ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মুক্তমত

বিজয়ের মাসে এই লজ্জা রাখিব কোথায়?

আহমেদ আরিফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১১
বিজয়ের মাসে এই লজ্জা রাখিব কোথায়?

ঢাকা: প্রথমে টি টুয়েন্টি এরপর  প্রথম ২টি ওয়ানডের লজ্জাজনক পরাজয়ের দুঃখ ভুলে টিভি সেটের সামনে বসেছিল আজ লাখ লাখ ক্রিকেটপ্রেমী। এই লাখ লাখ ক্রিকেটপ্রেমীর মধ্যে আমিও যে একজন সেটা নিশ্চয় বলে দেওয়ার দরকার নেই।



যা না বললেই নই সেটা হচ্ছে, প্রতিবারই ক্রিকেটারদের লজ্জাজনক হারের পর আমি ঘোষণা দেয় আর ক্রিকেট খেলা দেখবোনা। কিন্তু প্রতিম্যাচ শুরু হতেই ছাগলের তিন নম্বর বাচ্ছার মত লাপাতে লাপাতে লেপটপ এবং ডেস্কটপ দুটোতেই খেলা চালিয়ে দিয়ে বসে যায়।

কোন কারণে লেপটপ কিংব ডেস্কটপের একটায় সমস্যা দেখা দিলে একটা বল যদি মিস হয়ে যায় এই ভয়ে সব সময় ডেস্কটপ, লেপটপ দুটোতেই খেলা চলতে থাকে। প্রতি ম্যাচের মতো বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান শেষ ওয়ানডে ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম হয়নি ।

ম্যাচের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান ক্রিকেটারদের চেপে ধরা এবং বোলারদের দায়িত্বশীল বোলিং এ মাত্র ১৭৭ রানে অলআউট করে দেওয়ার পর ভাবতে শুরু করে দেয় টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের পরাজয় থেকে বের হয়ে এসে বিজয়ের মাসে অনন্ত একটি জয় উপহার দিক টাইগাররা।

লাখ লাখ ক্রিকেটপ্রেমীর এমন আর্তনাদ টাইগাররদের কাছে পৌঁছে গেছে । কিন্ত না, যে কপাল সে মাথার মতো আবারও বিজয়ের মাসে জাতিকে চরম লজ্জাজনক পরাজয় দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

এদের আউট হওয়ার ধরন দেখলে মনে হয় না এরা ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছে। অথচ এদের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো জাতি।

উইকেট বিসর্জন দিয়ে সাজঘরে ফেরার সময় ক্রিকেটারদের চোখমুখের ভাব দেখে মনে হয়না এদের কোনও দায়বদ্ধতা আছে দেশের প্রতি; দেশের লাখ লাখ ক্রিকেটপ্রেমীর ভালবাসার প্রতি কোনও শ্রদ্ধা আছে ।

যে দেশে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায়, ফুটপাতে স্টেশনে ঘুমায় সে দেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় ৫ তারকা হোটেলে রাত কাটানো ক্রিকেটারদারদের পেছনে শত শত  কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে দেশ কিছু পাক না পাক একটা ম্যাচ জিতলে ২০ ম্যাচে হারের লজ্জা পায় পুরো জাতি।

আগামীকালকের অধিকাংশ পত্রিকার খেলার পাতার শিরোনাম হবে `পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের শোচনীয় হার` অথবা `বাংলাদেশের লজ্জাজনক পরাজয়`।

বিজয়ের মাসে এমন শিরোনাম কি কারও মনে লজ্জার সৃষ্টি করে কি-না আমি জানি না, তবে আমার করবে ।

কারণ, এই `বাংলাদেশ` নামক দেশটির জন্য একটি পতাকার ইতিহাসে লাখ লাখ তাজা প্রাণের  বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের মাসে এমন শিরোনাম সত্যি লজ্জাজনক।

প্রতিবারই শোচনীয় হারের পর একটা না একটা ব্যাখ্যা দেয় ক্রিকেটাররা এবং প্রতি সিরিজের পরই শোনা যায় হারলেও সিরিজ থেকে অনেক প্রাপ্তি হয়েছে ।

প্রতি সিরিজ থেকে অনেক প্রাপ্তির কথা শোনা প্রাপ্তিগুলো শুধু প্রাপ্তিই থেকে যায় পরের কোনও সিরিজে আর কাজে আসেনা। অনেক হয়েছে প্রাপ্তি। আর কোনও প্রাপ্তি বিবেচনা নয়।

ক্রিকেট বোর্ডের কাছে বিনীত আহবান টেষ্ট ম্যাচ শেষে ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে এমন লজ্জাজনক পরাজয়ের জন্য কোনও কমিটি গঠন করা ছাড়াই শাস্তি দেওয়া হউক প্রতিটা ম্যাচের স্কোর কার্ড দেখে।

দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভাল এমন ক্রিকেটারদের চেয়ে দেশে ক্রিকেট খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক ভাল। এদের পেছনে শতশত কোটি টাকা খরচ না করে সমাজের অবহেলিত মানুষগুলোর জন্য খরচ করা হউক দেশ অন্তত কিছুটা হলেও দারিদ্রমুক্ত হবে।

[email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।