ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন: অপরাজনীতি রুখে দিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন: অপরাজনীতি রুখে দিন

আবরার হত্যার মাধ্যমে বুয়েটে যা ঘটেছিল এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা মর্মান্তিক এবং কলঙ্কিত অধ্যায়। এটা নিয়ে শুধু বাংলাদেশের সর্বত্র নিন্দা হয়নি, দেশের বাইরেও এটা নিন্দিত হয়েছে। নিন্দা হয়েছে প্রতিবেশী দেশের ফেসবুকে, হয়েছে জার্মানিতে, যুক্তরাজ্য, আমেরিকা এমনকি জাতিসংঘেও। শুধু এইটুকুতে এর গুরুত্ব আমাদের বোঝা উচিত এবং সরকার সেটা বুঝেছে। প্রধানমন্ত্রী সেভাবেই এটা বিবেচনাও করেছেন। এজন্য সরকারকে এবং প্রধানমন্ত্রীকে সর্বপ্রথম অভিনন্দন জানাই।

এই প্রচণ্ড ঘৃণা, এই দুর্নিবার দুঃখ এবং বেদনার মধ্যে যে আশার আলো ফুটে উঠেছে সেটুকু যেন ভবিষ্যতে আরও আলোময় হয়ে ক্রমান্বয়ে একটি বিপর্যস্ত ছাত্রসমাজকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে পারে, এটাই আমাদের আজকের দিনের প্রার্থনা। তারপরও বলতে হয়, এই সমস্যার গভীরে আমাদের যেতেই হবে, সমস্যার ক্লাইমেক্স অবশ্যই আবরার হত্যার মতো একটি নিষ্ঠুর ঘটনা, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

কিন্তু এই সমস্যা যে আমাদের দেশে কম-বেশি ছিল এটা মানতেই হবে। অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় যাদের দেশের ভবিষ্যৎ বলি, সেখানে অনেক ছাত্রের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ এবং হত্যা অনুষ্ঠান আমরা আগেও বারবার দেখেছি, বহুদিন ধরে এটা দেখছি। সেজন্য সমস্যার গভীরে না গিয়ে আমরা এর চট করে সমাধান করতে পারব না। সামগ্রিক বা ‘হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ’ দরকার। সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান আমাদের খুঁজে পেতেই হবে। সমস্যার গভীরে যেতে হলে আমাদের দায়িত্ব সবার। যে কোনো মূল্যে সুন্দর একটি ছাত্রসমাজ গড়ে তুলতেই হবে। ছাত্ররাই হলো আমাদের ভবিষ্যৎ। সেজন্য যারাই এরমধ্যে অবদান রাখতে পারবে তাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব এবং কর্তব্য আজকে নতুন করে আমাদের ভাবতে হবে।
 
ছাত্রদের মধ্যে প্রীতি ও সম্প্রীতি কেন হারিয়ে যাবে? শুধু রাজনৈতিক মতভিন্নতার কারণে এবং অন্য কোনো সামাজিক কারণে অথবা ছাত্রদের মধ্যে পারস্পরিক কাছাকাছি আসার যে রীতি ছিল সেই রীতির অবক্ষয় হয়ে গেছে বলে। ‘ঘৃণা নয়, শ্রদ্ধা’ এটাই কিন্তু মূলনীতি হতে হবে। ঘৃণা দিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করা যায় না। ঘৃণা দিয়ে মানুষকে কনভিন্স করা যায় না। মতপার্থক্য থাকলে ঘৃণা দিয়ে সেই মতপার্থক্য দূর করা যাবে না। শ্রদ্ধা থাকতেই হবে, ভালোবাসা থাকতেই হবে। যুক্তি থাকতে হবে। আমাদের ছাত্রদের বুঝতে হবে, ছাত্ররা পরস্পর অনেক দূরে সরে যাচ্ছে, একজন আরেকজনের কাছ থেকে। তাদের অনেক কাছাকাছি আনতে হবে। শুধু বই বগলে করে ক্লাসে গেলেই তাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে না, এটা বোঝার শেষ সময় আজকে। শিক্ষা মানে শুধু পাশ করা নয়। মানুষ হতে হবে। আমরা দেখেছি, আমাদের ছেলেরা বেশ কিছুদিন আগেও শিক্ষাঙ্গনে স্পোর্টস এবং সাংস্কৃতিক উৎসব পালন করতো। খেলাধুলার প্রতিযোগিতার মধ্যে ছাত্ররা তাদের প্রতিযোগী মনোভাব বাড়াতো। বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করার জন্য সেটা ছিল একটা মস্ত বড় সুযোগ।
 
