ঢাকা: পৌনে ২ লাখ মামলায় বিএনপির ৪০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আমরা যদি কোর্টে হাজিরা না দেই, আমরা যদি জেলখানায় যাই, তাহলে ৪০ লাখ লোককে কোথায় রাখবেন? সময় থাকতে সুন্দরভাবে প্রস্থানের করুন। আর না করলে অমর্যাদাকর পরিস্থিতি আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের কোনো অস্তিত্ব নেই। এ সরকারকে কেউ মানে না।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং কেন্দ্রীয় বিভিন্ন নেতার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল।
সভায় শামসুজ্জামান দুদু বলেন, কোনো সরকার থাকলে কি লাখ-লাখ, হাজার-হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হতো? সব থেকে খারাপ সরকার থাকলেও তো এত টাকা পাচার হওয়ার কথা না। তার মানে এ সরকারের কোনো অস্তিত্ব নেই। নামে মাত্র এ সরকার। এ সরকারকে কেউ মানে না।
বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, তারেক রহমানকে কথা নেই, বার্তা নেই, দিন রাতে কোর্ট বসিয়ে আপনারা সাজা দিয়ে দিলেন। তাকে এত ভয় কেন? আমরা তো আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সম্মানজনক একটি বিদায়ের ব্যবস্থা করছিলাম। এ কারণে আমরা আপনার পদত্যাগের দাবি করেছি। পদত্যাগ করলে আপনি সহিসালামতে একটি ভালো জায়গায় যেতে পারতেন। গণঅভ্যুত্থান যদি পতন হয় তাহলে আপনার অবস্থা কোনো জায়গায় কিভাবে দাঁড়াবে চিন্তা করেছেন? '৬৯' এর গণঅভ্যুত্থান দেখেননি আইয়ুব খানের কিভাবে পতন হয়েছে, '৯০' এর গণঅভ্যুত্থান দেখেননি এরশাদের কিভাবে পতন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মতো একজন নেতাকে কিভাবে মাটিতে ফেলে পেটানো হয়েছে পত্র-পত্রিকায় এসেছে। হঠাৎ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের উত্থান হয়নি, তিনি সাবেক ছাত্র নেতা, যুব নেতা ও সাবেক মন্ত্রী। আমান উল্লাহ আমান গণঅভ্যুত্থানের নেতা, হঠাৎ করে উনার উত্থান হয়নি। তাকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে গিয়ে ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রতিনিধি দল এলো ফুল দিতে। আপনার কি ইয়ার্কি করেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সামনে খাবারের টেবিলে খাবার রেখে সারা দেশে প্রচার করলেন। আমরা তো গ্রেপ্তার হয়ে অনেকবার গিয়েছি ডিবি অফিসে। কই তখন তো ছবি তুলেননি, খাবার খাওয়াননি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের একটিই দাবি বেগম জিয়াকে ভালোই ভালোই ছেড়ে দিন। আর যদি না ছাড়েন তাহলে জনতা তাকে জেল ভেঙে মুক্ত করে নিয়ে আসবে। এখন পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী আপনি একটু বোঝার চেষ্টা করেন। আপনি সরকারি কর্মচারীদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছেন যাতে তারা ভয় না পায়। ভয় তো ছায়ার মতো আপনার চারদিকে ঘোরাঘুরি করছে। এটি দেশবাসী ও সরকারি কর্মকর্তারাও জানেন। এজন্য সরকারি কর্মকর্তারা আপনার কথায় আশ্বস্ত হচ্ছেন না।
দুদু আরও বলেন, পুলিশের শতকরা ৫ জন বাদে বাকি ৯৫ জনই ভালো ছিল। এ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ করেছে। এ পুলিশ সুনামের অধিকারী ছিল। কিন্তু পুলিশকে সরকার অপরাধী হিসেবে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। সরকার অপরাধীদের প্রোমোশন দেয়। লজ্জা লাগে আমাদের।
তারেক রহমানকে মামলা থেকে রেহাই দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই দিন। তার বিরুদ্ধে থাকা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। আর জুবাইদা রহমানের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চান। যাকে খুশি আপনি (প্রধানমন্ত্রী) মামলা দিচ্ছেন। একটু ভাবেন তো এক কিংবা দুই মাস পরে তো ক্ষমতায় থাকবেন না। তখন কি হবে?
জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মো. ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া ও জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাবেদ ইকবাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
এসসি/জেএইচ