বাগেরহাট: দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাগেরহাট জেলা যুবলীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী এ সংগঠন পাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
নতুন নেতৃত্বের আশায় দিন গুণছেন কর্মীরা। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ জানুয়ারি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এটাই বাগেরহাটে সর্বকালের সেরা সম্মেলন হবে বলে জানিয়েছেন জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
জেলা যুবলীগ সূত্রে জান যায়, সর্বশেষ ২০০৬ সালে বাগেরহাট জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়েছিল। যুবলীগ নেতা খান মুজিবুর রহমানকে সভাপতি ও শামীম হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়। অজানা কারণে ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। এরও চার বছর পর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সরদার নাসির উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ২৪ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রায় অর্ধযুগ পরে এ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ২৫ তারিখের এ সম্মেলন হবে বাগেরহাট শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে। সম্মেলন বাস্তবায়ন করতে মিডিয়া উপকমিটি, মঞ্চ ও সাজ-সজ্জা কমিটি, প্রচার কমিটি, শৃঙ্খলা কমিটিসহ মোট ১৪টি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিগুলো স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করছে। এরই মধ্যে সম্মেলন স্থলের সাজ-সজ্জার কাজও শুরু হয়েছে। সম্মেলনের আগ মুহূর্তে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে বর্ধিত সভা চলছে। এবারের সম্মেলনে জেলা আহ্বায়ক কমিটির ২৪ জন এবং উপজেলা পদমর্যাদার ১০টি সাংগঠনিক ইউনিটের ২৫০ জন কাউন্সিলর অংশগ্রহণ করবেন। কাউন্সিলর ছাড়াও লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগম হওয়ার কথা রয়েছে এ সম্মেলনে। এবার ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে বাগেরহাটে। এরই মধ্যে পদপ্রত্যাশীরা জীবন বৃত্তান্ত পাঠাতে শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হচ্ছে দেখে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। নিজেদের ছবিসহ শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার ও ব্যানার টাঙানো হচ্ছে।
বাগেরহাটের রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ সম্মেলনে বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য বেগম হাবিবুন নাহার, বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ কামরুজ্জামান টুকু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মনোয়ারুল কমির মিন্টু বলেন, যুবলীগে যোগদানের পর এবারই প্রথম সম্মেলনের আয়োজন দেখছি। আশা করি, অনেক বড় সম্মেলন হবে। সেভাবেই জেলা কমিটি আয়োজন করছে সব কিছু। আমরাও বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করছি।
মো. মনিরুল ইসলাম নামে আরেক যুবলীগ কর্মী বলেন, নিয়মিত কমিটি গঠন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও সম্মেলন হলে দলীয় নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হন। দীর্ঘদিন পরের এ সম্মেলন ঘিরে আমাদের নেতাকর্মীরা জেগে উঠেছেন। এত বড় আয়োজনে অনেক কিছু শিখতেও পারছি আমরা।
হাসিবুল ইসলাম নামে আরেক কর্মী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আহ্বায়ক কমিটিতে চলছিল জেলা যুবলীগ। এবার একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাব। এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে সঠিক নেতৃত্ব আসবে বাগেরহাট জেলা যুবলীগে।
সম্মেলন প্রস্তুত সংক্রান্ত মিডিয়া উপকমিটির আহ্বায়ক লিটন সরকার বলেন, সম্মেলন উপলক্ষে পদপ্রত্যাশীরা কেন্দ্র্রীয় কমিটির কাছে তাদের জীবন বৃত্তান্ত পাঠাতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি নেতারা কর্মীদের সঙ্গে এবং কর্মীরা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। সব মিলিয়ে সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজে বিরাজ করছে।
বাগেরহাট জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সরদার নাসির উদ্দিন বলেন, এবারের সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। এ সম্মেলনকে সফল করতে আমরা সব ধরনের চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে ১৪টি উপকমিটি করা হয়েছে। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে বর্ধিত সভা করা হচ্ছে। সম্মেলনে নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবেন। আশা করি, এ সম্মেলনে লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগম হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
এসআই