ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

হরতাল-অবরোধ হবে কিনা জনগণই নির্ধারণ করবে: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩
হরতাল-অবরোধ হবে কিনা জনগণই নির্ধারণ করবে: ফখরুল

ঢাকা: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফার আন্দোলনে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি আসবে কিনা তা ভবিষ্যতে জনগণই নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রার কর্মসূচি দিয়েছি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর প্রতিবাদে আমরা আবারো রাজপথে কর্মসূচি দেবো।

সামনে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি থাকবে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন পর্যন্ত নেই। ভবিষ্যতে আসবে কিনা এটা বলতে পারবো না। প্রয়োজন বলে দেবে, প্রয়োজন বলে দেবে ভবিষ্যতে কী হবে? জনগণই বলে দেবে। জনগণ যদি বলে যে, এখন হরতাল চাকা বন্ধ, তখন চাকা বন্ধ হবে। জনগণ বলবে। আমরা তো বলছি, শান্তিপূর্ণ, একেবারে পিসফুল। আমরা সবসময় পিসফুল প্রোগ্রাম চাচ্ছি-আমরা বিশ্বাস করি এটাতে।

হরতালের কর্মসূচির বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মধ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, সমস্যাটা ওই জায়গায়। এর আগে আমি অনেকবার বলেছি যে, আপনারা আন্দোলন বলতেই ওইটা (হরতাল-অবরোধ) বোঝেন। সমস্যাটা ওইটাই আর কি- এটা ঠিক না। আপনি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দেখেন। ওখানে কয়টি হরতাল হয়? হরতাল হয় না। আন্দোলন হয়। রাস্তায় লোক নামে, লাখ লাখ লোক হেঁটে যায়… ভারত জুড়ে প্রোগ্রাম করলো কংগ্রেস। হাঁটলো ১৪৯ দিন ধরে, হাঁটছে.. এগুলোই তো আন্দোলন। আমরা যে কর্মসূচি করছি-এগুলো কি আন্দোলন না। এ আন্দোলনের মাধ্যমে দেখবেন একদিন জনমত এমন জায়গায় আসবে যে, তখন ওই হরতাল দিতে হবে না। ওরা এমনিতেই চলে যাবে।

তিনি বলেন, ওরা (সরকারি দল) তো অলিখিতভাবে, অঘোষিতভাবে হরতাল দেয়। আমরা যখন বিভাগীয় সমাবেশ করেছিলাম তখন তারা তিনদিন আগে থেকে হরতাল দেয়, সব বন্ধ করে দেয়, রাস্তা-ঘাট, বাস-ট্রাক, স্টিমার-লঞ্চসহ পরিবহন।

১০ দফার চলমান আন্দোলন কোন পথে যাবে, কোন পর্যায় যাবে তা ভবিষ্যতে বলে দেবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল, ভাঙচুর করেছিল সেটা আপনারা জানেন। তবে আমরা এটা মনে করি না, আমরা বিশ্বাস করি যে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই তাদের পরাজিত করব।

সরকারকে পাল্টা কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। আবারো তারা ইউনিয়ন পর্যায়েও পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এতে আওয়ামী লীগের যে মূল চরিত্র সেটা উন্মোচিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে সন্ত্রাসের দল, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসে খুব ভালো। এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, তারা সন্ত্রাস, ত্রাস সৃষ্টি করা, ভয় দেখানো, আক্রমণ করা, হামলা করায় অত্যন্ত পারদর্শী। তো ওইভাবে তারা আবারো আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে নস্যাৎ করার জন্য পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। এ পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে তারা গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে, পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে তারা দেশের স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আমি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি আওয়ামী লীগকে তারা ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন।
 
মির্জা ফখরুল বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। আওয়ামী লীগ প্রথম থেকে উসকানি দিয়ে, হুমকি দিয়ে বিভিন্নভাবে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। আমরা অত্যন্ত সচেতনভাবে সেই সংঘাত এড়িয়ে চলেছি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১০ দফা দাবি আদায়ে আবারো ঢাকা মহানগরের ৯ ও ১২ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা হবে। ৯ ফেব্রুয়ারি মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে গোপীবাগ ব্রাদার্স ক্লাবের মাঠ থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত এবং ১২ ফেব্রুয়ারি মহানগর উত্তরের উদ্যোগে শ্যামলী ক্লাব মাঠ থেকে লিংক রোড, শিয়া মসজিদ মোড়, তাজমহল রোড, নূরজাহান রোড, বিআরটিসি বাস স্ট্যান্ড মোড়, মোহাম্মদপুর আল্লাহ করিম মসজিদ সড়ক হয়ে বছিলা সাত রাস্তার মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২৩
এমএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।