ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: আগামী ৪ জানুয়ারি ২০২৩-এ ৭৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি সম্পর্কে জানানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি সম্পর্কে জানান ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
তিনি বলেন, সময়ের প্রয়োজনে আজ থেকে ৭৫ বছর আগে বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও মুক্তির মহান নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বর্তমানেও সেই ছাত্রলীগ সময়ের প্রতিটি প্রয়োজনে নিজের সর্বোচ্চটুকু বিলিয়ে দেওয়ার ব্রতকে ধারণ করে পথ চলছে। এদেশের প্রতিটি প্রজন্মে, প্রতিটি তারুণ্যে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অনুভূতিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শ্রেষ্ঠতম স্থানে অবস্থান করেছে, করছে এবং আগামীতেও অবধারিতভাবে করবে। তাই ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশরত্ন শেখ হাসিনার পরিকল্পিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ নেতৃত্ব দেবে ছাত্রলীগ, ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে এটিই আমাদের সংকল্প।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তরুণ প্রজন্ম ও ছাত্রসমাজের পক্ষে দৃঢ়চিত্তে উচ্চারণ করছে- দেশমাতৃকার প্রয়োজনে অতীতের ন্যায় আগামীতেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সব অপশক্তি, মৌলবাদী-জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে, পেট্রোল-বোমা ও অগ্নি সন্ত্রাস রুখে দিতে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও মানুষের জানমাল রক্ষার্থে, শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্ন শিক্ষাজীবন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস বজায় রাখতে জীবন উৎসর্গ করতেও বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করবে না।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হবে কর্মসূচি। এরপর সকাল ৮টায় ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে সাড়ে ৮টায় ঐতিহ্যবাহী কার্জন হলে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এরপর বিকেল ৩টায় শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে। ৫-৮ জানুয়ারির মধ্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, স্বেচ্ছায় রক্তদান এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
সাদ্দাম হোসেন জানান, বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সুবিধাজনক সময়ে দেশের ওয়ার্ড পর্যায়ে সাংগঠনিক ভাবে অনাবাদি জমিতে শাকসবজি, ফল, মাছ চাষ ও গৃহপালিত পশু-পাখি প্রতিপালিত করবে ছাত্রলীগ। প্রগতিশীল ছাত্র সমাজ যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে এবং উদার মানবিক গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মুল্যবোধে বিশ্বাস করে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজ শীর্ষক ও বিনিময় সভা আয়োজন করা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণাকে জনপ্রিয় করতে আয়োজন করা হবে ‘কনসার্ট ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ ও একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান।
ছাত্রলীগ সভাপতি জানান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৫ বছর শীর্ষক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা হবে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ আইডিয়া কনটেস্ট’ আয়োজন করে তরুণদের কাছ থেকে সৃষ্টিশীল ধারণা নেওয়া হবে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী ছাত্র সমাজ গঠনে ছাত্রলীগের সব সংগঠনিক ইউনিটের দলীয় কার্যালয়ে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক প্রতিযোগিতা এবং জাতীয়ভাবে স্মার্ট ইয়ুথ ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে। শিক্ষার্থীদের তৈরি ২ মিনিট দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নিয়ে শর্ট ফিল্ম প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ডেভেলপমেন্ট কুইজ, নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেশব্যাপী ‘নারী ক্ষমতায়ন এবং শেখ হাসিনা’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা, স্মার্ট বাংলাদেশ এবং স্মার্ট ক্যাম্পাস নিয়ে বাইরের দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও নেতাদের সঙ্গে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন আয়োজন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তিগত বিভিন্ন প্রতিযোগিতা নিয়ে আয়োজন করা হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ অলিম্পিয়াড’। এছাড়াও মেধাবী ও ডিন’স অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে চা চক্রের আয়োজন এবং ‘Smart Bangladesh Our Country Our Dream’ শীর্ষক পোস্টার প্রদর্শনীসহ অন্যান্য কর্মসূচি ধীরে ধীরে ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
এসকেবি/এসএ