ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

কোলাকুলিতেও কাজ হয়নি, আজও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে হামলা!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
কোলাকুলিতেও কাজ হয়নি, আজও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে হামলা!

রাজশাহী: নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই যেন অশান্ত হয়ে উঠেছে রক্তাক্ত জনপদ খ্যাত রাজশাহীর 'বাগমারা'। এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি সহিংস ঘটনা ঘটছে রাজশাহী-৪ আসনের এই বাগমারা অঞ্চলে।

প্রায় দিনই নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন, ভাঙচুর, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।  

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের সঙ্গে সমঝোতা করিয়ে দুজনের কোলাকুলি পর্যন্ত করানো হয়েছিল। কিন্তু লাভ হয়নি। কোলাকুলির পর ওই রাতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর তিনটি নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে। এরপর থেকে একটার পর একটা ঘটনা ঘটেই চলেছে।

সর্বশেষ রোববার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান এমপি এনামুল হকের প্রচার মিছিলে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা ফের হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার বিকেলে বাগমারা উপজেলার মাদারগঞ্জ বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এই প্রচার মিছিলে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক নিজেও ছিলেন। তার দাবি, নৌকার সমর্থকদের হামলায় তার অন্তত ১০ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  

এদিকে হামলার ঘটনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক তার সমর্থকদের নিয়ে প্রচার মিছিল বের করেন। এ সময় নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের কর্মী-সমর্থকরা সেখানে গিয়ে নৌকা নৌকা বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচার মিছিল লক্ষ্য করে তারা এলোপাতাড়িভাবে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন।

এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর (কাঁচি) কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই আহত হন। হামলা থেকে বাঁচতে অনেকে আবার জুতা-স্যান্ডেল ফেলেই দিগ্বিদিক পালাতে শুরু করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও টহলরত বিজিবি সদস্যরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এ ঘটনার পর ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক তার আহত কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। এভাবে নির্বাচনী প্রচার মিছিলে হামলা চালিয়ে কাঁচির প্রচার বন্ধ করা যাবে না। কারণ বাগমারা অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের হৃদয়েই কাঁচি মার্কা প্রতীক পৌঁছে গেছে। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে জনগণই এর জবাব দেবে। তখন এই সন্ত্রাসীদের বিদায়ের ব্যবস্থা করব। আঘাতের প্রতিঘাত আমরাও করব ইঞ্চি ইঞ্চি করে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলব- হামলকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করুন। লেভেল প্লেইং ফিল্ড করুন। জনগণ যাকে ভোট দেবে, সেই হবে আগামী দিনের সংসদ সদস্য। কাঁচি মার্কার প্রতীকের পক্ষে মানুষের ঢল নেমেছে। তা সহ্য হচ্ছে না বলেই তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছে। ’

এদিকে হামলার ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ সম্পর্কে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

তবে রাজশাহীর পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, বাগমারায় নৌকার কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুতই পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নৌকার দুই কর্মীকে আটকও করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তারা এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

** কোলাকুলি করে সহিংসতায় না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি নৌকার সাবেক-বর্তমান প্রার্থীর

বাংলাদেশ সময়: ২৩০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩
এসএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।