একই সঙ্গে লজ্জা এবং ঘৃণা নিয়ে লিখতে হচ্ছে। যে বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই লেখাটা, সেটার জন্য লজ্জা এই কারণে যে, যিনি এই কথাটি বলেছেন, তিনি যে দেশের প্রধানমন্ত্রী! আমার মতো অনেক নরাধম সেই রাষ্ট্রের নাগরিক।
দেশের জন্য গর্বিত হলেও যারা ওখানে দেশটাকে এবং জনগণকে দেখভালের দায়িত্বে আছেন তাদের মন্তব্যে নাগরিক হিসেবে ঘরে-বাইরে আমরা বিব্রত। আর তার বক্তব্যের ভাষা যে সর্বদাই ঘৃণা উদ্রেককারী।
হে আল্লাহ, এই সংবাদটা যেন বাংলা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় মুদ্রিত না হয়। পৃথিবীর কেউ যেন জানতে না পারে, মানুষের মৃত্যু নিয়ে কোনো সরকারপ্রধান এভাবে মজা লুটতে পারেন! বিশ্ব জেনে গেলে জাতি হিসেবে আমাদের মান বলতে আর কিছুই যে থাকবে না।
একদিকে যেমন দেশের ভেতরে এবং সীমান্তে হত্যার মহা উৎসব চলছে, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি এবং দ্রব্যমূল্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দামে মানুষ যখন অস্থির, ঠিক তখনই আমাদের প্রধানমন্ত্রী পরপর দুটো মজা লুটলেন তার স্বভাবসুলভ কটাক্ষমূলক কথা দিয়ে!
আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আক্রোশেই ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরে যেতে হয়। নাস্তানাবুদ হতে হয় সারা বিশ্বের সামনে। আর তাকেই কিনা উনি প্রস্তাব করেছেন, বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বানানোর জন্য!
এটা স্রেফ মজা নয়তো কি? তিনি কি জানেন না যে, বিশ্ব ব্যাংকের মোড়লি করার ক্ষমতা আমেরিকান ছাড়া অন্য কারো নেই? তারপরেও তিনি তা করতে বলেছেন! কেন বলেছেন? এটা কি শুধুই অজ্ঞতা? নাকি ইউনূসকে নিয়ে আবারো তামাশা শুরু করা? এর ভেতরেও কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীর উদারতা খুঁজে পেয়েছেন! নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাটাওয়ালা কেদারা শত্রুকে ছেড়ে দেবার মতো উদারতা আর কি! প্রশংসা না করে উপায় আছে!
দ্বিতীয় মজাটা একই সঙ্গে বেশ নির্মম এবং হতাশাজনক। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির খুনিদের গ্রেফতারের প্রত্যয় ব্যক্ত না করে উনি বলেছেন, ‘সরকারের পক্ষে কারো বেডরুম পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়’। এ রকম নির্মম রসিকতা কোনো প্রধানমন্ত্রী কেন, কারো কাছেই মানুষ আশা করে না। সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের পাঠকের মন্তব্যে, ব্লগে, ফেইসবুকে। ঘৃণার ঝড়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ বিশ্লেষণে এসব প্রতিক্রিয়ার তেমন কোনো গুরুত্ব নেই।
মনে পড়ে সেই বিএনপির আমলের কথা। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত শিশুর পরিবারকে সfন্ত্বনা দিতে বলেছিলেন, ‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন’। যদিও আমাদের দেশে কারো মৃত্যুতে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে এ কথা বলার প্রচলন আছে। কিন্তু উনি তো একজন সাধারণ মানুষ নন, ছিলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে এই মন্তব্যের জন্য তাকে সংবাদপত্রের তীব্র সমালোচনার শিকার হতে হয়েছিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার চেয়েও বড় পদে থেকে আরো বেশি দায়িত্বহীন এবং অমানবিক মন্তব্য করেছেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দায়িত্বহীন মন্তব্যের জন্য সংবাদপত্রগুলো নাম দিয়েছিল, ‘আল্লাহর মাল আলতাফ’। তাহলে প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের জন্য তার কি নামকরণ হওয়া উচিত? পাঠকের কাছে প্রশ্ন।
