এখন প্রশ্ন হল, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের দায়ভার কার ওপর বর্তাবে? মূলত আমরা জানি যে, অপরাধগুলো সংঘটনের পেছনে রয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং তাদের মদদপ্রাপ্ত মিয়ানমারের উন্মত্ত জনতা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধি, ১৯৯৮ অনুসারে অপরাধীদের ওপর দুই ধরনের দায়ভার অর্পণ করা যায়: ব্যক্তিগত অপরাধের দায়ভার (ইনডিভিজুয়াল ক্রিমিনাল রেসপনসিবিলিটি) এবং ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়ভার (সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি)।
আমরা দেখেছি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালে প্রথম দফাতেই নেতৃস্থানীয় অপরাধীদের বিচার শুরু করা হয়। এরপরে আমরা দেখি, সরাসরি সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির জন্য ম্যানিলা ট্রাইব্যুনালে জেনারেল ইয়ামাশিতার মৃত্যুদণ্ড হয়।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিচার নয় কেন?
মিয়ানমারের ক্ষেত্রে আমি মনে করি, রোহিঙ্গাদের ওপর যে গণহত্যা চালানো হয়েছে, তার দায়ভার সে দেশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ওপরেই বর্তায়। সে ক্ষেত্রে মিয়ানমারের যে ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা উচিৎ, তিনি হলেন দেশটির ডি-ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। এছাড়াও আরও যেসব ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করা উচিৎ তারা হলেন- মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং হিলেইং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. জেনারেল কায়া সুই, প্রতিরক্ষামন্ত্রী লে. জেনারেল সেইন উইন এবং সীমানা সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী লে. জেনারেল ইয়ে অং।
এবং দেশটিতে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে ওই নেতৃস্থানীয়দের আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটিতেই অভিযুক্ত করা সম্ভব।
ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ
প্রসিকিউটর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং অধ্যাপক , আইন বিভাগ , ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
এএসআর