শনিবার (২ নভেম্বর) থেকে ওয়ার্কার্স পার্টির চার দিনব্যাপী কংগ্রেস শুরু হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) কংগ্রেসের শেষ দিনে কাউন্সিলের মাধ্যমে দলটির নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবে।
এবারের কংগ্রেসে পার্টির দুই শীর্ষ পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কোনো পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। এ দফায়ও রাশেদ খান মেনন সভাপতি ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাই নিজ নিজ পদে বহাল থাকবেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির একাধিক সূত্র জানায়, গত কয়েক মাস আগে এবারের কংগ্রেসে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে দলের মধ্যে মত বিরোধ তৈরি হয়। সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশকে পার্টির সভাপতি করার জন্য একটি অংশ দাঁড়িয়ে যায়। এ নিয়ে পার্টির মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনাও শুরু হয়। এক পর্যায়ে গত দেড় দুই মাস আগে এবারও রাশেদ খান মেননকে সভাপতি করার ব্যাপারে সব পক্ষ সমঝোতায় আসে। তবে এর পরের কংগ্রেসে তিনি আর সভাপতি থাকবেন না বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতি ৫ বছর পর পর ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। আগামী কংগ্রেসে রাশেদ খান মেননের বয়সও একটি বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। সে সময় পর্যন্ত তিনি কতটা সক্রিয় থাকবেন তাও ভাবনার বিষয়। এবারের কংগ্রেসে ফজলে হোসেন বাদশাকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে মর্মে সব পক্ষে সমঝোতায় পৌঁছেছে।
এছাড়া পার্টির নেতৃত্বের একটি অংশ, বিশেষ করে সাবেক সাধারণ সম্পদাক ও পলিটব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস প্রাথমিক সদস্য পদ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অন্যদিকে নুরুল হাসান, ইকবাল কবির জাহিদসহ কেন্দ্রীয় কমিটির মোট ৮ নেতা কংগ্রেস বর্জন করেছেন। তারা পার্টির বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও কমিউনিস্ট আদর্শ থেকে বিচ্যুতির অভিযোগ তুলেছেন। এ নেতারা আলাদা একটি সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা পার্টি কংগ্রেসে না থাকায় বর্তমান দুই শীর্ষ নেতৃত্বের পুননির্বাচনে কোনো বাঁধা থাকছে না বলেও দলীয় বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
দলের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বাংলানিউজকে বলেন, পার্টির সভাপতিসহ নেতৃত্ব নির্বাচন করবে কংগ্রেস। কে সভাপতি হবেন, কে সাধারণ সম্পাদক হবেন সেটা কংগ্রেসের দায়িত্ব। আমি সভাপতি প্রার্থী না, এটা নিয়ে আমি ভাবি না। আমি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সেটাও বলছি না। কংগ্রেস যাকে নির্বাচিত করবে তিনিই এ পদে অধিষ্ঠিত হবেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচনের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসে একটি কমিটি উপস্থাপন করা হয়। এ কমিটিতে প্রত্যেকেই সদস্য থাকেন। এর বাইরে কেউ থাকলে ও নাম প্রস্তাব হলে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হয়। আর কোনো প্রার্থী না থাকলে প্রস্তাবিত কমিটিই পাস হয়। পরে কমিটির সদস্যরা সভার মাধ্যমে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও পলিটব্যুরোর সদস্য নির্বাচন করে।
রাশেদ খান মেনন ২০০০ সাল থেকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি পদে রয়েছেন। এবার সভাপতি হলে সব মিলিয়ে পঞ্চম বারের মতো তিনি এ দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে ১৯৯২ সালে ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সঙ্গে ওয়ার্কার্স পার্টি এক হওয়ার পর অমল সেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হন। তখন রাশেদ খান মেনন নির্বাচিত হন সাধারণ সম্পাদক। ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
এসকে/এইচজে