ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মুক্তমত

ওডারল্যান্ডের সমাধিপাশে শেখ হাসিনা: যুদ্ধপরাধের বিচার হবেই

আবিদ রহমান, পার্থ, অস্ট্রেলিয়া থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১১
ওডারল্যান্ডের সমাধিপাশে শেখ হাসিনা: যুদ্ধপরাধের বিচার হবেই

ওডারল্যান্ডের সমাধির পাশে দাঁড়িয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, `দেশে দেশে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি উঠেছে, তখন আমাদের বিরোধীদলের নেত্রী যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার আন্দোলন শুরু করেছেন। কিন্তু আমি আবারও জোর দিয়ে বলছি, এ বিচার শুরু হয়েছে, এবং তা শেষও হবে।

`

শেখ হাসিনা বলেন,`বাংলাদেশের জন্য ভালো খবর, আমরা যখন এ ধরনের অপরাধীদের বিচার শুরু করেছি, তখন দেশে দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নতুন দাবি উঠছে। এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কমনওয়েলথ সম্মেলনেও। `

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত একমাত্র বিদেশি নাগরিক ডব্লিউ এম ওডারল্যান্ডের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী কথাগুলো বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, `১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় আসায় দেশ পিছিয়ে পড়েছিল। যে কারণে তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দূরে থাক, তাদের বিচারের দাবিও কেউ তুলতে পারেনি। `

ওডারল্যান্ডের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, `মুক্তিযুদ্ধে যে সব বিদেশি নাগরিক অবদান রেখেছেন, আমরা তাদের খুঁজে খুঁজে বের করছি। তাদের সবাইকে যথাযথ সম্মান জানানো হবে। `

কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের সম্মেলন উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী পার্থ শহরতলীর একটি সমাধিক্ষেত্রে ওডারল্যান্ডের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ দিতে যান। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, `এই মহান মানুষটির সমাধিতে এসে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে শ্রদ্ধা জানানোর ইচ্ছা ছিল আমার অনেক দিনের। আজ সেটি করতে পেরে নিজেকে বেশ ভারমুক্ত লাগছে। ওডারল্যান্ডের ঋণ শোধ হবার নয়। `

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েসসহ সফরসঙ্গী কর্মকর্তা, সাংবাদিকবৃন্দ, বাংলাদেশের হাইকমিশনার লে. জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সিডনি থেকে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তার সঙ্গে ছিলেন। তবে হাইকমিশনের সহায়তার অভাবে বাংলাদেশ থেকে আসা আরও অনেক সাংবাদিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি কভার করতে পারেননি।

সম্মেলনে ফিজি ও জিম্বাবুয়ে ইস্যু নিয়ে আলোচনার উল্লেখ করে বলা হয়, যেকোনও মূল্যে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে হবে। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো কোনও অবস্থায়ই সংবিধান, সাধারণ নির্বাচন স্থগিত করতে পারবে না। আইন ও সাংবিধানিক শাসন যেকোনও মূল্যে সমুন্নত রাখতে হবে।

এর আগে সকালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সম্মেলন উদ্বোধন করেন এবং কমনওয়েলথ নেতাদের সঙ্গে ছবি তোলেন। আগামী বছর রানির নেতৃত্বে জুবিলী উৎসব উদযাপন উপলক্ষে তার নামে বিশেষ একটি ট্রাস্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়া এই ট্রাস্টের মূল তহবিলের ব্যবস্থা করবে। সদস্য দেশগুলোকেও এতে অবদান রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

 পরবর্তী সম্মেলনটি হবে ২০১৩ সালে, শ্রীলংকায়। শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ্রা রাজপাকসের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কিছু কিছু মানবাধিকার সংগঠন শ্রীলংকা সম্মেলন বাতিলের দাবি তুললেও তাতে আমল দেওয়া হয়নি। কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দু’বছর আগে পোর্ট অ`স্পেনে শ্রীলংকা সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়। শ্রীলংকার পর মরিশাসে সম্মেলন হবে। কাজেই এখন, এই সময়ে এসে, সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

পার্থ বৈঠকে ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রাজ পরিবারের শুধু বড় ছেলে নয়, এখন থেকে বড় মেয়েও উত্তরাধিকারী হিসেবে সিংহাসনে বসার সুযোগ পাবেন। মেয়েদের জন্য এ সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে ৩০০ বছরের আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে।
 
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সাংবাদিকদের জানান, পদাধিকার বলে কমনওয়েলথের প্রধান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এই পরিবর্তনে সায় দিয়েছেন। পুরনো আইনের পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে ডিউক ও ডাচেস অফ ক্যাম্ব্রিজের (প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটন) প্রথম সন্তান যদি মেয়ে হয়, তাহলে ছোট ভাই থাকলেও ওই মেয়েই সিংহাসনে বসবেন। এত দিন ছেলে না থাকলেই কেবল মেয়েরা সিংহাসনে বসার সুযোগ পেতেন। বর্তমান রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সেভাবেই সিংহাসনে বসেন। আইনের আরও একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাহলো উত্তরাধিকার আইনের পাশাপাশি রাজ পরিবারের কারো রোমান ক্যাথলিককে বিয়ে করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে।

E-Mail: [email protected]

বাংলাদেশ সময় ১৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।