ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

রাজনীতি

৫ সিটিতে সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে বিজয় চায় আ. লীগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
৫ সিটিতে সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে বিজয় চায় আ. লীগ

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে বিজয় নিশ্চিত করতে চায় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচন যাতে কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়- সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে চায় দলটি।

জানা গেছে, গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচনের কয়েক মাস পরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তার আগে আসন্ন সিটি নির্বাচন ক্ষমতাসীনদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।

এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। দলগত সিদ্ধান্তে তাদের এ অবস্থান বলে জানা গেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না বলে অনেক আগে থেকেই দলটির নেতারা বার বার ঘোষণা দিয়ে আসছেন। সে হিসেবে আসন্ন সিটি নির্বাচনে দলটি অংশ নেবে না, এটাই প্রতীয়মান। দলীয়ভাবে না হলেও দলটি থেকে স্বতন্ত্রভাবে অনেকেই অংশ নিতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়টিকে ধরেই অগ্রসর হচ্ছেন। এক্ষেত্রে বিএনপি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলে নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হতে পারে। এমনকি কোথাও কোথাও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হতে পারেন প্রার্থীরা। যে কারণেই এবারের সিটি নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই আওয়ামী লীগ মাঠে নামছে বলে দলটির নেতারা জানান।

চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছর জানুয়ারির শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচন তাই অত্যধিক গুরুত্ব বহন করে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটির ভোটে জয়-পরাজয় সরকার ও দলের জনপ্রিয়তার ওপর প্রভাব ফেলবে। হেরে গেলে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে বলেও আওয়ামী শীর্ষ নেতারা মনে করছেন। তাই সিটির এ নির্বাচনে কোনো বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে নেতারা এগিয়ে চলেছেন।

আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন; খুলনা ও বরিশাল সিটির নির্বাচন ১২ জুন। ২১ জুন  ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন। এসব নির্বাচনে মেয়র পদে ৪১ জন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে দলীয় ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে গাজীপুরে ১৭ জন; সিলেটে ১০; বরিশালে ৭; খুলনা ৪ ও রাজশাহীতে তিনজন।

বড় দল হিসেবে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়াকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। তবে দলের প্রার্থী মনোনয়নের পর মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্য প্রার্থীদের ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামানো অনেক সময় বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সিটি নির্বাচনেও এ ধরণের সংকট রয়েছে বলে নেতারা মনে করছেন।

কারণ, মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের প্রায় প্রত্যেকেরই স্থানীয় নেতাকর্মী এমনকি সাধারণ ভোটারদের উপরেও কম বেশি প্রভাব রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দলের বিজয় নিশ্চিত করতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামানোকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

দলটির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও রাজশাহীর সিটি করপোরেশেনের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ দুই সিটিতে আভ্যন্তরীণ কোন্দলও কম। দুই প্রার্থীর পক্ষে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা কার্যত ঐক্যবদ্ধভাবেই কাজ করবে।

সংকট রয়েছে গাজীপুর ও সিলেটে। এ দুই সিটিতে নেতাকর্মীদের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবব্ধ করার যেমন বিষয় রয়েছে; বিএনপি দলীয়ভাবে বা বিএনপির কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাও এখানে মোকাবিলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের বিকল্প নেই বলেই নীতিনির্ধারকরা মনে করেন।

এ ব্যাপারে কথা হয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আব্দুর রহমানের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় পর্যায়ের এই নির্বাচনকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। পাঁচ সিটিতে দলের মেয়র প্রার্থীর বিজয় যাতে নিশ্চিত করা যায় সেজন্য আমরা দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী প্রচারে নামাতে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তিনি বলেন, দুয়েক জায়গায় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী অনেক। এতে আভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতাও বেশি। এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন তবে উৎকণ্ঠিত না। কোন্দল, ভুল বোঝাবুঝি যাতে না থাকে প্রার্থী চূড়ান্ত করার পর সে চেষ্টা করা হবে।

আব্দুর রহমান আরও বলেন, বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচনে না গেলেও স্থানীয়ভাবে তাদের প্রার্থী থাকবে বলে মনে হচ্ছে। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ হবে সেটা মাথায় রেখেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। পাশাপাশি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। এই নির্বাচন যাতে কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে জন্য আমরা দলীয় নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানাবো। তারা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে যাতে সহযোগিতার হাত যাতে বাড়িয়ে দেয়। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে উন্নয়ন মহাযজ্ঞ চলছে তাতে মানুষ অকৃতজ্ঞ হবে না এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীদেরকেই বিজয়ী করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
এসকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।