বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ৩টায় রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন তিনি। রাত সাড়ে দশটার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিনের মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবরটি পেলাম।
গভীরভাবে শোকাহত হলাম। তিরিশ বছর আগে তার সান্নিধ্যের স্মৃতি প্রবলভাবে নাড়া দিয়ে গেলো। একহারা ঝাঁকড়া চুলের লম্বা চেহারা বার বার ভেসে এলো স্মৃতির পাতায়।
কমিউনিস্ট মতাদর্শের এই লেখক কলম ধরেছিলেন দেশের স্বার্থে ও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে। প্রায়ই নানা বিষয় শেয়ার করতেন। আমাকে বই লেখার ব্যাপারে পরামর্শ দিতেন, বিষয়ও বলতেন। সব সময় তাগাদা দিতেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে তার পরামর্শ মতো বইয়ের কাজ করা হয়ে ওঠে না।
একজন নির্ভেজাল শুভাকাঙ্খীকে হারালাম। গুণী ও বিদ্যামুখী একজন স্বজনের বিয়োগ বেদনা অনুভব করছি তার মৃত্যুতে।
খুলনা অঞ্চলের মানুষ ছিলেন তিনি। ছিলেন স্পষ্টভাষী। কোনো বিষয়ের গভীরে যেতে চাইতেন। বিতর্কিত বিষয়ের নানা মাত্রা স্পর্শ করতে চাইতেন। সব সময় কোনো না কোনো কাজে লিপ্ত থাকতে ভালোবাসতেন। যে বিষয়ে কাজ করছেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করতেন। খুবই চেষ্টা করতেন পক্ষ-বিপক্ষের সব মত তুলে আনতে।
তার ছিল অগাধ পাঠাভ্যাস। তখন ইন্টারনেট, ই-মেইলের যুগ ছিল না। বহু কষ্ট করে বিভিন্ন সূত্র থেকে বই-পত্র সংগ্রহ করতেন। বিতর্কিত বা চাঞ্চল্যকর বই পেলে অনুবাদ করতে লেগে যেতেন। তার উল্লেখ্যযোগ্য কাজের মধ্যে অনুবাদকর্ম অন্যতম।
তার মৃত্যুতে নিবেদিতপ্রাণ ও নিরেট পেশাগত সৌন্দর্যময় সাংবাদিকতা ও লেখক ঘরানার একজন কৃতী মানুষের বিদায় হলো। শেষ হলো সৃষ্টিশীল একজন মানুষের কর্মময় জীবন। কিন্তু তিনি বেঁচে থাকবেন তার অম্লান রচনার ভেতর দিয়ে।
প্রিয় মাসুদ ভাই, যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৭
এমপি/এএসআর