কিন্তু দুঃখের বিষয় আজকে তেমন সব অনুষ্ঠান দেখা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুলে বার্ষিক খেলাধুলা আজকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। নোট বই মুখস্থ করা এবং কোচিং সেন্টারের দৌরাত্ম্যে মা-বাবা বাচ্চাদের সারাক্ষণ লেখাপড়ার মধ্যে ডুবিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। শরীর চর্চা নেই, খেলাধুলা নেই। সুতরাং একদিকে যেমন তারা শুধু বই মুখস্থমুখি হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি বন্ধুত্ব, সৌহার্দ্য এবং প্রতিযোগিতার মনোভাব ধীরে ধীরে কেমন যেন হারিয়ে যাচ্ছে।
 
একইভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনও ছিল ছাত্রদের চরিত্র গঠনের একটি বড় উপাদান। নাটক হতো স্কুলে-কলেজে সব জায়গায়, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা হতো, গান হতো, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা হতো, সেগুলো কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডে মন যেমন বিকশিত হয়, সুন্দর মনের সৃষ্টি হয়, তেমনি বন্ধুত্ব এবং একে অন্যের কাছাকাছি হওয়ার মস্ত বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়।
 
প্রশ্ন হল: ১. এই সুযোগগুলো হারিয়ে গেল কেন? এসব নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
 
এই দায়িত্ব একদিকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের, তেমনি নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের তথা সরকারের।
 
২. উপাচার্য, অধ্যক্ষ, শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন- এদের অনেক দায়িত্ব রয়ে গেছে। অতীতে যেমন শিক্ষকদের এবং ছাত্রদের মধ্যে গভীর যোগাযোগ ছিল, শিক্ষকরা যেমন শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন ছাত্রদের কাছে, তেমনি ছাত্ররাও শিক্ষকের কাছে স্নেহের পাত্র ছিল। আজকে অনেক ক্ষেত্রে শুধু রাজনৈতিক মতভেদের কারণে অনেক দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য শিক্ষক, অধ্যক্ষ, উপাচার্য ও প্রশাসনের যারা আছেন তাদের অনেক বেশি দায়িত্ববান হতে হবে। শিক্ষকদের নিজেদের মধ্যে রাজনীতি করার সুযোগ এবং প্রবণতা নিয়েও রাষ্ট্রকে ভাবতে হবে।  
 
আপনি যদি বিদেশে যান, সেখানে দেখবেন শিক্ষক এবং ছাত্রদের মধ্যে কি নিবিড় সম্পর্ক। ছাত্রদের সমস্যা হলে শিক্ষকের কাছে যায়, হয়তো প্রশাসকদের কাছেও যায়। সেক্ষেত্রে ছাত্র এবং শিক্ষকদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা করা যায়। আজকে ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকদের সেই সম্পর্ক আছে কি-না, তা তারাই বিবেচনা করুক। নিশ্চয়ই অনেক শিক্ষক আছেন, তারা ছাত্রদের কাছে অনেক শ্রদ্ধার পাত্র এবং শিক্ষকরা যে সিদ্ধান্ত দেন সে সিদ্ধান্ত ছাত্ররা মাথা পেতে নেয়।
 
কাজেই শিক্ষকদের দায়িত্ব সম্পর্কে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। প্রশাসনকেও এই ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। চিন্তা করতে হবে আমরা যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছি কি-না।
 
৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, টিভি ও সংবাদপত্র এবং স্মার্টফোনে আজকে প্রতিটি ছাত্র আনুমানিক এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় ব্যয় করেই থাকে। এটা ভালো কি-না মন্দ, তা নিয়ে আমি আজকে আলোচনা করবো না। কিন্তু এটা যে একটি বাস্তবতাও, তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে এবং এই বাস্তবতার সুযোগ নিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কীভাবে আমরা বন্ধুত্বের প্রসার ঘটাতে পারি, হিংসার প্রসার নয়, সে ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে হবে। ঘৃণা নয়, অশ্রদ্ধা নয়, এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোর একটা দায়িত্ব রয়েছে। টেলিভিশনের দায়িত্ব আছে, সাংবাদিকদের দায়িত্ব আছে। আজকে আকাশ সংস্কৃতির মাধ্যমে টেলিভিশনে যেসব রোমহর্ষক হত্যার ঘটনা, নাটক ইত্যাদি দেখানো হয় তা নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। শুধু বিদেশিদের দোষ দিলে চলবে না। আমাদের নাটকগুলো, আমাদের সিনেমাগুলো কি পরিমাণ রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ দেখাচ্ছে সেগুলো আমাদের আমলে আনতে হবে।
 
