ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মুক্তমত

স্টপ হিটিং দ্য বুশ

আবিদ রহমান, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১২
স্টপ হিটিং দ্য বুশ

ব্যবস্হাপকদের পেশাগত দক্ষতা ও সাফল্য অধীনস্তদের দিয়ে কাজ আদায়ে। সুষ্ঠু, কার্যকর ও ইতিবাচক পরিকল্পনা প্রণয়নে।

নিজে করার চেয়ে অন্যকে দিয়ে কাজ করানোটা বেশ কঠিন। এজন্যে অন্য অনেক গুনাবলীর পাশাপাশি লাগে নেতৃত্ব দেবার সম্মোহনী ক্ষমতা। কথাবার্তায় অন্যকে উদ্দীপিত করার যোগ্যতা।
 
আমাদের ‘রাজনৈতিক বিবেচনার’ হ্যান্ডপিকড মন্ত্রীদের অনেকে মাইক্রোফোনে দূর্দান্ত সাফল্য জনগণকে ‘বিমোহিত’ করার বিরল যোগ্যতা রাখলেও প্রশাসনক বিষয়াদিতে উল্টোটা। জাঁদরেল অনেক নেতা মন্ত্রীত্ব হাসিলের পর  মন্ত্রনালয়ের সচিব মহোদয়ের কাছে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পনে’ থাকেন। আইন ও রীতিনীতির আলোকে সিদ্ধান্ত নেবার সহজাত প্রবৃত্তিটি অনেকের রপ্তে আসেনা। অনেকের ফাইল দেখার ধৈর্য্য ও সময় কোনটাই নেই।   অনেকে আবার বাংলা-ইংরেজির প্রশাসনিক ভাষার গভীরে প্রবেশে অক্ষম হন। কিন্তু মন্ত্রীত্বে তাদের বড় বেশি আগ্রহ। মন্ত্রীত্ব মানেই অকস্মাৎ টাকশালের সন্ধান লাভ। বদলী-তদবীর-পদোন্নতির বাণিজ্য-লক্ষীর আশীর্বাদ প্রাপ্তি। দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তার আয়ের বখরা আদায়। মন্ত্রণালয়ের কাজ-কর্মে উনাদের অনেকের অনাগ্রহ থাকলেও টেন্ডার-প্রকল্পের সংখ্যা, বিদেশি ঋণ-সাহায্যের অংকের হিসাব থাকে ঠোঁটস্হ।
 
মন্ত্রণালয়ের কাজ-কর্মকে অনেক মন্ত্রীর মালুম হয় ‘দু দিনের মায়াবী দুনিয়া’। আজ আছে কাল নেই আশংকা। সেই মনোবৃত্তিতেই অনেক মন্ত্রী কোনো পরিকল্পনা-ভিশন নির্মাণের ‘সময়-খেকো নিবেদন’ থেকে নিজেকে বিরত রাখার পক্ষপাতি। সন্ধ্যার পর বাসা ভর্তি ‘গুনগ্রাহীদের ভীড়, নিজ এলাকার রাজসিক ভ্রমণ, ভিত্তি প্রস্তর স্হাপন ও উদ্বোধনের পরও দিনের বিরাট অংশ অবশিষ্ট থাকে। এই সময়টা কাটনোটাই ঝামেলার! এরমধ্যে আবার আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হবার ইমেজ তৈরির ‘ঝামেলা’ থাকে। সংবাদপত্রের পাতা ও টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাগুলোর জন্যে নিউজ তৈরি না-হলে সহকর্মী মন্ত্রী ও নিয়োগকর্তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ’ইজ্জ্বত’ থাকেনা। যেহেতু কোনো পরিকল্পনা-ভিশন নির্মাণের ইচ্ছা-যোগ্যতা কিছুই নেই সেহেতু চমকপূর্ণ কিছুতো চাই বিকল্পে। থাকা চাই সংবাদ শিরোনামে।
 
ব্যবস্হাপকের দক্ষতা রপ্তে অক্ষম হলেও চমক সৃষ্টিতে অনেক মন্ত্রীর জুড়ি মেলা ভার। অনেকের অন্য ম ন্ত্রণালয়ের বিষয়ে বাগড়ম্বর বক্তব্যে নামেন। অনেকে  মাসুদ রানার মতো সুপার হিরো সাজে ‘গোপন মিশনে’ নামেন!  সশব্দ ’হেলিকপটারে উড়ে একবার অজ-পাড়া গাঁয়ে ‘নিঃশব্দে’ নকল ধরেন। একবার খলিফা হারুন-উর-রশীদের বেশভূষায় একদল কর্মকর্তা সহ মন্ত্রণালয়-দফতরের ঘুষের লেনদেন হাতেনাতে পাকড়াওয়ে সমর্থ্য হন। কেউবা পুলিশ  প্রটেকশনের আড়ম্বরে গিয়ে দালাল ধরেন হাতে-নাতে। ক্যামেরাগুলো ক্লিক ক্লিকে ঝলসে উঠে। স্ট্যান্টবাজিরও একটা সীমা-পরিসীমা থাকা উচিত!
 
মন্ত্রণালয়ের কাজ-কর্ম না-বুঝলে ছেড়ে দিন মন্ত্রীত্ব। কাজ-কর্ম না-থাকলে পুরোনো কাজ-কর্মগুলোকে রিভিউ করুন। মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কাজ-কর্মে গতিশীলতা আনতে সচেষ্ট হোন।
 
কিন্তু সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে স্টপ হিটিং দ্য বুশ।
ইমেলঃ [email protected]

বাংলাদেশ সময় ০৯৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।