২। পাড়ার মোড়গুলোতে, অলি-গলিতে অল্প বয়সী ছেলেগুলো একসঙ্গে মিলিত হচ্ছে।
৩। যারা অসহায় মানুষগুলোকে চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ-তেল-লবণ দিয়ে সহায়তা করছেন, তারা অবশ্যই খুব ভালো কাজ করছেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বেশ কয়েক জায়গায় দেখলাম, ১৫/২০ জন একসঙ্গে একটি প্যাকেট/বস্তা ধরে একজনকে দিয়ে সহায়তা করছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের যে ধরন, তাতে একসঙ্গে ১৫/২০ জন একত্র হয়ে যে কিছু করবেন, তাতে নিজেদেরই ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেশি।
আর যদি কোনো একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং একজোট হয়ে চলাফেরা করেন, তাহলে তার থেকে হাজার হাজার মানুষ কিন্তু আক্রান্ত হতে পারেন।
তাই গরিব, অসহায় মানুষকে সহায়তা করার সময় বাড়তি সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত। সম্ভব হলে ওয়ান-টু-ওয়ান প্রথার মাধ্যমে সহায়তার খাদ্যসামগ্রী তাদের হাতে তুলে দিন। কিংবা একটা বড় পরিসরে ফাঁকা ফাঁকা করে খাদ্যের প্যাকেট/বস্তাগুলো সাজিয়ে রাখুন, সেখান থেকে মানুষজন নিয়ে যাবে। এতে নিরাপদ থেকে কাজগুলো করা সম্ভব।
৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলো। বাচ্চারা যেন ঘরে থাকে। আর আমাদের অভিভাবকরা পরিবার নিয়ে পর্যটন এলাকায় ভিড় শুরু করলো। অবস্থাটা এমন যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ দেওয়া হয়েছে পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য।
সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের খুবই সুন্দর একটা উদ্যোগ। উদ্দেশ্য একটাই, সবাই যেন ঘরে থাকে। নিরাপদ থাকে। করোনা ভাইরাস যেন ছড়িয়ে মারাত্মক আকার ধারণ না করতে পারে। আর ছুটি ঘোষণার পর পরই দেখা গেলো ট্রেনের কাউন্টার, বাস, ফেরিতে উপচে পড়া ভিড়। এগুলো বোকামি ছাড়া আর কি হতে পারে?
সবাইকে গ্রামে কিংবা নিজ শহরে এখনই কেন যেতে হলো? এই সাধারণ ছুটি তো আনন্দ উপভোগ করবার জন্য নয়। যারা চলে গেছেন, এখন সেখানে অন্তত যে যার ঘরে থাকি। সেটাই আমাদের জন্য সর্বাপেক্ষা মঙ্গল। শহরের গল্প অন্যদের সামনে করার সময় পরে পাওয়া যাবে।
৫। আমাদের প্রত্যেকের অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত। সময়টা এখন একসঙ্গে বসে গল্প করার নয়। ভালো থাকতে চাইলে সবাইকেই এখন ঘরে থাকতে হবে। কোনটা যে আমাদের জন্য ভালো, কোনটা মন্দ সেটা ভুলে গেলে চলবে কেন? নিজেদের স্বার্থেই সচেতন হতে হবে। সে কারণেই আসুন, কয়েকটা দিন প্রত্যেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখি। নিজেরা ভালো থাকি, অন্যদেরকেও ভালো রাখি।
লেখক: রিয়াজুল হক, যুগ্ম-পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২০