বাংলাদেশের অনেক স্থানে বন্যা ও বন্যা-পরবর্তী প্রকোপে ভালো নেই বহু মানুষ। জীবন সংগ্রামে ক্ষত-বিক্ষত মানুষের আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে।
পৃথিবীতে বিপন্ন মানুষের তালিকা মনে হয় আরও দীর্ঘ। সিরিয়ায় যুদ্ধ প্রান্তরের রক্তাক্ত মানুষ টের পাবে না উৎসবের আনন্দ। যারা উদ্বাস্তু ও শরণার্থী হয়ে আশ্রয় শিবিরে আটকে আছে, তাদের মাথার উপর খোলা আকাশের চাঁদটি কোনও উৎসব নিয়ে আসবে না। ক্যাম্পে ক্যাম্পে যুদ্ধাহত নারী ও শিশুরা জানবে না আনন্দের মর্ম।
বাড়ির পাশের মায়ানমারে প্রতিদিন মৃত্যু মুখে পতিত মানুষগুলোর কাছে ঈদের পবিত্র দিনটিও হাজির হয়েছে কিয়ামতের বিভীষিকা নিয়ে। নাফ নদীতে মরে পচে ভেসে ওঠছে যে নারী ও শিশুদের মরদেহ, তাদেরকে কখনোই স্পর্শ করতে পারবে না উৎসবের আমেজ। পথে পথে স্বজন হারানো উপদ্রুত মানুষের আদিঅন্তহীন নগ্ন পদধ্বনি ম্লান করে দিচ্ছে উৎসবের উল্লাস। কান্নায় ভাসিয়ে দিচ্ছে আনন্দের সঙ্গীত।
আমরা যারা ঈদ করছি, তারা সৌভাগ্যবান। প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটাচ্ছি স্নিগ্ধ সময়। অথচ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ ও উৎসবের সুযোগ অনেকেই পাচ্ছেন না। বিপন্নতা নানাভাবে তাদেরকে খুবলে খাচ্ছে। জীবন ও মৃত্যুর মাঝ দিয়ে পাড়ি দেওয়া অসহায় মানুষদের কথা আমরা যেন ভুলে না যাই। আমাদের আনন্দে ও প্রার্থনায় যেন অবশ্যই স্মরণ করি বিপন্ন ভাই-বোনদের। আমরা যারা ঈদ করছি, তারা যেন মনে রাখি, যেসব মানুষ ঈদ করতে পারছে না, তাদের কথা।
ড. মাহফুজ পারভেজ: কবি-গল্পকার-গবেষক। অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৪০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৭
আরবি/