আমলে আনতে হবে প্রশাসকদের, আমলে আনতে হবে সরকার ও রাষ্ট্রের এবং তার জন্য কীভাবে একে আরও উন্নত করা যায়, সমাজমুখি করা যায়, ছাত্রদের জন্য কল্যাণমুখী করা যায়, ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য রোমহর্ষক ভয়াবহ ভবিষ্যতের স্বপ্ন না দেখিয়ে একটা সুন্দর সমাজ গঠনে কীভাবে তারা এগিয়ে আসতে পারেন এটা তাদের দায়িত্ব, এটা তাদের স্বীকার করতে হবে। কিন্তু তাদের দায়িত্ব যদি তারা দৃঢ়ভাবে পালন না করেন তাহলে দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাবে ।
 
৪. সুশীল সমাজ: বাংলাদেশের সমাজ পরিবর্তনে  সুশীল সমাজের একটা বড় অবদান রয়েছে। যখনই জাতির সামনে বড় বড় সমস্যার সৃষ্টি হয়, সুশীল সমাজ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। এই ব্যাপারে সুশীল সমাজকে আরও বেশি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে সবারই ধারণা। আমার মনে হয় সুশীল সমাজকে আরও বেশি এগিয়ে আসতে হবে।
 
৫. রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য: মনে রাখতে হবে ছাত্রসমাজ দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। ছাত্রসমাজ আমাদের অতীতকে গড়ে দিয়ে গেছে। ছাত্রসমাজের আন্দোলন যদি না থাকতো, ছাত্রসমাজের রাজনীতি যদি না থাকতো তাহলে আজকের বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হতো না, ছাত্রসমাজের রাজনীতি যদি না হতো তাহলে স্বাধীনতার যে সোনালী স্বপ্ন বাংলার সব মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, এটা শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দ্বারা সম্ভব হতো না। সুতরাং ছাত্রসমাজ রাজনীতি করেনি এটা সত্য নয়। কিন্তু সেটা ছিল সুন্দর রাজনীতি। সেটা ছিল দেশ ও মানবতার স্বপক্ষের রাজনীতি। সেটা আমরা সঠিক রাজনীতি বলবো। রাজনীতি যদি অপরাধে পরিণত হয় এবং তার বাহন যদি ছাত্রদের হতে হয়, সেটা হবে দেশের জন্য ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনা। আজকে কি আমরা সেই দুর্ঘটনার মধ্যেই আছি? এখানে রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য স্মরণ রাখতে হবে।
 
রাজনৈতিক নেতারা অবশ্যই তাদের দলীয় রাজনীতির কথা বলবেন, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু দলীয় রাজনীতির মাধ্যমে ঘৃণা এবং বিদ্বেষ ছড়ানোর কোনো অধিকার কারও নেই। এই ব্যাপারে রাজনৈতিক নেতাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে। রাজনৈতিক নেতারা তাদের বক্তব্য খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করবেন। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অপরাজনীতি- এসব অপরাধের বিরুদ্ধে সব দলই কথা বলবে, এটাই কিন্তু দেশের মানুষ চায়। আপনি আপনার রাজনীতি, আপনার নেতা, আপনার ইতিহাস নিয়ে অহংকার করুন, গর্ব করুন, অবশ্যই করবেন। কিন্তু অপরাজনীতির বাহন হিসেবে ছাত্রদের যেন ব্যবহার না করা হয়, এটা আজকে সমাজের দাবি। এই ব্যাপারে রাজনীতিবিদদের আরও অনেক বেশি সতর্ক হওয়া উচিত, এটা সাধারণ মানুষের ধারণা।
 
