বরিশাল: বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া বর্তমান সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথের অনুসারীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি কোথাও কোথাও দোকানপাট তালাবদ্ধ করার খবরও মিলেছে।
গত রোববার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর এ আসনের হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও আওয়ামী লীগ নেতারাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
হিজলা উপজেলার হিজলা-গৌরব্দী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম বলেন, রোববার সন্ধ্যার পর মাহিম, সিরাজ ও নাদিমের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন লোক এসে আমার, আমার ভাই ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির বেপারী ও জসিম মোল্লার ইটের ভাটায় হামলা করেছে। সাবেক এমপি পংকজ নাথের অনুসারী হওয়ায় হামলাকারীরা ইটের ভাটায় ভাঙচুর করেছে। পরে তারা ইউনিয়নের বান্দ্রা বাজারে আমার ভ্যারাইটিজ স্টোর, ভাই মনিরের মুদী দোকান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সামসু খা’র ভ্যারাইটিজ স্টোর, কাসেম হাওলাদারের বেকারী, নাসির খা’র কাপড়ের দোকানেও হামলা-ভাঙচুর করেছে।
হামলার ভয়ে বর্তমানে তারা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলেও জানান ফখরুল ইসলাম।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বান্দেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী কাজী হানিফের দোকানেও তালা মেরে দেওয়া হয়।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে হিজলা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য অফেনুর বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। অফেনুরের দাবি, মহসিন কবির, জসিম ও আরিফসহ অন্যরা তার ছেলে অন্তুকে মারধর করেন। হামলাকারীরা হুমকি দিয়েছেন, নির্বাচন শেষ হলে হ্যামার দিয়ে হাত-পা গুঁড়িয়ে দেবেন।
অভিযোগ সম্পর্কে হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ টিপু সিকদার বলেন, দীর্ঘদিনের ক্ষোভের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিক সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এ ধরনের যেন কোনো ঘটনা না ঘটে। সবাই দলের লোক। তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে।
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবাইর আহমেদ বলেন, যেসব এলাকায় ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটি স্থানে পুলিশ পাঠানো হয়। সবাইকে অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাট বন্দরের উত্তর বাজার এলাকায় পংকজ দেবনাথের বাড়ির সামনেও পাঁচটি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দোকানী শ্যামল দেবনাথ জানান, রোববার সন্ধ্যার পর ১০-১৫ জনের একটি দল এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিয়ে দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। হুমকির পর রিপন ও অসীম দেবনাথের চা-বিস্কুটের, সঞ্জয় দেবনাথের পাখির খাবারের, শুভ ও তার (শ্যামল) স্টেশনারি দোকান বন্ধ করা হয়।
সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান খোলা হয়নি জানিয়ে শ্যামল বলেন, পুলিশ এসেছিল। তারা তথ্য জেনে চলে গেছে।
এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাবউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সেটা সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসিনুল হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কী ঘটেছে জানতে পাঠিয়েছি। তারা এলে তথ্য পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২৩
এমএস/এইচএ/