ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে খুন হন ছাত্রলীগ নেতা সবুজ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৩
ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে খুন হন ছাত্রলীগ নেতা সবুজ সবুজ শেখ

রাজবাড়ী: ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে রাজবাড়ী সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সবুজ শেখকে (২৯) হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার পরিবারের।

সবুজ শেখ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা এলাকার শামসুল আলম বাবুর ছেলে।

তিনি বরাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদের ভাতিজা।

সবুজের চাচাতো ভাই সজিব শেখ বাংলানিউজকে জানান, সবুজ ও তার কয়েক বন্ধু মিলে উড়াকান্দা পদ্মা নদীর পাড়ে গল্পগৃহ রিসোর্টে (ইউকে বিচ) বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য ডিজিটাল বৈদ্যুতিক নৌকা, জাম্পিং স্লিপারসহ বিনোদনের বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। এই ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই প্রতিপক্ষ আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত ছিল। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

প্রত্যাক্ষদর্শী জুয়েল শেখ বাংলানিউজকে বলেন, উড়াকান্দার গল্পগৃহ রিসোর্টে আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন রাইড নিয়ে আসি। ঈদ উপলক্ষে রাইডগুলোতে চাপ থাকায় গতকাল আমরা হিসাব নিকাশে বসি। সারাদিন আমরা রিসোর্টেই ছিলাম। পরে রোববার রাত সাড়ে ৯টার পর সবুজসহ মোট নয়জন সবুজের বাড়িতে গিয়ে তার ঘরে বসে রিসোর্টের রাইডের টাকার আয়ের হিসেব করছিলাম। আমি সবার শেষে রাত ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে যাই। আমি ঘরে ঢোকার পরপরই বাইরে থেকে মানুষের আসা যাওয়ার শব্দ পাই। হঠাৎই সবুজের বাড়ির সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দুর্বৃত্তরা আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর রুমের বাইরে থেকে জানালা দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে সবুজের কপালে এবং ঘরের মধ্যে থাকা সজিব নামে এক যুবকের পেটে ও পায়ে গুলি লাগে।  

এসময় ঘরের মধ্যে থাকা অন্যরা দরজা খুলে দৌঁড়ে বাইরে চলে এলে দুর্বৃত্তরা চলে যায়। তাৎক্ষণিক সবুজ ও সজিবকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই সবুজ মারা যায়।

নিহত সবুজ শেখের মা সুজলা বেগম বলেন, ওরা আমার সন্তানটারে কাইরা নিল। আমার সবুজরে ওরা মাইরে ফেলাইলো। কি দোষ করছিলো আমার সবুজ। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।

সবুজের স্ত্রী সুফিয়া বলেন, আমার স্বামীর রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কারণে অনেক শত্রু ছিল। এই শত্রুতার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

রাজবাড়ী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। সবুজ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত নেতা ছিলেন। তার মৃত্যর কারণ উৎঘাটন করে দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

** নিজ বাড়িতে গুলিতে নিহত ছাত্রলীগ নেতা 

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।