ঢাকা: বিএনপি-জামায়াত এখন দুষ্কৃতকারী। আমরা দুষ্কৃতকারীদের দমন করার লক্ষ্যে কাজ করছি।
এ সময় তাকে নানা প্রশ্ন করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। বিএনপি এখন পর্যন্ত জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্য দিয়ে আসছে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন, জানতে চান গণমাধ্যমকর্মীরা। উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের কর্মসূচি বলতে চোরাগোপ্তা হামলা; গাড়িঘোড়া পোড়ানো, মানুষের ওপর হামলা। তারা তাদের সন্ত্রাসীদের নামিয়েছে, যারা নেশাখোর তাদের দিয়েও হামলা পরিচালনা করছে। অনেক ক্ষেত্রে দিনমজুরকে বলছে; তাদের দুই হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে হামলা করছে। এগুলো দুষ্কৃতকারীদের কাজ। বিএনপি-জামায়াত এখন দুষ্কৃতকারী। আমরা দুষ্কৃতকারীদের দমন করার লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা দুষ্কৃতকারীদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
আগামী ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবসে বিএনপি মানববন্ধন কর্মসূচি দিয়েছে। আবার আওয়ামী লীগও সমাবেশ করবে। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিচার বন্ধ করার মধ্য দিয়ে। দায়মুক্তি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করা হয়েছিল। সেটি জিয়াউর রহমানের হাত দিয়েই হয়েছিল। এরপর বাংলাদেশে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৭ সালে নির্বিচারে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের হত্যা করার মধ্য দিয়ে।
বিচার ছাড়া হত্যাকাণ্ড। এমনও ঘটনা ঘটেছে, যে ব্যক্তি অভিযুক্ত তিনি না, নামের মিল থাকায় আরেক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। সেই ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি চিৎকার করেছেন, আমি সেই ব্যক্তি না। কিন্তু কে শোনে কার কথা! এমন ঘটনাও ঘটেছে, ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। আর রায় হয়েছে পরে। দিজ আর ডকুমেন্টেড (এগুলো নথিভুক্ত)। জিয়াউর রহমানের এডিসি হিসেবে যিনি কাজ করতেন, তিনি নিজে বলেছেন, জিয়াউর রহমান যখন সকালের নাস্তা করতেন, তখন তিনি এই ফাইলগুলো নিয়ে যেতেন এবং জিয়াউর রহমান নাস্তা করতে করতে সেগুলোতে সই করতেন। এমন ঘটনাও আছে, জিয়াউর রহমান বিদেশ যাচ্ছেন, প্লেনে ওঠার সিঁড়িতে ওঠার আগে মৃত্যু পরোয়ানায় সই করতেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, এভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে; ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যেভাবে নির্বিচারে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা সমসাময়িক বিশ্বের কোথাও ঘটেনি রাজনীতির নামে। এগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন। ২০০৪ সালে একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের ২২ নেতাকর্মী ও দুজন অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫০০ জন। সেই হামলার পর বিচারবিভাগীয় তদন্ত করে গাঁজাখুরি রিপোর্ট, আর পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ তার সংসদ সদস্যদের হাস্যরস, এগুলো সব মানবাধিকার লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, আজ যে মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, ড্রাইভার পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে, চোরাগোপ্তা হামলা করা হচ্ছে, এগুলো কী মানুষের অধিকার লঙ্ঘন না? সুতরাং তাদেরকে নিয়ে আগামী ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে এবং যারা মানবাধিকারের ধোঁয়া তুলে বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালায়, আর ফিলিস্তিনে যখন নারী-শিশুদের পাখি শিকারের মতো হত্যা করা হয়, গাজায় হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিয়ে একসঙ্গে ৫০০ মানুষকে হত্যা করা হয় এবং সাধারণ মানুষের ওপর বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে, তাদের কর্ণকুহরে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশে যারা মানবাধিকার বঞ্চিত হয়েছে, তাদের নিয়ে সমাবেশ করবো।
আর বিএনপি কী করবে? যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে আগে মানুষ হত্যা করছে, যাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে দল প্রতিষ্ঠা করেছে, তারা নিজেরাই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী।
পিআইডি) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল বরেণ্য রাজনৈতিক হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬০তম প্রয়াণ বার্ষিকীতে আহমেদ ফিরোজ গ্রন্থিত ‘সোহরাওয়ার্দী’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে। এ সময় মতবিনিময় সভাও করেন আমন্ত্রিতরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩
জিসিজি/এমজে