ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

ভাল ছাত্র তৈরি হচ্ছে না কেন?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৭
ভাল ছাত্র তৈরি হচ্ছে না কেন? ছবি: প্রতীকী

শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যার নানা বিষয়ে নিউজ করে থাকে বাংলানিউজ। আজকের (১২ জুলাই) দুটি উদাহরণমূলক নিউজের একটি হলো:  বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের বেতনের ১০ শতাংশ অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য কর্তনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক সমাজ।

দ্বিতীয়টি হলো: দুর্দশার একটি চিত্র দেখতে পাওয়া গেছে  গাজীপুর মহানগরের বাইমাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শব্দ ও বায়ুদূষণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটছে।

আর শিক্ষক-এলাকাবাসী বলছেন, নানা সমস্যা-সংকটে পড়াশোনার কোনো পরিবেশই নেই বিদ্যালয়টিতে।  

এর আগের দিনের একটি নিউজের শিরোনাম: কোচিং এর ‍প্রশ্নে স্কুলে পরীক্ষা, যা পারেন করেন।

শিক্ষক, শিক্ষালয় বিষয়ক সমস্যা যে ক্রমেই বাড়ছে, তা বলাই বাহুল্য। এতে ভাল ছাত্র তৈরি হওয়ার পথ রুদ্ধ হচ্ছে। কেন তার সন্তান সুশিক্ষিত, যোগ্য তথা মেধাবী বা ভালো ছাত্র হিসাবে তৈরি হচ্ছে না, তা অভিভাবকদের মাথা ব্যথার কারণ।

জিপিএ ভালো পেলেই ছাত্রটি যোগ্য হয়েছে, সব সময় এমন নয়। তথাকথিত জিপিএ প্রাপ্তদের করুণ অবস্থাও চোখ এড়ায় না। অতএব, সমস্যাটি নিয়ে গভীরভাবে ভাবনা-চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। বাংলানিউজে প্রকাশিত নিউজের স্ক্রিনশট।

উচ্চশিক্ষায় ভালো ও মেধাবী ছাত্র পেতে হলে প্রাথমিক স্তরে মনোযোগ দেওয়ার অপরিহার্যতা মানা হয় না। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষাদান বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ আছে। নানা দাবিতে আন্দোলন, অনশন, ধর্মঘট, উচ্চ আদালতে মামলা, সরকারের কাছে দরবার ইত্যাদি বহু ঘটনার জটে শিক্ষাক্ষেত্রে ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে বহু শিক্ষকপদ শূন্য। ভবনের জীর্ণ দশা, দলাদলি ইত্যাদি মিলিয়ে অশেষ গণ্ডগোল।

এদিকে যারা শিক্ষকতার চাকরি নিয়েছেন, তাদের অনেকেরই প্রশিক্ষণ নেই। দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অযোগ্যদের চাকরি প্রাপ্তির ঘটনাও ঘটেছে। ফলে ভালো ছাত্র তৈরি হচ্ছে খুবই কম। দুর্নীতি ও রাজনীতির গন্ধ শিক্ষাকে কলুষিত করছে। শিক্ষার  অরাজক অবস্থা নিরসন না করলে পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে না। কিন্তু এর শেষ কোথায় কে বলবে! প্রশিক্ষিতদের পাশাপাশি প্রশিক্ষণহীনদেরও যাতে শূন্যপদে নিয়োগ করা যায়, এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করা যায়, সে ভাবনা যেন কারো মাথায় নেই। বিষয়টি কবির ভাষায় ‘ঝুলে আছি, জব্দ হয়ে আছি’ অবস্থায় দোদুল্যমান। যারা মানুষ গড়ার কারিগর হতে চেয়েছিলেন, তারা এখন হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছেন, ‘মেকার’ হওয়া তো দূরের কথা, ‘টিচার’ হওয়াই কঠিন! পরিস্থিতির বিরূপতায় ভালো ছাত্র, ভালো শিক্ষকের আকাল এখন আর লুকানো কোন বিষয় নয়।

কারণ, বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলে পরিচয়। ফল হিসাবে ভালো ছাত্র তৈরি করতে না পারলে শিক্ষক পরিচয় অর্থহীন হতে বাধ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।