পাঠক মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ওনার বাবাও বেডরুমে নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন। সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে যদি কেউ এ ধরনের বেফাঁস মন্তব্য করে, ওনার কেমন লাগতে পারে। ১৫ কোটি বাঙালির ঘরে ঘরে পাহারাদার বসানো সম্ভব নয়, সবাই জানে। সেটা কেনইবা করার চিন্তা? আধুনিক রাষ্ট্রে জনগণের নিরাপত্তা বিধানে এ ধরনের হাস্যকর, উদ্ভট চিন্তা দ্বিতীয় কেউ করেছিল কিনা জানা নেই।
জুতো আবিষ্কারের সেই রাজা এবং মুচির গল্প মনে পড়ে? বোকা রাজা ধুলোর হাত থেকে বাঁচতে সারাদেশকে চামড়া দিয়ে ঢেকে দিতে চেয়ে হাসি এবং করুণার পাত্র হয়েছিলেন। কিন্তু নাপিতের গুণে তিনি জুতো আবিষ্কারের এক সহজ পদ্ধতি পেয়ে যান। রাজা বোকা থাকলেও নাপিতের কথা বোঝার মতো বুদ্ধিমান ছিলেন। কিন্তু জনগণরূপী নাপিতেরা বর্তমান সরকারকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েও কথার বাণকে আটকে রাখতে পারছে না। কে বলেছে, আপনাকে বেডরুম পাহারা দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? ওটা একজন বা একটি পরিবারের একান্ত নিজের জায়গা। দেশটাকে নিরাপদ করুন। দরজা খোলা রাখলেও কোনো অপরাধী সাহস পাবে না অপরাধ ঘটাতে।
দেশে আইনের শাসন থাকলে, অপরাধীরা অপরাধের শাস্তি পেলে বেডরুমে পুলিশ পাঠানোর প্রয়োজন কেন? আসল কাজ না করে একের পর এক দাগী অপরাধীর সাজা মওকুফ করে দিচ্ছেন, ফাঁসির আসামিদের দলীয় রাষ্ট্রপতি বেকসুর খালাস করে দিচ্ছেন, দলীয় কর্মীরা অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। এই যখন সার্বিক পরিস্থিতি তখন বেডরুম কেন, কবর ছাড়া মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?
দয়া করে প্রধানমন্ত্রী বলবেন কি, কোথায় আপনারা জনগণকে নিরাপত্তা দিতে পেরেছেন? সীমান্তে মানুষ হত্যা, রাতে-দিনে, রাস্তায়, জনপদে, যানবাহনে, অফিসে, আদালতে, সবখানেইতো মানুষ হত্যার শিকার হচ্ছে। গুম হত্যা সারা বিশ্বে মানুষের টনক নাড়িয়ে দিয়েছে। মানুষের ঘর হবার কথা সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। সেখানে ঢুকে আততায়ী মানুষকে খুন করছে, ঘর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে দেওয়া হচ্ছে। বেডরুমে পারলেন না ভালো কথা, কোথায় পেরেছেন বলবেন কি?
সরকারকে ‘উদ্দেশ্য’ এবং ‘উপায়’ এর মধ্যকার নিগূঢ় পার্থক্যটা বুঝতে হবে। বিশ্বের প্রতিটি সরকারের দায়িত্ব বা উদ্দেশ্য, তাদের নিজ নিজ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিভাবে সেটা করবে সেটা সরকারের কৌশল বা উপায়। সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেডরুম পাহারা দেওয়া একটা উপায় হতে পারে। কিন্তু সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সেটা বাদ পড়ে যাবার কথা। কারণ, মোটের ওপর ১৫ কোটিরও অধিক জনসংখ্যার একটা দেশে তো সম্ভবই নয়, এমনকি ছোট দেশেও সেটা সম্ভব নয়। একটা দায়িত্বশীল এবং গণমুখী সরকার জনগণের নিরাপত্তার সেই দায়িত্বটা পালন করে আরো বিভিন্ন নিরাপত্তা কৌশল কিংবা উপায় ব্যবহার করে।
বেডরুম পাহারা দেবার কথা বলে সরকারের কেউ দায়িত্ব এড়াতে পারে না। বরং প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাদের এবারের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবস্থা কতোটা খারাপ যে, বেডরুম পাহারা দেবার কথা উঠেছে!
