ঢাকা: রাজধানীর মিরপুর পল্লবীর আওয়ামী লীগ নেতা মো. খলিলুর রহমান খলিলের সঙ্গে এক গৃহবধূর আলাপন ফাঁস হয়েছে। ফোনালাপে ওই নারীকে খলিলের কাছে বিয়ের জন্য আর্তনাদ করতে শোনা গেছে।
ফোনালাপটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন ভাইরাল। ২১ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের অডিওটি স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সুশীল সমাজে বড় সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়ভাবেও বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা-সামলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, খলিল পল্লবীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি পদপ্রার্থী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
অডিও ফাঁসের বিষয়টি নিয়ে পল্লবীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, খলিলের মতো লম্পট-চরিত্রহীন লোকের কারণে আওয়ামী লীগের বদনাম হচ্ছে। খলিলের বিরুদ্ধে এর আগেও যাত্রাবাড়ী থানায় ধর্ষণ মামলা রয়েছে। তার মতো চরিত্রহীন মানুষকে আর ওয়ার্ড কমিটিতে চাচ্ছেন না নেতারা।
২১ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের অডিওটির একটি অংশে দুই সন্তানের মা ওই নারীকে মো. খলিলুর রহমান খলিলের কাছে বিয়ের দাবি করতে শোনা গেছে।
যা শোনা গেল...
আলাপের শুরুটি হয় সালামের মাধ্যমে। এরপর ওই নারী অভিযোগ করেন খলিলের স্ত্রী তাকে মেরেছেন। তিনি ধারণা করছেন, খলিলই তার স্ত্রীকে দিয়ে এ কাজ ঘটিয়েছেন।
খলিল অবশ্য বিষয়টিকে পাত্তা না দিয়ে কথার মোড় অন্য দিতে ঘোরাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই নারী বারবার তার সমস্যাগুলো উল্লেখ করে সমাধান চান। নিজের চিকিৎসার কথাও বলেন। দুজনের কথাবার্তার এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীকে বলতে শোনা যায়, আমার জীবনটারে শেষ করলেন আমারে ভোগও করলেন আর বউটারে দিয়া ইচ্ছামত পিটানটাও খাওয়ালেন মান ইজ্জতটা ও রাখলেন না আমার সংসারটাও যায় যায় অবস্থা। আপনি যদি এটি দ্রুত সমাধান করতেন তাহলে এত কিছু হইতো না।
খলিল তখন বলেন, সমস্যার তো সমাধান দিলাম। ভুক্তভোগী আবার বলেন, কই আপনি সমাধান দিছেন আমারে? আপনারে আমি বুঝাই পর্যন্ত বললাম। যেমন গার্জেনরা (অভিভাবক) সব জানছে এখন অন্যভাবে। আপনি একটু বসেন তাগোর সাথে। আপনি মানেন না।
কিছুক্ষণ এসব ব্যাপারে কথা হওয়ার পর খলিল ২৫ তারিখে কিছু একটা করার কথা বলেন। ভুক্তভোগী এ সময় তাকে বলেন, আমার স্বামীর কান পর্যন্ত আয়া পড়ছে। আমার তো সংসারই টিকবো না। জানাইছে তো আমার ছোট কাকি জানাইছে। আমি আপনারে কিন্তু এটাও বলছি যে ভাই আমার কথা মানবো না। যেহেতু এখন গার্জেনের (অভিভাবক) হাতে গেছে গা। এ সময় খলিল আবারও বিষয়টি সমাধান করবেন বলে আশ্বাস দেন।
ভুক্তভোগী কী সমাধান চায়, জানতে চান খলিল। ওই নারী বলেন, আপনি আমারে বিয়ে করেন। আমার মান গেছে ইজ্জত গেছে। সংসার গেছে, আমার স্বামীও রাখবো না আমারে। আমারে বিয়ে কইরালান। আমার সংসারটা আর কোনোভাবে থাকবো না। এখন বিয়ে কইরালান। বিষয়টি নিয়ে খলিল আর কোনো উত্তর দেননি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। মো. খলিলুর রহমান খলিলের বউ ওই মহিলাকে পিটিয়েছে। এরা মাদক ব্যবসায়ী, ভূমি দস্যু। যারা আওয়ামী লীগের বদনাম করে, প্রধানমন্ত্রীর বদনাম করে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি বলেন, খলিল জায়গা জমির ব্যবসা করে এটা আমি জানি। অডিও রেকর্ডের ব্যাপারে আমি জানি না। বিষয়টি আমি আগে জানি, পরে আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কথা বলবো।
বিষয়টি নিয়ে খলিলের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মো. খলিলুর রহমান খলিলের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা দায়ের হয়নি। তবে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারাও।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
এমএমআই/এমজে