ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপি বুঝতে পেরেছে কেউ তাদের মুখে ফিডার দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে না: তথ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২৩
বিএনপি বুঝতে পেরেছে কেউ তাদের মুখে ফিডার দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে না: তথ্যমন্ত্রী তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

ঢাকা: বিএনপি এতদিনে বুঝতে পেরেছে কেউ তাদের মুখে ফিডার দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে না বলে মন্তব্য করছেনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার (৮ অক্টোবর) তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ ১৯৭১ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত 'পূর্বপাকিস্তান সংকট শ্বেতপত্র' পুনঃমুদ্রণের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আমেরিকা যখন ভিসানীতি ঘোষণা করল তখন বিএনপি খুব উৎফুল্ল ছিল,তকরা এটিকে বলছে বাংলাদেশ সরকারের জন্য লজ্জা কর। কিন্তু গতকাল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন আর ভিসানীতি নিয়ে আমকদের ভাববার কিছু নেই আমরা আন্দোলন করে এসরকারের পতন ঘটাবো এক দফা দাবি আদায় করবো এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পাশাপাশি আরও একটি কথা বলেছেন, আমাদের কোলে করে কেউ ক্ষমতায় বসাবে না। এতদিন পর তার সেই উপলব্ধি হয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে কেউ তাদের মুখে ফিডার দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে না। যারা নির্বাচনে বাধা দেবে, তাদের সবার ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে। সেটিও অনুধাবন করতে পেরেছে বিএনপি। এ জন্য কর্মীদের আন্দোলন করেছে বলেছে তারা। তাদের অনুরোধ করবো, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার পথ পরিহার করে নির্বাচনে আসার জন্য।

তিনি বলেন, বিএনপি ভেবেছিল, তাদের কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। ফখরুলের সেই উপলব্ধি ছিল হয়তো। এ জন্য তার খুব উৎফুল্ল ভাব ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে তার চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে। তারা বুঝতে পেরেছে, যথাসময়ে নির্বাচন হবে এবং অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপিরও অনেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এরই মধ্যে তৃণমূল বিএনপির কয়েকজন বিএনপি নেতা জয়েন করেছে। তাদের অনুরোধ জানাবো বাস্তবতা বিবর্জিত না হওয়ার জন্য। বাস্তবতা মেনে নিয়ে নির্বাচনের পথে আপনার জন্য তাদের প্রতি অনুরোধ জানাবো।

নির্বাচনকালীন মন্ত্রীসভা ছোট হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি  প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। সংবিধান অনুযায়ী এটি করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। নির্বাচনকালীন সরকার ছোট করার কোনো বাধ্যবাধকতা সংবিধান অনুযায়ী নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেকোনো সিদ্ধান্তই গ্রহণ করতে পারেন। এবং গত ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে কোনো নির্বাচনকালীন সরকার ছোট করা হয়নি। যে সরকার ছিল সেই সরকারই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিল।

নির্বাচনের পরিবেশ মূল্যায়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছে, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ড. হাসান বলেন, এটি তো ভালো, কারণ বিদেশিদের আগ্রহ আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে বহুমাত্রিকতা আছে। সম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে। নানা ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ক আছে। জঙ্গি দমনে, সন্ত্রাসবাদ দমনে এবং আমাদের উন্নয়নে সব জায়গায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার সম্পর্ক আছে। তাদের যে প্রতিনিধি দল এসেছে আমি মনে করি সেটি ভালো দিক।

বিএনপি ছাড়া নির্বাচন করলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে কিনা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কাউকে ছাড়া তো নির্বাচন করতে চাই না। আমরা সবাইকে নিয়েই নির্বাচন করতে চাই। আমরা চাই বিএনপি ও নির্বাচনে আসুক এবং অংশগ্রহণ করুক, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। তারা যে বলছে তাদের প্রচণ্ড জনপ্রিয়তা, সেটি একটু যাচাই-বাছাই করে দেখুক। বাংলাদেশের অর্থনীতি যথেষ্ট দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। সমস্ত পৃথিবীতে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সেটির ঢেউ কিছুটা যে বাংলাদেশের উপর লাগেনি তা নয়, বাংলাদেশেও লেগেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এবং অন্যান্য দেশ এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সব জায়গায় অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজ করছে। সেটির ছোঁয়া বাংলাদেশেও লেগেছে, এটি খুব স্বাভাবিক। বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে। নির্বাচনে কোন দল অংশগ্রহণ করলও সেটির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনগণ অংশগ্রহণ করলো কিনা। সর্বশেষ যে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলো হয়েছে সেখানে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি, কিন্তু ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ সেখানে ভোট দিয়েছে এবং নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও বিএনপি আসলেও আমরা স্বাগত জানাই, আমরা চাই তারা অংশগ্রহণ করুক কিন্তু না আসলেও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে। নির্বাচন অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হবে।

বাইডেনের নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক মাঝপথেই থেমে গেছে, এটি নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো কতগুলো গুজব। তিনি'(নিরাপত্তা উপদেষ্টা) বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এক ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠক হয়েছে। এটি নিয়ে যারা লিখেছে তারা কি সেখানে ছিল? বিদেশি একজন শীর্ষ কূটনীতিক বা শীর্ষ কর্মকর্তার সম্পর্ক কোনো পর্যায়ে হলে আমাদের দূতাবাসে গিয়ে বৈঠক করে সেটি যারা বুঝতে ব্যর্থ হয় তারা কিছুই বোঝে না।


বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮,২০২৩
জিসিজি/জেএইচ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।