ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আমেরিকা বাংলাদেশকে খেলার মাঠে নামাতে চায়: ইনু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
আমেরিকা বাংলাদেশকে খেলার মাঠে নামাতে চায়: ইনু ফাইল ফটো

ঢাকা: আমেরিকা ভারতকে ডমিনেট করতে বাংলাদেশকে খেলার মাঠে নামাতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। পাশপাশি রাশিয়া-ইউক্রেনের মতো বিশ্ব মোড়ল বাংলাদেশের কাঁধে বার্মা যুদ্ধ চাপানোর চেষ্টা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

সোমবার (১৯ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে হাসানুল হক ইনু এসব অভিযোগ করেন।  

এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।  

বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, জাতীয় নেতা আমির হোসেন আমু বলেছেন প্রয়োজনে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হতে পারে। আর ওবায়দুল কাদের বলেছেন জাতিসংঘের মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই, এমন সংকট দেশে হয়নি। অথচ সেই দিনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বললেন গণতন্ত্রে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। এদিকে সরকার বলছেন কয়লার বিল বাকি, এলসি ওপেন করতে পারিনি এরই মধ্যে তাই কয়লার অভাবে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধে লোড শেডিং। কয়লার বিল বাকি ৪ হাজার কোটি টাকা, বিমান সংস্থার বাকি ২১ কোটি ডলার, সরকারি প্রতিষ্ঠানে বাকি ১৭ হাজার কোটি ডলার। আমার প্রশ্ন হলো এত বাকি কেন? কীভাবে? দেশটার মধ্যে কি একটা ভেরাছেরা লেগে গেছে। জনগণ এসব দেখে রাস্তা ঘাটে বকাঝকা করছে, বিভ্রান্ত জনগণের আর কিবা করার আছে। সরকারের মন্ত্রীরা বা এমপিরা কি বলবেন বা কি করছেন সরকারের দিক থেকে তদারকি থাকা জরুরি নয় কি।

হাসানুল হক ইনু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় বাংলাদেশ স্বাবলম্বিতা অর্জনে পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয় এ নীতিতে বাংলাদেশ স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে, দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থকে প্রধান্য দিয়ে ভারত, চীন, রাশিয়া, ইরান, সৌদী আরবের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক, কূটনৈতিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলে এগিয়ে চলেছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ এ সময়ে দেখছি হঠাৎ আমেরিকা বাংলাদেশ নিয়ে অতি উৎসাহী হয়ে উঠেছে, নানা বিবৃতি দিচ্ছে। হঠাৎ আমেরিকার এত উৎসাহ কেন ? তারা গণতন্ত্রের টার্ম ইউজ করছে অথচ পৃথিবীতে এমন একটি দেশের নাম কেউ বলতে পারবে না সেখানে আমেরিকা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বরং আমেরিকা যখন কোনো দেশের গণতন্ত্রের ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে উঠে সে দেশের সরকার বা বিরোধী দলের চেয়ে জনগণের বেশি দুর্ভোগ বয়ে আসে। আমেরিকার এ হঠাৎ উৎসাহের হেতু কি গণতন্ত্র না কি তেলবাজী। আসলে আমেরিকা দিল্লি মানে ভারতকে ডমিনেট করতে বাংলাদেশকে খেলার মাঠে নামাতে চায়। দিল্লিকে আমেরিকা ক্লোজ এলাই হিসেবে পাশে চায়। ক্লোজ এলাই হিসেবে পুরোপুরি পাশে না পেলে ভারতের পার্শ্ববর্তী বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশ মানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত করতে চেষ্টা করে আমেরিকা তাদের পছন্দের পুতুলকে ক্ষমতায় বসাতে চেষ্টা করছে। আমেরিকা সেই পুরোনো টেকনিক অ্যাপ্লাই করছে।  

ইনু বলেন, বিশ্বমোড়ল তাদের ভূ-রাজনৈতিক সামরিক স্বার্থ দেখার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ চাপিয়েছে চীনের কাঁধে তাইওয়ান যুদ্ধ চাপানোর চেষ্টা করছে আর বাংলাদেশের কাঁধে বার্মা যুদ্ধ চাপানোর চেষ্টা করছে। বঙ্গপোসাগরে সামরিক অবস্থান নেওয়ার পাঁয়তারা শুরু করেছে। বিএনপি-জামায়াত যারা নিজেরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে না পেরে বিদেশি বিভিন্ন মহলের কাছে গিয়ে ধরনা দিয়ে খাল কেটে কুমির আনছে। তারা দেশের শত্রু, রাষ্ট্রের, জনগণের নির্বাচনের শত্রু। বাংলাদেশ ঘিরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মধ্যেই এবারের বাজেট। তাই এবারের বাজেট বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব আত্মমর্যাদা রক্ষার বাজেট। বাংলাদেশ আমেরিকার পদানত হয়ে যুদ্ধের ক্ষেত্রে পরিণত হবে, না কি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে উন্নয়ন স্বাবলম্বিতার পথে এগিয়ে যাবে সেই রাজনৈতিক ফয়সালা এ বাজেটের মধ্য দিয়েই করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এসকে/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।