পাঠকদের মতামত ও পরামর্শে নিজেকে আরো শাণিত করতে লেখার নীচে ইমেল ঠিকানা ব্যবহার করি। নিজের সীমাবদ্ধ চিন্তার বৃত্তের বাইরে যেতে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন বিজ্ঞ পাঠকরা।
সব ভালোর সাথে কিছু মন্দ আসে। দক্ষিণের খোলা জানালা দিয়ে যেমন আসে বসন্তের মাতাল হাওয়া তেমনি আসে মাছি-পোকা মাকড়। অনুপ্রেরণাময়ী ও সৎ পরামর্শক ই-মেলের পাশাপাশি মেলে অন্ধ রাজনৈতিক আনুগত্যের গালাগালি। আওয়ামী লীগের সমালোচনায় কট্টর বিএনপি পন্থীরা সমর্থনের জোয়ারে ভাসিয়ে দেন, যেন পুরো বাংলায় আমিই একমাত্র ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির! আর আওয়ামীরা রায় দিয়ে বসেন, আইএস আই’র চর, পাকিস্তানের দালাল ও জামায়াতী রাজাকারের তকমা। দুই বড় দলের সমালোচনায় আমি হয়ে উঠি স্বৈরাচারী এরশাদের তল্পিবাহক। ক্ষেত্র বিশেষে জাসদ ও গণবাহিনী। কত ঠুনকো মানুষের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ! দলীয় বৃত্তের বাইরে গিয়ে কোনো রাজনৈতিক মূল্যায়ন বেশ কঠিন হয়ে ওঠে। এরকম অন্ধ আনুগত্যের রাজনৈতিক সমর্থকদের দেশে রাজনীতিবিদেরাতো স্বাভাবিক ভাবেই জবাব দিহিতার উর্ধ্বেই থাকবেন!
উল্লেখিত সব ইমেল বিছিন্ন, বিক্ষিপ্ত ও তাৎক্ষণিক। ভয়াবহ হছে জামায়াতীদের সুসংগঠিত ও পরিকল্পিত ই-মেলগুলো। তবে কোথাও জামায়াতের নাম থাকে না। এগুলো লেখেন কিছু ব্যক্তি আর পাঠানো হয় বেনামি ই-মেল আইডি থেকে। বছর খানেক আগেও স্বনামে ই-মেল পাঠতো হিজবুত তাহরীর ও ব্রাদারহুড অব ইসলাম। ইনিয়ে বিনিয়ে এইসব ইমেলে বলা হতো, দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্হা জরুরি। দরকার র্যাডিক্যাল অ্যাকশন। তালেবান ধাঁচের বিপ্লব। অস্বীকার করার জো নেই, ই-মেলগুলো ভেরি ওয়েল ড্রাফটেড। পড়েই বোঝা যায় প্রেরক কিংবা লেখকের ইংরেজিতে দখল রয়েছে। ই-মেলের শুরুটাও বেশ ভদ্রোচিত, ‘ডিয়ার ব্রাদার, আসস্লামালাইকুম’ দিয়ে। ই-মেলগুলো কিন্তু আসে জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধ বিরোধী কোনো লেখা প্রকাশিত হলে।
তবে ইদানীংয়ের ই-মেলগুলোতে কোনো খোলস বা ভণিতা থাকে না। সচরাচর থাকে না কোনো ভদ্রোচিত সম্ভাষণ। সরাসরি, বাপ-মা তুলে ছাপার অযোগ্য গালিগালাজ দিয়েই শুভ সূচনা। মধ্যিখানে থাকে হুমকি, ‘দেশে আসলে বুঝবি’ ধরনের। ই-মেলের শেষ থাকে ফতোয়া, ‘ব্যাটা মালাউনের বাচ্চা, আল্লাহ-নবীর পেয়ারা মহান নেতাদের নিয়ে কটূক্তি করবি না মুরতাদ’। বিভিন্ন ব্লগে দেখি, একদঙ্গল জামায়াতী দিন রাত, বিদ্বেষ ছড়ায়। সরকারের কিছু পেলেই, এর সংগে হিন্দুবাদ ও ভারতকে জড়ায়। বড় সুসংগঠিত ধনে-জনে বড় স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রপাগান্ডা ইউনিট।
মাঝেমধ্যে অবশ্যই ভয় জাগে। অসহ্য লাগে এদের বাড়াবাড়ি । কিন্তু কাউকে না কাউকেতো এগিয়ে আসতে হবে? প্রতিবাদী হতে হবে। একাত্তরে হয়েছিলো সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। এখন করতে হছে কলমযুদ্ধ। বাঙালির জাতীয় অগ্রযাত্রার উদ্যম ব্যাহত করতেই বোধকরি এইসব বিভ্রান্তি।
স্বাধীনতাবিরোধী এই শত্রুদের আইটি এক্সপার্ট দিয়ে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। মুখোমুখি করা প্রয়োজন প্রচলিত আইনের। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির তথ্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও গড়ে তোলা প্রয়োজন জনমত।
ইমেলঃ [email protected]
বাংলাদেশ সময় ১২০৭ ঘণ্টা, সেম্পেম্বর ২৬, ২০১১