ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভোটবিহীন সরকারের পতনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। দেশের মুক্তিকামী জনতা মাফিয়াদের পতনের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন।
শনিবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও নেতারা উদ্ভ্রান্ত হয়ে গেছেন। অসংলগ্ন কথাবার্তা, আর ক্রমাগত হুমকি যেন আর্তচিৎকার। অতিরিক্ত উৎকণ্ঠা, মানসিক চাপ ও উদ্বেগে অবৈধ সরকার তালগোল পাকিয়ে ফেলছে। ফলে বিগত ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনপূর্ব সময়ের মতো একই কায়দায় বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা, নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও গায়েবি মামলা বিস্ময়করভাবে বেড়েছে। পাইকারি হারে সারাদেশে গণগ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা, বাড়ি বাড়ি অভিযান চালানো হচ্ছে। রাত নামলেই আওয়ামী যুবলীগ-ছাত্রলীগের তাণ্ডব চলছে প্রতিটি জনপদে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘুম কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তারা কেউ বাড়িতে অবস্থান করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে যারা সমালোচনা করছেন তাদের কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য বহুমাত্রিক নীলনকশা করছে। রাজারবাগ-বেইলিরোড-গণভবনকে কাশিমবাজার কুঠিতে পরিণত করা হয়েছে। আমরা খবর পাচ্ছি প্রতিদিন সেখানে বিরোধী দল মত নিশ্চিহ্ন করে ভোট ডাকাতি সফল করার কলাকৌশল নিয়ে বৈঠক চলছে। পুলিশ এবং প্রশাসনে রাজনৈতিক রদবদল চলছে। ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, ‘সামনে অনেক বড় সংকট আসছে। সেই সংকট মোকাবিলা করতে ইউনিফর্মধারী পুলিশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, অবৈধ আওয়ামী নাৎসী সরকার গায়ের জোরে সবকিছু করতে গিয়ে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। এখন কিছুই সামাল দিতে পারছে না। ডলার সংকটে যখন দেশের জনগণ উদ্বিগ্ন, এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ রেমিটেন্সের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য মন্তব্য গণতন্ত্রকামী মানুষের মনে চিন্তার উদ্রেক করেছে। আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা উদ্বিগ্ন। শেখ হাসিনা কী কারণে আমেরিকা সম্পর্কে ঘৃণা ছড়াচ্ছেন এটি কারো কাছে বোধগম্য নয়। তাঁর প্রতিহিংসামুলক কথাবার্তায় বাংলাদশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে এটি অস্বীকার করার উপায় নেই।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ক্ষমতাসীনরা সার্বভৌমত্ব দুর্বল করেছে, স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে, গণতন্ত্রকে নিরুদ্দেশ করেছে। এরা তাদের নিজেদের প্রহসনের নির্বাচনেও স্বস্তি পায় না। উচ্চ আদালত হিরো আলমের প্রার্থিতা বৈধতার রায় দিলেও নির্বাচন কমিশন জনবিচ্ছিন্ন সরকারের ইশারায় আলমের প্রার্থিতা বাতিল করেছে। এই তামাশার নির্বাচনের মধ্যেও অবৈধ সরকারের অনৈতিক চাপ দৃশ্যমান। এরা গণতন্ত্রের সকল স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ সময় এই বিএনপি নেতা সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হামলার ফিরিস্তি বর্ণনা করেন।
এসময় বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৩
টিএ/এমএমজেড