অতি সম্প্রতি ভারতের সীমান্তবর্তী জেলা মুর্শিদাবাদের মৌশরদীতে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের সাধারণ এক নীরিহ নাগরিকের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছে। তথাকথিত গরু পাচারের ঘটনায় সন্দেহবশতঃ তাকে অত্যন্ত অমানবিক, পৈশাচিকভাবে হাত-পা বেঁধে, বিবস্ত্র করে, গোপনাঙ্গে পেট্রল ঢেলে, অতি আদিম কায়দায় পেঠানো হয়েছে।
এতদিন শুধু বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম আর ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমের বদৌলতে বাংলাদেশের নীরিহ লোকজনের ওপর বিএসএফের অত্যাচার, নির্যাতনের কথাই শুনে এবং পত্রিকার পাতায় পড়ে আসছিলাম। কখনো শুনিনি ভারতের উর্ধতন কোনো কর্তৃপক্ষ সে জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বা বিএসএফের এই নির্যাতন বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বরং এর বিপরীতে লোক দেখানো পতাকা বৈঠক ছাড়া তেমন কোনো ব্যবস্থার কথা কেউ কখনো শুনেছেন কিংবা দেখাছেন বলে মনে হয় না।
বিএসএফ ঘটনাটি ঘটায় গত ৯ ডিসেম্বর। কিন্তু আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী কিংবা কোনো গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে এর কোনো ইঙ্গিত বা খবর নেই। আমাদের সাধারণ নীরিহ নাগরিকরা কি শুধু মার খেয়েই যাবে? এরা কি বার বার ফেলানী হয়েই সংবাদপত্রের শিরোনাম হবে? মানবিক মর্যাদা পাওয়ার অধিকার থেকেও কি বঞ্চিত হবে? এই সব নীরিহ জনগণকে দেখভাল করার জন্য কি কেউ নেই? সরকারের কি কোনো দায়-দায়িত্ব নেই? যতদূর জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু কেন?
বার-বার প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিনা উস্কানীতে দেশের মানুষকে এভাবে নির্মম নির্যাতন করবে, হত্যা করবে, ধরে নিয়ে যাবে, যা ইচ্ছে তাই করবে, আর আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চেয়ে চেয়ে দেখবে। মাননীয় পররাষ্ট্র সচিব এবং মানীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলবেন কি, কী হচ্ছে আমাদের সীমান্তে? আমরা কি নাগরিকদের জান-মালের সাধারণ নিরাপত্তাও বিধান করতে পারবো না?
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেলো, অভিযুক্ত ৮ জোয়ানকে বিএসএফ সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ধন্যবাদ সে জন্য ভারতের কর্তৃপক্ষকে। তবে এটাই একমাত্র ব্যবস্থা যেন না হয়। কারণ এ ঘটনা বিএসএফের মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের কথাই বলে। আর না হলে উর্ধতনদের আস্কারা পেয়েই বিএসএফ এমন নৃশংস হয়ে উঠেছে। আমরা চাই এই অমানবিক, বর্বরোচিত নির্যাতনের প্রকৃত বিচার এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণ।
[email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১২