৬. মা-বাবা এবং পরিবারের কী দায়িত্ব? সন্তানকে গড়ে তোলার মৌলিক দায়িত্ব অবশ্যই মা-বাবা ও পরিবারের। বিশেষ করে জন্ম থেকে শৈশব শুধু পরিবারের হাতেই সন্তানরা থাকে। এই সময়ের যে শিক্ষা সেই শিক্ষা দেন মা-বাবা-ভাই-বোন। এর ফলে একটা সুন্দর চরিত্র গঠন করতে পারবে তারা। এটাই আশা করা যায়, এটাই সম্ভাবনা, এটাই সত্য । আর এখানে যদি ভুল হয়, এখানে যদি হিংসা-বিদ্বেষ প্রবেশ করে যায় তাহলে অবশ্যই এটা দুর্ঘটনা। সেজন্যই মা-বাবাকে ভাবতে হবে আগে। যেমন অনেক পরিবার একসঙ্গে আমরা থাকতাম, বাবা-মা এবং অনেক ভাই-বোন। তার সঙ্গে চাচাতো, মামাতো, ফুফাতো, খালাতো ভাই-বোনদের মধ্যে এত ভালোবাসা ছিল, এত ঘনিষ্ঠতা ছিল। আমাদের ছেলেবেলায় আমরা যে ছাত্রদের সঙ্গে স্কুলে যেতাম সেটাও একটা পরিবারের মতো মনে হতো।
 
আজকে তা হয় না কেনো? কারণ বর্তমানে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি একটা দুইটা সন্তান মাত্র। কারও সঙ্গে আনন্দ-উল্লাস ভাগ করতে হয় না। কিন্তু এটা এখন আর চলে না। এখন একটা বা দুইটা সন্তান যার আছে তারা মা-বাবার সঙ্গে ভাগ করে খায়।  মা-বাবা দিনরাত তাদের লেখাপড়ার পেছনে লেগে থাকে, ছোটবেলা থেকে। আর কোচিং সেন্টারের দৌরাত্ম তো আছেই। এর ফলে যদি কেউ ক্ষুদ্রমনা হয়ে যায়, ‘সেলফিশ হয়ে’ যায়, তার জন্য আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এজন্য মা-বাবাকে ভাবতে হবে। বৃহত্তর পরিবারের যে গুণাবলী ছিল, মানুষ হয়ে ওঠার যে সুযোগ ছিল, সে সুযোগকে ফেলে দেওয়া ঠিক হয়েছে? আজকে মা-বাবাকে বুঝতে হবে চাচাতো, মামাতো, ফুফাতো ভাই-বোনসহ পাড়া-প্রতিবেশী যারা রয়েছে, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক, সৌহার্দ্য, তাদের সঙ্গে খেলাধুলা, যোগাযোগ আদান-প্রদান ইত্যাদি, এগুলো অনেক বেশি বাড়াতে হবে। সন্ধ্যা হলেই টেলিভিশন আর বেশি রাত হলে স্মার্টফোনে মগ্ন হয়ে যাওয়া- এগুলো করে কি মানুষ বড় হবে? এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেগুলো আমাদের বিবেচনা করতে হবে।
 
সবশেষে, প্রধানমন্ত্রী যেখানেই ছাত্র খুন হয়েছে সেই প্রতিষ্ঠানকে অপরাজনীতির হাত থেকে রক্ষা করার পদক্ষেপ নেবেন এটাই প্রত্যাশা। এই ব্যাপারে শিক্ষক, ছাত্র এবং অভিভাবকদের নিয়ে একসঙ্গে মতামত নিতে হবে এবং সেই মতে কোনো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা মনে করি, কোনো সমস্যা হঠাৎ তৈরি হয়নি। ধীরে ধীরে পুঞ্জীভূত হয়েছে । তার ফলে আমরা যে ভবিষ্যতের দিকে যাচ্ছি সেটা আমাদের জন্য সুখকর হবে না। আপনার বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা আপনাকে এই ব্যাপারে অনেক সাহায্য করবে। তা ছাড়া আপনার মায়ের মন আছে, মায়ের হৃদয় আছে, সেই হৃদয়ের কাছে আমাদের আবেদন, অপরাজনীতি রুখে দিন। মানবিক ছাত্র সমাজ গড়তে সাহায্য করুন।
 
লেখক
অধ্যাপক এ কিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী
সাবেক রাষ্ট্রপতি
বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।