ঢাকা: বিরোধীদলের কোনো নেতা হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রশাসন এবং গোয়েন্দা বাহিনীর চাপে বিরোধী দলের কাউকে ভর্তি নিতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন গণধিকার পরিষদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
বৃহস্পতিবার ( ৩ আগস্ট) বিকেলে পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ে সামনে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ নেতাদের ওপর হামলা এবং ছাত্রনেতা বিন ইয়ামিন মোল্লার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে গণ অধিকার পরিষদ।
রাশেদ খান বলেন, আজকে আমাদের গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সেখানে যখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে দেখতে গেছে এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার রিলিজ অর্থাৎ ছুটি লিখে দিয়েছে। আজকে হাসপাতালগুলোতেও আমাদের জায়গা দিতে চায় না ভর্তি নিতে চায় না। এ সরকার আজকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন নির্মমভাবে তৈরি করেছে এবং নিষ্ঠুর বানিয়ে ফেলেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আজকে প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থা নানাভাবে ভয় দেখায় যে, ভিপি নুরকে এবং গণধিকার পরিষদের কাউকে হাসপাতালে রাখা যাবে না। আমরা বলতে চাই আমরা যতবার আহত হবো আইসিইউতে ভর্তি হবো পরে সুস্থ হয়ে রাজপথে আবার ফিরে আসবো। হত্যা করে গুম খুম করে আমাদের রাস্তা থেকে সরানো যাবে না।
রাশেদ খান বলেন, আমাদের ২৫ জন সহযোদ্ধাদের যেভাবে ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করেছে। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো কিছু বলেনি। এমনকি ভিসির পক্ষথেকেও কোনো বক্তব্য আসেনি। আমাদের ভিসি স্যার ব্যস্ত থাকে চা সিঙ্গারা ব্যবসা নিয়ে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি কোনো কাজ করেন না। ভিসি স্যার সরকারের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায় কানাডার ভিসা পায়নি। তাই যারা এ সরকারের পক্ষে কথা বলবেন তারা কানাডা আমেরিকার ভিসা পাবে না।
রাশেদ খান বলেন, ছাত্রলীগের ভাইদের বলতে চাই, ছাত্রলীগের যারা ভিন্ন মত দমনের জন্য হামলা চালায় তারা কিন্তু দলের ভালো পদে থাকতে পারে না। প্রয়োজন হলে আপনারা ইতিহাস ঘেটে দেখতে পারেন যে ছাত্রলীগের যেসব নেতা অতীতে এমন হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে এক সময় দলই ব্যবস্থা নিয়েছে। তারা পরবর্তীতে বড় কোনো পদে যেতে পারেনি। তার মানে এ অরাজকতা সৃষ্টি করা ছাত্রলীগকেও টিস্যুর মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। আর যারা ক্লিন ইমেজে রাজনীতি করে তাদেরই কেবল বড় পদে দেওয়া হয়। অর্থাৎ এ মাফিয়াগিরি বন্ধ করে সুষ্ঠ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসুন।
তিনি বলেন, জনগণ যদি আপনাকে ভোট দেওয়া তাহলে আপনি এমপি হবে নেতা হবেন। কিন্তু হামলা করে মামলা করে আপনি যদি নেতা হতে চান, সেটি আপনি হতে পারবেন না।
ওবায়দুল কাদের এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, আমেরিকার ভিসা নীতিকে ভয় পান না বিবেকের তাড়নাকে ভয় পান এমন মন্তব্য করে রাশেদ খান বলেন, তার মানে কি ওবায়দুল কাদের সাহেবের বিবেক কি এখন নাড়া দিতে শুরু করেছে। সে কি মনে করছে শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে তার বিবেককে আর বিক্রি করবে না। তিনি হয়তো এটি মনে করছেন যে কারণে তিনি বলছেন বিবেকের চাপে তিনি আছেন। তিনি বুঝে গেছেন যে ক্ষমতা হারানোর সময় এসে গেছে। যে কারণে তিনি মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছেন। কিন্তু আমি বলতে চাই কারণে এই মিষ্টি কথা বলছেন না শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে নতুন পন্থা অবলম্বন করে এ কথা বলছেন। আমেরিকার ভিসা নীতি যখন আপনার ওপর প্রয়োগ করা হবে তখন আপনি বলবেন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচ। সুতরাং সময় থাকতে ভালো হয়ে যান জনগণের কাতারে দাঁড়ান।
আজকে সব জায়গায় স্লোগান উঠছে শেখ হাসিনার ক্ষমতা কেড়ে নিবে জনতা এমন মন্তব্য করে রাশেদ খান বলেন, জনতা শেখ হাসিনার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার আগে তাকে ভালোভাবে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণধিকার পরিষদের একাংশের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে একটি সংক্ষিপ্ত মিছিল বের করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২৩
ইএসএস/জেএইচ