লন্ডন: ব্রিটিশ সেনাবাহিনী তাদের রিক্রুটমেন্ট নীতিতে অতি সম্প্রতি বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। এই সংক্রান্ত বিস্তারিত কিছু জানা যায় www.army.mod.uk/join/join.aspx ওয়েব ঠিকানায়।
নিয়মানুযায়ী ব্রিটেনে অবস্থানরত বাংলাদেশি ছাড়াও বাংলাদেশে অবস্থানরত যে কেউ আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
তথ্য-উপাত্ত্য ঘেঁটে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, প্রতি বছর ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ১২ হাজার সেনা নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ১০ শতাংশই বিদেশি নাগরিক, তার মধ্যে কমনওয়েলথভুক্ত নাগরিকের সংখ্যা বেশি। প্রতিষ্ঠিত রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ সেনাদলে নিয়োগ পেতে সর্বনিম্ন বয়স সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ বছর। তবে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত কাউকে দিয়ে অপারেশন চালনার সু্যোগ নেই।
কমনওয়েলথভুক্ত নাগরিকদের জন্য সেনাবাহিনীর রেগুলার গাইডলাইনে বলা আছে যে, সাধারণত ব্রিটেনের বাইরে বসবাসকারী যে কেউ ব্রিটিশ যে কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে তাদের আবেদনপত্র পাঠাতে পারবে, যেখানে তাদের যাবতীয় তথ্যাবলীর সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা, টেলিফোন নম্বর, ইমেইল, ফ্যাক্স ইত্যাদি সরবরাহ করতে হবে, যাতে তারা যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে পারে। কারণ আবেদনপত্রটি রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে আসার পর তারা সব তথ্যাবলী যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠাবে। একই চিঠির একটি অনুলিপি সংশ্লিষ্ঠ দেশের ব্রিটিশ কনসুলার অফিসেও দেবে। এই চিঠি দেখানোর পর ব্রিটিশ হাইকমিশন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে চার মাসের মধ্যে ব্রিটেন এসে মুখোমুখি পরীক্ষায় অংশ নিতে বলবে।
এক্ষেত্রে যাতায়াত, বাসস্থান, ভিসা খরচসহ যাবতীয় খরচ প্রার্থীকে বহন করতে হবে। অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের
নিজ খরচে দেশে ফেরত যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিসার যে সব শর্ত রয়েছে প্রচলিত সব শর্তই প্রার্থীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে। এখানে বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য, প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ব্যাক্তিদের ব্রিটেনে আসতে ভিসা আবেদনের জন্য নিজ উদ্যোগে একজন স্পনসর খুঁজে বের করতে হবে, রিক্রুটিং এজেন্সি যার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পরবর্তীতে সংগ্রহ করবে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সাধারণত ছয় থেকে ১২ সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে সব প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে ব্রিটেনে আসবে তাদের ব্রিটেনে আগমনের তিনদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আর্মড ফোর্সেস ক্যারিয়ার অফিসে রিপোর্ট করতে হবে।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনের সেনাবাহিনীতে ব্রিটিশ এবং কমনওয়েলথ নাগরিক, সবার জন্য সমান নীতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে।
আর্মি ইন্টেরিম গাইড থেকে আরও জানা যায়, কমনওয়েলথভুক্ত নাগরিকদের ব্রিটিশ আর্মিতে নিয়োগের সাথে সাথেই তাদের পাসপোর্টও সংশ্লিষ্ট আর্মি ইউনিট থেকে হোম অফিসের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। আর্মিতে নিয়োগ পাওয়ার সাথে সাথেই নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যাক্তিকে ভিসা নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে, এমনকি পূর্বের ভিসার সব শর্তাবলী নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয়ে থাকে। ফলে ব্রিটিশ আর্মিতে কাজ করার সুবাদে ব্রিটেনে স্থায়ী হওয়ার জন্য প্রচলিত পাঁচ বছর মেয়াদের ইমিগ্রেশন নীতিমালা অনুসরণ করে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ লাভ করবেন। শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ার সুযোগ লাভ করবেন। ব্যতিক্রম শুধু নেপালের গুর্খাদের ক্ষেত্রে, কারণ তাদের জন্য রয়েছে ভিন্ন শর্তাবলী। বর্তমানে ব্রিটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ব্রিটিশ আর্মিতে যোগ দিয়ে স্থায়ী হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
(নিবন্ধ্বটি অনলাইন ও লন্ডন বাংলা মিডিয়া থেকে তথ্য নিয়ে প্রণীত)
লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১১