আপনাদের অপরাগতায় এবং ইয়ার্কিতে মানুষ রাস্তায় নেমে এলে তখন উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড় চাপিয়ে দেন। সাংবাদিকরা যথেষ্ট সময় দিয়ে বাধ্য হয়ে সহকর্মীদের হত্যায় রাস্তায় নেমে এসেছেন। সেটা নিয়েও প্রশ্ন? আন্দোলনের গায়ে কাদা মাখানোর চেষ্টা? বর্তমানের বিরোধীদল ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও সাংবাদিক হত্যা হয়েছিল, তাই এখনকারটাও মেনে নিতে হবে! কি অদ্ভুত, খামখেয়ালি আব্দার! দেশটা পেছনের দিকে হাঁটার জন্য নয়, সামনে চলার জন্য। পরেরবার আর কেউ ক্ষমতায় এলে আবারো একই যুক্তি দিয়ে দায় এড়াবে!
যুক্তির তামাশা বন্ধ করুন। বিরোধী দলের সীমাবদ্ধতার ছিদ্রপথেই তো আপনাদেরকে জনগণ ক্ষমতায় বসিয়েছে ছিদ্রগুলো ভরাট করতে। আপনার কথা ঠিক রেখে তাহলে বলতে হয়, বিরোধী দলের শাসনামলে এমনটি ঘটেছে, সে কারণে আপনাদেরটাও মেনে নিতে হবে! তাহলে বিরোধী দলকে যেমন ভোটের সময় লাল কার্ড দেখানো হয়েছিল, সামনের নির্বাচনে আপনারাও প্রস্তুত থাকেন লাল কার্ড দেখার জন্য। অনেকে মন্তব্য করেছেন, আর দুটো বছর ইচ্ছেমতো মজা লোটেন! ভোট আসুক। তারপর মজা লোটা ফজা ভাইয়েরা কই যাবেন?
কেউ কেউ আরো সন্দেহমাখা ভঙ্গিতে সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন, তবে কি সরকারি দলের কিংবা সরকারের সঙ্গে প্রভাবশালী কোনো মহল সাগর-রুনি হত্যার সঙ্গে জড়িত? সন্দেহটা একেবারে অমূলক কি? সাগর জ্বালানি ক্ষেত্রের রিপোর্টার ছিলেন বলে খবর বেরিয়েছে। এই জ্বালানিই কি তাদের সংসারে আগুন জ্বালালো কিনা কে জানে! প্রতিবেশী দেশসহ অনেক দেশেরইতো আমাদের জ্বালানির প্রতি লোভ আছে। সাগরের ল্যাপটপ খোয়া যাওয়া দেখে সে রকম ভাবনা আসতেই পারে।
বর্তমান এবং বিগত সব সরকারের সময়ে দেখা গিয়েছে নিজ দলের কেউ জড়িত থাকলে তদন্তের গতিতে ভাটা পড়ে। আসল আসামিরা আড়াল হয়ে জজ মিয়াদের ভয়ঙ্কর অপরাধী হিসেবে আত্নপ্রকাশ করানো হয়। সংবাদপত্রগুলোও প্রভাবশালী মহলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করে বেশ কয়েকটা রিপোর্ট ছেপেছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষমূলক বক্তব্যকে তাই অনেকে মনে করছেন, খুনিদের বিচার থেকে অব্যাহতি দানের চেষ্টা। গোয়েন্দা বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দ্বারা প্রভাবিত হলে মামলার গতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
কোনো কোনো পাঠকের তীর্যক মন্তব্য হচ্ছে, সরকার যদি সারাক্ষণ বিরোধী দল ঠ্যাঙাতে পুলিশ বাহিনীকে ব্যস্ত রাখে, তবেজনগণের নিরাপত্তা দেবার সময় কোথায়? সরকারপ্রধানের এ মন্তব্য থেকে খুনিরা নতুন কৌশল শিখে নিলো কি? কারণ, বেডরুমে কেউ নিহত হলে তার দায়ভারতো সরকারের নয়। এখন থেকে মানুষের ঘর তাহলে সবচেয়ে অনিরাপদ জায়গা!
