ঢাকা: যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১১ মার্চ ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সাতটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।
বিরোধী মতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন ও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান জোটের শরিক দল ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু।
শনিবার (৪ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
সমাবেশ শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, সিন্ডিকেট ও লুটপাটের কারণে মানুষের জীবন আজ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। মানুষ দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে। এই সরকার বারবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার মানুষের দিকে নজর না দিয়ে বিদেশি প্রভুকে খুশি করার জন্য ১১ বিলিয়ন ডলার ভারতকে উপঢৌকন দিচ্ছে আদানির মাধ্যমে। এটা কোনো চুক্তি নয়। এটা ভারতকে খুশি করার জন্য করেছে। অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল না করলে মানুষ গণবিক্ষোভে ফেটে উঠবে।
গণতন্ত্র মঞ্চকে আরও শক্তিশালী হয়ে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে বাবলু বলেন, রাজনীতিতে অনেক খেলাধুলা শুরু হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে সরকার সংলাপ নিয়ে কথাবার্তা বলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা আগেও বলেছি, সংলাপ হতে পারে একটি মাত্র শর্তে, যদি সরকার পদত্যাগ করে এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়। সরকার এটি ঘোষণা দিলে তারপর তাদের সঙ্গে সংলাপে বসবে গণতন্ত্র মঞ্চ।
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকট মোকাবিলায় একটাই উপায় সরকারের কাছে আছে। সবকিছুর দাম বাড়াও। মানুষের পকেট থেকে আরও টাকা হাতিয়ে নাও। জনগণের ঘাড়ের ওপর সব সংকটের বোঝা চাপিয়ে দাও।
সরকার তাদের লুটপাটের জমিদারি রক্ষা করার জন্য ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশের মানুষ এটি বুঝে গেছে। এবার আর দমন-পীড়ন ও বিদেশিদের খুশি করে সরকার রেহাই পাবেন না। জনগণ তাদের রেহায় দেবে না। মানুষ রাজপথ দখল নিয়ে তাদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাবে। সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার বিদ্যুতের দাম কমাতে পারছে না বরং হু হু করে বাড়ছে দ্রব্যমূল্যের দাম। অথচ তারা তথাকথিত জিডিপি নিয়ে মিথ্যাচার করছে। দেশের অর্থনীতি যেকোনো সময় হুড়মুড় করে ভেঙে যেতে পারে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে হামলা করে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা এখন গণতান্ত্রিক ধারার রাজনৈতিক দল থেকে একটি সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ বুঝে গেছে এখন কোনোভাবেই আর ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না, এজন্য তারা প্রতিনিয়ত হামলা-মামলা করছে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারী অ্যাড. হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানসহ গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যান্য নেতাকর্মীরা। সমাবেশ শেষে তারা সেগুনবাগিচা হয়ে কাকরাইল পর্যন্ত গণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২৩
এসসি/এমজেএফ