ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

একতরফা তফসিল ঘোষণা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল: গণতন্ত্র মঞ্চ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট    | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
একতরফা তফসিল ঘোষণা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল: গণতন্ত্র মঞ্চ 

ঢাকা: একতরফা তফসিল ঘোষণা দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন  গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সরকারের পতনের দাবিতে পঞ্চম দফা অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ-মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাইফুল হক বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। আপনাদের দায়বদ্ধতা দেশের জনগণের কাছে, দেশের ভোটারদের কাছে, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। আপনারা আওয়ামী লীগের বা সরকারের কোন অঙ্গ সংগঠন বা গণ সংগঠন নন।  

তিনি বলেন, ভোটারেরা যে দাবি করছেন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন, তার জন্য দরকার একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশব্যাপী যখন হরতাল-অবরোধ চলছে, দেশে যখন এত সংঘাত-সংঘর্ষের পরিস্থিতি সরকার ডেকে আনছে, তখন যদি আপনারা (নির্বাচন কমিশন) একতরফা তফসিল ঘোষণা করেন, তবে এটা বাস্তবে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে। তাই নির্বাচন কমিশনকে বলব এ খেলা বন্ধ করুন।  

তিনি আরও বলেন, গত দুটি নির্বাচনের পর দেশের মানুষ আরেকটি একতরফা, পাতানো, সাজানো, তামাশার নির্বাচন দেখতে চায় না। সুতরাং সেই জায়গা থেকে আজ থেকে যদি কোনো তফসিল ঘোষণা করেন, তাহলে মানুষ ধরে নেবে আপনারা (নির্বাচন কমিশন) এ পাতানো নির্বাচনের সহযোগী, আপনারা নীলনকশার নির্বাচনের সহযোগী। দেশকে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাত-সংঘর্ষের দিকে নিয়া যাওয়ার জন্য আপনারাও একটা ভূমিকা পালন করছেন। দেশের মানুষ সরকারকে যেমন ক্ষমা করবে না, তেমনিভাবে নির্বাচন কমিশনকেও কোনোভাবে ক্ষমা করতে পারবে না।  

সাইফুল হক বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলব আপনারা আজ তফসিল ঘোষণা বন্ধ করুন। বিবেকের দায়-নৈতিক দায়ের দিকে অবস্থান নিন। ভোটারদের প্রতি, জনগণের প্রতি, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আপনাদের যে দায়িত্ব, সে দায়িত্ব থেকে আপনারা তফসিল ঘোষণা বন্ধ রাখুন।

তিনি বলেন, সরকার যদি জবরদস্তি করে চাপাচাপি করে, তাহলে হাবিবুল আউয়ালকে (সিইসি) এবং তার সহকর্মীদের বলতে চাই, আপনারা নির্বাচন কমিশন থেকে মান-সম্মান রেখে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করুন। আর যদি তা না করেন, তাহলে ভোট ডাকাত সরকারের সহযোগী হিসেবে মানুষ আপনাদের গণদুশমনের তালিকায় চিহ্নিত করবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, আমরা এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে আগেই সংশয় প্রকাশ করেছিলাম। কমিশনের প্রধান এবং তার সহকর্মীরা চৌকস ভাষায় কথা বলে জনগণকে প্রতারিত করার জন্য এক ধরনের একটি আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছেন।  

তিনি বলেন, তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার যে উদ্যোগ তারা নিয়েছেন, এর মধ্যদিয়ে তারা প্রমাণ করেছেন, তারা পার্লারে গিয়ে সেজেগুজে নিজের চেহারা লুকিয়ে রেখে আমাদের সামনে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। আসলে এ পার্লারের প্রলেপের নিচে তাদের যে কুৎসিত চেহারা, তারা যে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সংস্থা, সেটি আজকে প্রমাণ করতে যাচ্ছেন।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীসহ যে গার্মেন্টস শ্রমিক নিহত হয়েছেন তাদের জন্য আমরা শোকাহত। এ অবৈধ সরকার এবং পুলিশ বাহিনীকে অনুরোধ করব, যারা নিহত হয়েছেন, তাদের হত্যাকারী সেসব অপরাধীদের বিচার করতে হবে।  

নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমনসহ মঞ্চের অন্যান্য নেতারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
ইএসএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।