ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

দেশের যে অবস্থা তাতে নিষেধাজ্ঞা আসা স্বাভাবিক: আমির খসরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৩
দেশের যে অবস্থা তাতে নিষেধাজ্ঞা আসা স্বাভাবিক: আমির খসরু

ঢাকা: বর্তমানে বাংলাদেশের যে অবস্থা, তাতে নিষেধাজ্ঞা আসা স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার (৮ জানুয়ারি) ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

 
জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) ঢাকা মহানগর উত্তর।

নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দূতাবাসকে সতর্ক থাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশের যে অবস্থা তাতে নিষেধাজ্ঞা আসবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ এখানে ভালো কিছু হচ্ছে না। গুম খুন করা হচ্ছে। দূতাবাসের কাজ হলো জনগণের পক্ষে কাজ করা। নিষেধাজ্ঞা ঠেকানোর কাজ তাদের না।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের হাত থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করতে হলে একটা ট্র্যাকে আসতে হবে। সেজন্যই তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রুপরেখা ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয়, যারা শিক্ষিত ও দক্ষ, অভিজ্ঞ তাদের সমন্বয়ে উচ্চ কক্ষ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে করে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ হবে।

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে তারেক রহমান ঘোষিত ২৭ দফা রুপরেখা বিএনপির আন্দোলনের অংশ বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, যিনি এ ধরনের রুপরেখা দিতে পারেন তাকে বলা হয় ‘স্টেটসম্যান’ । আর তারেক রহমান সেই কাজটিই করেছেন। তার দক্ষতা ও যোগ্যতাকে তিনি বিশ্ব দরবারে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, একটা কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য স্বাস্থ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই খাতে ১ শতাংশ জিডিপিরও ব্যবহার নেই বললেই চলে। কারণ এখানে সরকারের দুর্নীতি বেশি। ফলে দেশের মানুষকে নিজের টাকা খরচ করেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। যা আফগানিস্তানের চেয়েও খারাপ।

এসব বিষয়ে সারাদেশে সেমিনার করা জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি পরিবারকে সরকারিভাবে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হলে তার প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ হয়। এতে তার খরচ কমে। একটি পরিবার যদি মাসে ৫ হাজার টাকা বাঁচাতে পারে, তাহলে সেই পরিবারের ক্রয় ক্ষমতা বেড়ে যাবে। সেই টাকা ছেলে মেয়েদের পড়ালেখায় খরচ করতে পারবে। দেশের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে পারবে।

বর্তমানে দেশে লুটপাট চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেগা প্রজেক্ট করা হচ্ছে টাকা লুট করে বিদেশে পাচারের জন্য। একটা গাড়ি আছে আরেকটা কিভাবে কেনা যায় সে জন্য। ৬৫ শতাংশ সংসদ সদস্যই ব্যবসায়ী। তাদের আইন প্রণয়নের সময় আছে?

বিএনপি ঘোষিত ২৭ দফা দেশের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, জনগণকে ২৭ দফার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে হবে। কারণ তারা জানতে চাইছে যে, শেখ হাসিনা চলে গেলে কী হবে? সে জন্যই কিন্তু আমরা ২৭ দফা রুপরেখা দিয়েছি। এই দফাগুলো হলো আমাদের আন্দোলনের অংশ। এর মাধ্যমে আমরা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব।

২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন না হলে দেশ সঠিক পথে চলবে না মন্তব্য করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,  দেশ ও জনগণের স্বার্থে এই ২৭ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে স্মার্ট বাংলাদেশের নামে স্মার্ট ভোট চুরি, শেয়ারবাজার লুট হবে। ১০ লাখ কোটি টাকার মতো বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। দেশকে গভীর গর্ত থেকে তুলে আনতে হলে ২৭ দফার বিকল্প নেই।

তিনি আরো বলেন, ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হলে জনগণের সঙ্গে কিছু চুক্তি বা ওয়াদা দিতে হবে। সেটাই করেছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। যা রাজনীতিবিদরা খুব একটা করেন না। রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা দিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বের যোগ্যতা অনেক উপরে স্থান পেয়েছে। যা বিদেশিরাও প্রশংসা করছেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর। ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাবের সভাপতি ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীমের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান।  

এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাবের মহাসচিব ডা. এ এস এম মো. মাসুম বিল্লাহর পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, ড্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২৩
এসসি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।