জামায়াতের ’মুরুব্বী’ সউদিরা ’দুর্বল’ দেশের মানুষদের বিচারে শরিয়া আইনের ইস্তেমাল করে থাকেন। একই অপরাধে ধনী ও শক্তিমত্ত দেশের নাগরিকদের বিচার হয় ভিন্ন তরিকায়।
সউদিদের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা রাজাকার পুনর্বাসনের রাজনৈতিক যুগে। বাংলাদেশের রাজনীতি যতো বেশী রাজাকার-ফ্রেন্ডলি হয়েছে, ততো বেড়েছে সউদি সৌহার্দ্য ও সাহায্য-সহযোগিতা। অথচ নবীজির উম্মত গরীব বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ বাঙালিরা মুসলমান তাদের হজ্-রোজগারের সেরা ক্লায়েন্ট। সউদী অর্থনীতির বুনিয়াদ নির্মাণে পেটে-ভাতে শ্রম দিচ্ছে ২০ লাখের বেশি বাঙালি। ইসলামী রীতি অনুযায়ী ঘাম শুকাবার আগে বাঙালি শ্রমিকদের পাওনা মেটে না। বাজার দরের অর্ধেকের চেয়েও কম মুজুরিতে নবীজির বাঙালি উম্মতদের আনঅফিশিয়াল ক্রীতদাস বানিয়ে রাখা হয়েছে পাসপোর্ট জব্দে, আকামার (ওয়ার্ক পারমিট) নবায়নের অস্বীকৃতি ও টালবাহানায়।
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্যে বাঙালি মুসলমানদের লাগে ‘জামায়াতের’ লিখিত অনুমোদন। বাংলাদেশের জংগীদের অর্থায়নে শুনি সউদি যাকাত ফান্ড ব্যবহৃত হয়। মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণের সাহায্যের নামে লাখ লাখ ডলারের যাকাত এনে জামায়াতিরা ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ায়। বিনিময়ে ‘রাজনৈতিক নিশ্চুপ’ থেকে বাঙালি আদম সন্তানের ‘ক্রীতদাস হবার সউদিযাত্রা নিশ্চিত করে। মুখে আল্লাহ-রসুলের আইন প্রতিষ্ঠার ধুয়ো তুলে, শরীয়া আইনের প্রয়োজনীয়তা কপচায়। সউদীদের ’বেশরিয়তি’ কাজকে ’জায়েজ’ বানিয়ে বাংলাদেশে কোরানের আইন প্রতিষ্ঠার স্লোগান দেয়।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার সূচনা শুনি বিলম্বিত হয়েছে সউদী ’উদ্বেগে’। সউদীরা প্রথমতঃ চাননি তাদের ‘মিতা’দের বিচার হোক। বাংলাদেশের অমননীয় মনোভাবের কাছে শেষাবধি নতজানু সউদিরা নিজ ‘মিত্র’ জামায়াতী যুদ্ধাপরাধীদের জন্যে অগ্যতা দাবি করেছে ’ফেয়ার অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট’ ট্রায়াল। এক্ষেত্রে সউদিদের দাবিতে শরিয়া আইনের উল্লেখ ছিলো না। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আর কাকে বলে!
জামায়াতিরা যেহেতু নিজেদেরকেই ’আল্লাহ’র একমাত্র সৈনিক’ ভাবে, কোরান-সুন্নাহ’র শাসন কায়েমের চিৎকারে থাকে, তাদের দলের সকলের বিচার হওয়া উচিত তাদের রাজনৈতিক প্রভু সউদীদের অনুসরণে শরীয়া আইনে। যুক্তি-তর্ক, বাদ-বিবাদ, আইনের মারপ্যাঁচ, জজ-ব্যারিস্টার সব বাদ। শরিয়া আইন অনুযায়ী সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতেই ক্লোজ ডোর বিচার চাই সাঈদী গংদের। শরীয়া আইনানুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তরা মাফ না দিলে নো আপিল। নো রিভিশন। নো মার্সি। সাধারণ বাঙালি অভিযুক্তদের আল্লাহ’র আইনের যে ফতোয়ায় ফেলে ’কতল’ করা হয়েছে, সাঈদী গংদেরও সেই ফতোয়ায় ফেলা উচিত। শত হোক, তারা আল্লাহ’র আইন ছাড়া দুনিয়াবি কোনো তোয়াক্কা করে না।
যুদ্ধাপরাধীদের সউদি আদর্শের অনুকরণে শরিয়া আইন মোতাবেক ক্লোজড ডোর বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়া মাত্রই বায়তুল মোকাররমে বাদ জুম্মা প্রকাশ্যে শিরোশ্ছেদ করা হোক।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল মানি না, শরীয়া আইনের বাস্তবায়ন চাই। এবং খুব দ্রুত।
ইমেলঃ [email protected]
বাংলাদেশ সময় ২২২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১১