় সড়কের পার্শ্ববর্তী খাদ) ভরাট করে নিহতদের স্মরণে নির্মাণ করা দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিস্তম্ভ ‘অন্তিম’ বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর কথা।
১১ জুলাই দিনটি অনেকের কাছে নিছক একটি সাধারণ দিন হলেও কারো জন্য চরম বেদনার। ক'জোড়া চোখের নিরন্তর হাহাকার। সময়ের পদধ্বনিতে বারংবার বেজে যায় ব্যথাতুর বাবাদের নোনাজলের বিউগল। বেদানার্ত মায়েদের মুহ্যমান বোবা চিৎকার।
এতো ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। কোনো মা কি ভুলতে পারে সন্তান হারানোর যন্ত্রণা??? কোনো বাবাও যেমন পারবে না ভুলতে ছেলের লাশ বয়ে নিয়ে যাওয়ার করুণ স্মৃতি।
কেউ কেউ আজো সন্ধ্যায় ছেলের পড়ার টেবিল দেখে। ফাঁকা থাকে টেবিল। মায়ের ঝাপসা চোখে বারবার ভেসে আসে ছোট ছোট অবয়বগুলো।
বাবারা, ভুলে যাননি, ভুলে থাকতে পারেননি মায়েরাও। শুধু ভুলে গেছি আমরা বা আমাদের সমাজ। ’৭১ পরবর্তী মীরসরাইয়ে ঘটে যাওয়া এ করুণ ট্র্যাজেডিকে আমরা খুব সহজে ভুলে গেছি!
আজো মায়েদের চোখ খোঁজে সন্তানের অস্তিত্ব। স্মৃতি মাখা শৈশব। টেবিল কাভারে নীল রঙ এ লেখা মা-বাবার প্রতি ভালোবাসার চিরকুট কি ভুলে থাকা সম্ভব???
ভালো থাকুক সব বেদনার্ত মায়েরা। যেমনটি ওপারে ভালো আছে তাদের আদরের সন্তানেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৭
জেডএম/