তার শেষ দিনগুলো খুব কাছে থেকে দেখেছি দৈনিক ইত্তেফাকে। শিল্পী আইনুল হক মুন্নাকে নিয়ে নিবিষ্ট মনে কাজ করছেন।
দাদা ভাই গর্ব করে বলতেন, ১৯৫৬ সালে তার হাতে প্রতিষ্ঠিত কচিকাঁচার আসর সব সময় স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছে। অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতির সারথী ছিলেন তিনি।
দাদা ভাই অসুস্থ হলে ছড়াকার এখলাসউদদীন আহমদের সঙ্গে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে দেখতে গিয়েছিলাম। শিশুর মতো কথা বলেছিলেন। অভয়দাস লেনের প্রতিবেশী শেরে বাংলার ভোজন রসিকতা নিয়ে অনেক হাসির গল্প করেছেন।
অসুস্থতা নিয়েই তিনি পরপারে যাত্রা করেন ১৯৯৯ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে মরদেহবাহী গাড়িতে আমরা গোরস্তানে তাকে চিরদিনের জন্য রেখে আসি। রিটন, আমিরুল আরও অনেকেই ছিলেন সে দিন। ছিলেন অনেক শিশু ও বয়স্ক বন্ধু।
সে দিনের জনপ্রিয় ইত্তেফাকের বিশেষ সংখ্যায় আমার কবিতা ছাপা হয় দাদা ভাইয়ের হাত দিয়ে। তিনি ছিলেন অনেক তরুণ ও নতুন লেখকের সুহৃদ।
বৃহত্তর ফরিদপুরের রাজবাড়ীর পাংশায় তিনি ১৯২৫ সালের ৯ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। শিশুদের নিয়ে স্মরণীয় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছিলেন স্বাধীনতা পদক।
ছড়াকার হিসেবেও তিনি ছিলেন বিশিষ্ট। তার 'বাক্ বাক্ কুম' ছড়াটি অনবদ্য: বাক্ বাক্ কুম পায়রা/মাথায় দিয়ে টায়রা/বউ সাজবে কাল কি?/চড়বে সোনার পালকি?
পালকি চলে ভিন গাঁ-/ছয় বেহারার তিন পা। /পায়রা ডাকে বাকুম বাক্/তিন বেহারার মাথায় টাক। /বাক্ বাকুম কুম্ বাক্ বাকুম/ছয় বেহারার নামলো ঘুম।
থামলো তাদের হুকুম হাঁক/পায়রা ডাকে বাকুম্ বাক্। /ছয় বেহারা হুমড়ি খায় পায়রা উড়ে কোথায় যায়?।
দাদা ভাইয়ের বহু ছড়া আজো শিশু-কিশোরদের প্রিয়। তিনি তার কর্ম ও রচনার ভেতর দিয়ে এখনো অম্লান হয়ে আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
এমপি/পিএম/আরবি/