চলুন তবে, আমরা সবাই রাস্তায় ঘুমাই! এর কয়েকটি ফজিলত আছে। দেশের ভেতর কে গরিব কে ধনী সেটা বোঝা যাবে না, অন্ততঃ রাতে রাস্তায় ঘুমানোর সময়। রাস্তায় গণঘুমানোর কারণে নাগরিক সমাজে ঐক্য প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা আছে! এবং কেউ আততায়ীর হাতে নিহত হলে বিচার পাবার গ্যারান্টি না থাকলেও অন্ততঃ রাষ্ট্র বিচারের দায়িত্ব অস্বীকার করবে না।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী এইতো সেদিন মেঘকে ডেকে নিয়ে তার জীবনের দায়িত্ব নিয়েছেন। মেঘের বাবা-মায়ের খুনি বা খুনিদের অব্যাহতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। সারা জীবন মেঘ তাহলে এমন ব্যক্তির ওপরে কিভাবে আস্থা রাখতে পারবে? তাছাড়া মেঘের প্রতি সেদিনের প্রধানমন্ত্রীর দেখানো আবেগের সঙ্গে এই বক্তব্য সাংঘর্ষিক নয় কি? ওই সহানুভূতি দেখানোটাও কি লোক দেখানো সস্তা জনপ্রিয়তার অংশ ছিল? কে জানে! উনিই একমাত্র বলতে পারবেন সেটা।
এই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে অনেকেই কেন জানি বিভিন্ন কথার মাধ্যমে ঘন ঘন জনগণের সঙ্গে মজা করছেন! কিছুদিন আগেও ফারুক খান ‘কম খান’ মন্তব্য করে জনগণের সঙ্গে মজা করেছেন। শেয়ারবাজারে সব হারিয়ে যখন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের হায় হায় অবস্থা তখন প্রাক্তন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বর্তমানের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের রসিকতা, ‘উনি নাকি শেয়ার বোঝেন না!’
জনগণের সঙ্গে এ মজা লোটার কারণ মন্ত্রী শাজাহান খান কিছুটা বুঝিয়ে দিয়েছেন আরেকটি মজারু মন্তব্য দিয়ে। তার সেই বিখ্যাত মন্তব্য ‘ড্রাইভাররা গরু-ছাগল চিনলেই লাইসেন্স দেওয়া যাবে’ এর মাধ্যমে তিনি বেশ সুন্দর করে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সরকারের কাছে মানুষের দাম গরু-ছাগলের চেয়েও কম। এই সব গরু-ছাগল চেনা ড্রাইভারদের তো মানুষ চেনার দরকার নেই! তাই প্রতিদিন রাস্তাঘাটে মানুষ অবহেলিতভাবে, তুচ্ছভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেও মন্ত্রী আশরাফ বলছেন, ‘দুর্ঘটনা, স্রেফ দুর্ঘটনা! সরকারের কিচ্ছু করার নেই!’ এটা ছিল আরেকটি মজারু নির্মম মন্তব্য।
সীমান্তে মানুষ হত্যা হলে বলছেন, সীমান্তে এটা ঘটা খুবই স্বাভাবিক, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালে বলছেন, স্রেফ অ্যাকসিডেন্ট! সরকারের কিছু করার নেই! ঘর থেকে মানুষ অপহরণ করে নিয়ে হত্যা করলে বলছেন, আর দশটা অপহরণের মতো স্বাভাবিক ঘটনা, সব হারিয়ে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আত্মহত্যা করলেও বিকার নেই! শেষ পর্যন্ত নিজ ঘরে আততায়ীর হাতে মারা গেলেও দায়িত্ব এড়াতে চাইছেন! তাহলে থাকলোটা কি? কোথাও মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারবেন না, তো ক্ষমতায় আছেন কেন বলবেন কি? ক্ষমতায় থাকাটাও কি মজা লোটার জন্য?
আদালত আজকাল বিভিন্ন ব্যাপারে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন রুল জারি করছেন। দয়া করে জনগণকে নিয়ে মজা লোটা আমাদের রাজনীতিবিদদের বেধড়ক মন্তব্য ঠেকাতে একটা কিছু করবেন কি? যদিও আদালত আগে একবার আজকের প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তার একটা মন্তব্যের জন্য। কিন্তু কি লাভ হয়েছে তাতে?
‘ভোট আসুক, আমরাও দেখাবো মজা। ’ পাঠকের করা অসহায় এই মন্তব্য দিয়েই লেখাটা শেষ করতে হচ্ছে। কি আর করা! আশার কিছু দেখছি নাতো!
কে যেন বলেছিল, বাঙালির অবস্থা হচ্ছে, তপ্ত কড়াই থেকে লাফিয়ে জ্বলন্ত উনুনে ঝাঁপিয়ে পড়া। সম্ভবতঃ তীর্যক নীল নামের এক পাঠক কোথাও মন্তব্যটা করেছিলেন। দুই দলের অতীত এবং বর্তমান দেখে খুব একটা স্বপ্নবাজ হতে পারছি না বলে দুঃখিত।
মজা লোটে মজারু
কথা নয়, বিষ কাঁটা
ঠিক যেন সজারু। ।
[email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১২