শনিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে’ বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘সংহতি সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্নেল (অব.) অলি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস হলো, তারা কখনো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি।
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে ২০ দলীয় জোটের এ নেতা বলেন, সরকারকে আহ্বান করবো, একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। বিএনপিকে বলবো, ঘরে বসে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবেন না। রাজপথে নামুন, আমরা ছোট দল, শক্তি যোগাতে পারবো না, তবে আন্দোলন-সংগ্রামে আপনাদের পাশে থাকবো।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে অলি আহমদ বলেন, নির্বাচনে প্রতি আসনে এলাকায় ১০-১২ কোটি টাকা বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগ। তাদের লোকজন হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়েছে। এটার কোনো বিচার হবে না। অথচ খালেদা জিয়াকে মামলার নামে দণ্ডিত করা হয়েছে। এতে কেবল খালেদা জিয়াকে দণ্ড দেওয়া হয়নি, পুরো জাতীয়তাবাদী শক্তিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ-প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, পুলিশের বর্বর আচরণ পাকিস্তানি বাহিনীর আচরণকেও হার মানিয়েছে। পুলিশ রাজনীতির কবর রচনা করেছে। এটা দেশের জন্য সুখকর নয়।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে অলি আহমদ বলেন, আপনিতো ওমরাহ করেছেন, নামাজ পড়েন। বলেনতো অলি আহমদের মতো লোক ২২ হাজার ভোট পাবে? হাজার বছর চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগ ২৮৮ আসন পাবে না। ভোট ডাকাতির কথা প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করলেই পারতেন। আওয়ামী লীগ দাবি করে, তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, আমি বলবো, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হত্যাকারী দল।
‘বাংলাদেশ এখন নিলামে উঠেছে’ মন্তব্য করে ২০ দলীয় জোটের এ নেতা বলেন, এ দেশ বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মুখে জাতীয় ঐক্যের কথা বলেন, তাহলে সব দলের সঙ্গে বসে সমাধান করছেন না কেন? প্রতিদিন বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলেন, বিএনপি ভেঙে যাচ্ছে, বিএনপি নিয়ে এতো মাথাব্যথা কেন? বিএনপির যারা নির্বাচিত হয়েছে, আশা করি, তারা সংসদে গিয়ে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করবেন না।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, এনডিপি চেয়ারম্যান আবু তাহের ও অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
জয়নাল আবেদীন বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংসের পরিকল্পনা অনেক আগে থেকে করা হয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য তৎকালীন প্রধান বিচারপতিকে একদিন জনতার আদালতে দাঁড়াতে হবে।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, জোটকে কার্যকর রাখতে নিজেদের সমন্বয় প্রয়োজন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে গিয়েছে বিএনপি, কিন্তু ভোট মহাডাকাতির পর কেন আন্দোলনে যাচ্ছেন না? আসলে আমাদের কোথাও গলদ আছে, আমরা বোবা হয়ে গেছি।
ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, পাতানো নির্বাচনের পরে কোনো কর্মসূচি না দেওয়ায় আমাদের নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে। গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা কোনো কিছু বলিনি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের কোনো প্রয়োজন ছিল না। এটা আমাদের ডুবিয়েছে। ২০ দল পরীক্ষিত, জোটকে বিতর্কিত করতে সরকার দালাদের দিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৯
টিএম/এইচএ/