ঢাকা: আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় সম্মেলনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদে (কেন্দ্রীয় কমিটি) বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসছে না বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে জাতীয় নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানান তিনি।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের নির্মাণাধীন মঞ্চ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ওবায়দুল কাদের।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়াদী উদ্যানে বিশাল মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। নৌকার আদলে নির্মিত এই সম্মেলন মঞ্চ এবং মাঠের প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে মঞ্চ ও সম্মেলন ভেন্যু ঘুরে দেখেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই দেশকে সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা জাতির কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাবো এবং আমাদের মুল্য লক্ষ্যই হচ্ছে উন্নত ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সুশৃঙ্খল সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ গড়ে তুলতে প্রস্তুত। আমরা প্রস্তুত আগামী নির্বাচনের পর সরকার পরিচালনার জন্য।
দলের সাধারণ সম্পাদক পদে আপনি আবারও থাকছেন কিনা—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সভাপতি আমাদের অপরিহার্য, যিনি সভাপতি আছেন তিনি আমাদের ঐক্যের প্রতীক। কাউন্সিলরদের একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না যে, তাকে সমর্থন করবে না। কাজেই এই নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকেরই ইচ্ছা থাকতে পারে। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল। আমার জানা মতে ১০ জন অন্তত প্রার্থী আছেন, যারা সাধারণ সম্পাদক হতে চান। কাজেই কে সাধারণ সম্পাদক হবেন সেটা নেত্রীর ইচ্ছা এবং কাউন্সিল অধিবেশনে কাউন্সিলরদের মতামতে এর প্রতিফলন ঘটবে। আমি এই মুহূর্তে কোন প্রেডিকশনে যেতে পারি না। সময় এখনও ম্যাচিউর হয়নি। আমার জানা মতে, আমাদের অন্তত ১০ জন আছেন সাধারণ সম্পাদক হওয়ার যোগ্য।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে নতুন মুখ আসছে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক বলেন, এবারের সম্মেলনে যে কমিটি হবে, সেখানে তেমন একটা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। আমরা পরবর্তী সম্মেলন নির্বাচনের পর আগামও করতে পারি। সে রকমও চিন্তা-ভাবনা আছে। তখন একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হবে। আপাতত বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের ব্যাপারে ভাবছি না।
বিতর্কিতরা বাদ যেতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কেউ পারফেক্ট মানুষ না, ভুল-ত্রুটি নিয়েই মানুষ। পারফেক্ট কেউ না, কাজেই পূর্ণতা খুঁজতে গেলে অনেক কিছুই চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। বিতর্কিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে আমাদের চিন্তা-ভাবনা আছে।
সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবার সবচেয়ে আগে কাউন্সিলর ডেলিগেটদের কার্ড গতকালই নিয়ে গেছে। অনেকেই ঢাকা আসতে শুরু করেছেন। স্মরণকালের সম্মেলন হবে। সারা দেশে একটা জাগরণের ঢেউ আছে। সম্মেলনে আমাদের নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও তাঁর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ। ২০৪১ পর্যন্ত আমাদের যে ভিশন, উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাবো। এবারের সম্মেলন হবে চ্যালেঞ্জিং টাইমে। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় আমরা যে সংকটে আছি। এই সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে আমরা এই সম্মেলনে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ উপস্থিতি, সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত উপস্তিতির মাধ্যমে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পদাক মির্জা আজম, এসএম কামাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয় সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২২
এসকে/এমজেএফ