ঢাকা: বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নাকচ করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যাদের হাতে রক্তের দাগ তাদের সঙ্গে আপস নয়, কোনো সংলাপ নয় বলে জানান তিনি।
বুধবার (১২ জুলাই) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে তিনি এ কথা জানান। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এ শান্তি সমাবেশ ডাকে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে নির্বাচন পর্যন্ত। খেলা চলবে, মাঠ ছাড়বেন না। যখনই ডাক দেবো, শেখ হাসিনার নির্দেশে, তখনই আপনারা মাঠে চলে আসবেন। বাংলাদেশ কোনো অপশক্তির সঙ্গে আপস করবে না। বাংলাদেশে যারা আমার মায়ের কোল খালি করেছে, যারা আমার দেশের অগণিত মানুষের রক্ত ঝরিয়েছে, যাদের হাতে রক্তের দাগ, তাদের সঙ্গে আপস নয়।
তিনি বলেন, যাদের হাতে রক্তের দাগ, তাদের সঙ্গে ডায়ালগ নয়, কোনো সংলাপ নয়। যারা আমাদের চার নেতা, তার আগে ১৫ আগস্ট সব খুনের রক্ত যাদের রঞ্জিত, তাদের সঙ্গে আমরা আপস করতে পারি না। আমরা ৭১ এর চেতনার সঙ্গে আপস করতে পারি না, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের সঙ্গে, জয় বাংলা স্লোগানের সঙ্গে, ৭ মার্চের চেতনার সঙ্গে আপস করতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারি না। আমাদের নেত্রী অনেক দয়া দেখিয়েছেন, অনেক মহানুভবতা দেখিয়েছেন। ২১ আগস্ট তাকে হত্যা করার জন্য গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। এর পরও কোকোর মৃত্যুর পর তার বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরের গেট বন্ধ, শেখ হাসিনাকে যারা ঢুকতে দেয়নি এই অপশক্তি, গণতন্ত্রের শত্রুদের সঙ্গে আপস আওয়ামী লীগের হতে পারে না। আমরা আপস করতে পারি না। সবাই ঐক্যবব্ধ থাকবেন।
আওয়ামী লীগে শৃঙ্খলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এ রকম মঞ্চ দেখতে চাই না, শৃঙ্খলা থাকতে হবে। এত নেতা আমার দরকার নেই। একটা মিটিংয়ে এত বক্তাও আমার দরকার নেই। নিয়ম করে নেবেন এই মিটিংয়ে এরা বলবে, ওই মিটিংয়ে ওরা বলবে। সব নেতাকে বক্তৃতা দিতে হবে, আর সামনের লোক ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে চলে যাবে এটা হয় না।
তিনি বলেন, আপনারা অনেক কষ্ট করে এসেছেন। দূর থেকে আমরা আনতে পারিনি, আমাদের হাতে সময় ছিল না। আমাদের নেতাকর্মীরা মূলত ২৪ ঘণ্টার নোটিশে এখানে এসেছেন। আর উপস্থিতি দেখেন, এরই নাম আওয়ামী লীগ। খেলা হবে, আওয়ামী লীগ যখন খেলতে নামবে তখন কোনো অপশক্তি সামনে দাঁড়াতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, তৈরি হয়ে যান, প্রস্তুত হয়ে যান। টানা প্রোগ্রাম, এখন জুলাই মাস, নভেম্বর পর্যন্ত এর মধ্যে ফাঁক নেই, কর্মসূচি চলবে। একেক সময় একেক রকমের কর্মসূচি থাকতে পারে। সামনে আগস্ট মাস, শোকের মাসের গাম্ভীর্য কেউ নষ্ট করবেন না। শোকের মাসে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু পরিবার শেখ রেহানা ছাড়া অন্য কারো ছবি দিয়ে নিজের ছবি প্রচার করবেন না। অনেকে দেখা যায় ১০-১২টা ছবি দিয়ে এর মধ্যে ছোট ছোট করে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, জয়, শেখ রেহানার ছবি দেন, এমন করবেন না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, সাগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিজা আজম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২৩
এসকে/এমইউএম/আরএইচ